Dhaka সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নে বদলে গেছে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নে বদলে গেছে বাংলাদেশ।

রোববার (২৯ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আয়োজিত সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে দেয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১৫ বছর ধরে আমরা ক্ষমতায় আছি। ২০০৯ সাল থেকে আজকে ২০২৩, এটি এখন এক বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আজকের ছাত্রছাত্রীরা উপলব্ধি করতে পারবে না ২০ বছর আগে কেমন বাংলাদেশ ছিল। সেখানে ক্ষুধা-দারিদ্র্য ছিল, বৈজ্ঞানিক কোনো কিছু ছিল না। আমরা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে বিজ্ঞান ও কম্পিউটার শিক্ষা চালু করি।

সরকারপ্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে সোনা বাংলা গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর আওয়ামী লীগ। তাই গত ১৫ বছরে বদলে গেছে বাংলাদেশ। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে আর এ স্বাধীনতার সুফল প্রতিটি ঘরে ঘরে আমরা পৌঁছে দেব। ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলাম, সেটি বাস্তবায়ন করেছি। এখন আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব। দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে যা যা করার আমরা করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন চেয়েছিলেন তেমন বাংলাদেশ গড়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য। আমার কাছে প্রধানমন্ত্রীত্ব কিছু নয়। প্রধানমন্ত্রী বহু আগেই হতে পারতাম। কিন্তু আমি সেভাবে চাইনি।

তিনি বলেন, দীর্ঘ ২১ বছর আমাদের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল। অনেক ইতিহাস মুছে ফেলা হয়েছিল। আমরা ক্ষমতায় আসার পর প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরা শুরু করি। ১৫ আগস্টের পর থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু আমাদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেই ভাষণ বাজিয়েছিল এবং তা মানুষকে শুনিয়েছিল। আমি জানি না পৃথিবীর কোনো দেশে কোনো ভাষণ এতবার শোনা হয়েছে কি না। আজকে সেই ভাষণ ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃতি পেয়েছে। আন্তর্জাতিক বিশ্ব প্রামাণ্য দলিলে মানুষকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বাঙালি জাতির ভাবমূর্তি বিশ্বে উজ্জ্বল করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার একটাই লক্ষ্য ছিল, ক্ষমতা হবে জনগণের কল্যাণ সাধন করার। জাতির পিতা যেভাবে চেয়েছেন সেভাবেই দেশকে গড়ে তোলা। সেই প্রচেষ্টাই আমি চালিয়ে যাচ্ছি। জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে পথ চলায় আজকে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা আমরা পেয়েছি। যা বাস্তবায়ন হবে ২০২৬ সাল থেকে। জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে যদি রাষ্ট্র পরিচালনা হয়, তাহলে এই বাংলাদেশ আর পেছনে ফিরে তাকাবে না। অনেক দেশই আমাদের সঙ্গী হয়েছিল, অনেকেই পিছিয়ে গেছে। আমরা কিন্তু পিছিয়ে যাইনি।

জাতির পিতাকে স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, কন্যা হিসাবে বলতে পারি, তিনি বাংলাদেশের মানুষকে বেশি ভালোবেসেছেন। এই ভালোবাসা থেকে এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন। আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে দাঁড়িয়ে বলতে চাই, এমনভাবে দেশটি গড়ে তুলতে চাই, যে দেশ হবে জ্ঞান বিজ্ঞানে উন্নত। বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বে মাথা তুলে দাঁড়াবে এমনভাবে দেশকে গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, অর্জনগুলোকে ধরে রেখে সেই চেতনা নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। আজ আমাদের তৈরি হতে হবে আগামী দিনের জন্য। জাতির পিতা যে বাংলাদেশ চেয়েছিলো সেই দেশ গড়ে তোলাই আমার লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী হতে চাইলে আগেই হতে পারতাম। আমার লক্ষ্য একটাই, ক্ষমতা হবে জনগণের। জাতির পিতা যেভাবে বলেছিলেন সেভাবেই বিশ্ববাসীর সামনে মাথা উঁচু করে চলার চেষ্টা করছি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বলেন, ২০১০ সালের ১৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় জাতির পিতার প্রতি যে বহিষ্কারাদেশ ছিল, প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। আজকে জাতির পিতাকে ডক্টর অব ল’স ডিগ্রিতে ভূষিত করেছে, আমি জানি না, আপনাদেরকে কীভাবে ধন্যবাদ জানাবো। আমি তার মেয়ে হিসেবে কৃতজ্ঞতা জানাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আবার যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারতাম এবং মাস্টার্স ডিগ্রিটা শেষ করতে পারতাম তাহলে খুব খুশি হতাম। পৃথিবীর অনেক দেশের অনেক ডিগ্রি পেয়েছি তাতে মন ভরে না। নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে পেলাম না। অবশ্যই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক একটি ডিগ্রি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সেটা তো না। লেখাপড়া করে ডিগ্রি নিতে পারলে ভালো হতো।

শেখ হাসিনা বলেন, এ জাতিকে নিয়ে সবসময় একটা স্বপ্ন ছিল জাতির পিতার। তিনি নিজের জন্য কিছু চাননি, এই জাতির জন্য চেয়েছেন সবসময়। অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়লে তার সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যাবে। আমি চাই সকল শিক্ষার্থীরা যেন এই বইগুলো ভালোভাবে পড়েন। এই বইগুলো পড়লে একদিন আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং আমাদের দেশের অবস্থানও জানতে পারবেন।

১৯৫২ থেকে ৭১। বাঙালির জাতীয় জীবনের নানাবিধ অর্জনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। তাই আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অবদান রাখবেন এমন আশা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি চাই আমাদের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক সবাই আমাদের এই যে অর্জনগুলো ধরে রাখেন। এর মাধ্যমেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। জাতির পিতা এই বাংলাদেশের জন্য যে মহান আত্মত্যাগ করে গেছেন, সেটি আমাদের ভুললে চলবে না। কারণ তার ভাষা আন্দোলন, তার ইতিহাস আপনারা জানেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘ডক্টর অব ল’স’- মরণোত্তর ডিগ্রি প্রদান করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে এই সম্মাননা তুলে দেয়া হয়। বাবা ও মেয়ে ছিলেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বহু বছর পর বাবার সম্মানসূচক ডিগ্রির পদক তুলে দেয়া হলো কন্যার হাতে। সমাবর্তন প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অর্জনে আবেগাপ্লুত তিনি। এ সময় বাবার শিক্ষাজীবনের স্মৃতিচারণ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৩, বর্তমান বাংলাদেশ একটি বদলে যাওয়া বাংলাদেশ।

এ সময় সবার কাছে অনুরোধ করে তিনি বলেন, আমাদের ভাষা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ধরে রেখে আমরা সারা বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলতে চাই। আমাদের উন্নয়ন শুধু শহর কেন্দ্রিক না। আমরা জাতির পিতার নির্দেশনা অনুযায়ী গ্রামের মানুষদের কথা মাথায় রেখে পরিকল্পনা নিচ্ছি, বাস্তবায়ন করছি। আমি চাই, আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানের মধ্য দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। আমার পক্ষে যতটুকু করার করেছি। এই অগ্রযাত্রা যেন থেমে না যায় সেই আহ্বান সবার প্রতি। বাংলাদেশ অনেক ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছে মনে রাখতে হবে।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মরণোত্তর সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লজ’ ডিগ্রি প্রদান করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিশেষ সমাবর্তনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বঙ্গবন্ধুকন্যা ও সমাবর্তন বক্তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বঙ্গবন্ধুর এই ডিগ্রি হস্তান্তর করেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নে বদলে গেছে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৪:০৫:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নে বদলে গেছে বাংলাদেশ।

রোববার (২৯ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আয়োজিত সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে দেয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১৫ বছর ধরে আমরা ক্ষমতায় আছি। ২০০৯ সাল থেকে আজকে ২০২৩, এটি এখন এক বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আজকের ছাত্রছাত্রীরা উপলব্ধি করতে পারবে না ২০ বছর আগে কেমন বাংলাদেশ ছিল। সেখানে ক্ষুধা-দারিদ্র্য ছিল, বৈজ্ঞানিক কোনো কিছু ছিল না। আমরা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে বিজ্ঞান ও কম্পিউটার শিক্ষা চালু করি।

সরকারপ্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে সোনা বাংলা গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর আওয়ামী লীগ। তাই গত ১৫ বছরে বদলে গেছে বাংলাদেশ। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে আর এ স্বাধীনতার সুফল প্রতিটি ঘরে ঘরে আমরা পৌঁছে দেব। ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলাম, সেটি বাস্তবায়ন করেছি। এখন আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব। দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে যা যা করার আমরা করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন চেয়েছিলেন তেমন বাংলাদেশ গড়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য। আমার কাছে প্রধানমন্ত্রীত্ব কিছু নয়। প্রধানমন্ত্রী বহু আগেই হতে পারতাম। কিন্তু আমি সেভাবে চাইনি।

তিনি বলেন, দীর্ঘ ২১ বছর আমাদের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল। অনেক ইতিহাস মুছে ফেলা হয়েছিল। আমরা ক্ষমতায় আসার পর প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরা শুরু করি। ১৫ আগস্টের পর থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু আমাদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেই ভাষণ বাজিয়েছিল এবং তা মানুষকে শুনিয়েছিল। আমি জানি না পৃথিবীর কোনো দেশে কোনো ভাষণ এতবার শোনা হয়েছে কি না। আজকে সেই ভাষণ ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃতি পেয়েছে। আন্তর্জাতিক বিশ্ব প্রামাণ্য দলিলে মানুষকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বাঙালি জাতির ভাবমূর্তি বিশ্বে উজ্জ্বল করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার একটাই লক্ষ্য ছিল, ক্ষমতা হবে জনগণের কল্যাণ সাধন করার। জাতির পিতা যেভাবে চেয়েছেন সেভাবেই দেশকে গড়ে তোলা। সেই প্রচেষ্টাই আমি চালিয়ে যাচ্ছি। জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে পথ চলায় আজকে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা আমরা পেয়েছি। যা বাস্তবায়ন হবে ২০২৬ সাল থেকে। জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে যদি রাষ্ট্র পরিচালনা হয়, তাহলে এই বাংলাদেশ আর পেছনে ফিরে তাকাবে না। অনেক দেশই আমাদের সঙ্গী হয়েছিল, অনেকেই পিছিয়ে গেছে। আমরা কিন্তু পিছিয়ে যাইনি।

জাতির পিতাকে স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, কন্যা হিসাবে বলতে পারি, তিনি বাংলাদেশের মানুষকে বেশি ভালোবেসেছেন। এই ভালোবাসা থেকে এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন। আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে দাঁড়িয়ে বলতে চাই, এমনভাবে দেশটি গড়ে তুলতে চাই, যে দেশ হবে জ্ঞান বিজ্ঞানে উন্নত। বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বে মাথা তুলে দাঁড়াবে এমনভাবে দেশকে গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, অর্জনগুলোকে ধরে রেখে সেই চেতনা নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। আজ আমাদের তৈরি হতে হবে আগামী দিনের জন্য। জাতির পিতা যে বাংলাদেশ চেয়েছিলো সেই দেশ গড়ে তোলাই আমার লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী হতে চাইলে আগেই হতে পারতাম। আমার লক্ষ্য একটাই, ক্ষমতা হবে জনগণের। জাতির পিতা যেভাবে বলেছিলেন সেভাবেই বিশ্ববাসীর সামনে মাথা উঁচু করে চলার চেষ্টা করছি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বলেন, ২০১০ সালের ১৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় জাতির পিতার প্রতি যে বহিষ্কারাদেশ ছিল, প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। আজকে জাতির পিতাকে ডক্টর অব ল’স ডিগ্রিতে ভূষিত করেছে, আমি জানি না, আপনাদেরকে কীভাবে ধন্যবাদ জানাবো। আমি তার মেয়ে হিসেবে কৃতজ্ঞতা জানাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আবার যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারতাম এবং মাস্টার্স ডিগ্রিটা শেষ করতে পারতাম তাহলে খুব খুশি হতাম। পৃথিবীর অনেক দেশের অনেক ডিগ্রি পেয়েছি তাতে মন ভরে না। নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে পেলাম না। অবশ্যই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক একটি ডিগ্রি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সেটা তো না। লেখাপড়া করে ডিগ্রি নিতে পারলে ভালো হতো।

শেখ হাসিনা বলেন, এ জাতিকে নিয়ে সবসময় একটা স্বপ্ন ছিল জাতির পিতার। তিনি নিজের জন্য কিছু চাননি, এই জাতির জন্য চেয়েছেন সবসময়। অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়লে তার সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যাবে। আমি চাই সকল শিক্ষার্থীরা যেন এই বইগুলো ভালোভাবে পড়েন। এই বইগুলো পড়লে একদিন আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং আমাদের দেশের অবস্থানও জানতে পারবেন।

১৯৫২ থেকে ৭১। বাঙালির জাতীয় জীবনের নানাবিধ অর্জনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। তাই আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অবদান রাখবেন এমন আশা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি চাই আমাদের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক সবাই আমাদের এই যে অর্জনগুলো ধরে রাখেন। এর মাধ্যমেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। জাতির পিতা এই বাংলাদেশের জন্য যে মহান আত্মত্যাগ করে গেছেন, সেটি আমাদের ভুললে চলবে না। কারণ তার ভাষা আন্দোলন, তার ইতিহাস আপনারা জানেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘ডক্টর অব ল’স’- মরণোত্তর ডিগ্রি প্রদান করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে এই সম্মাননা তুলে দেয়া হয়। বাবা ও মেয়ে ছিলেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বহু বছর পর বাবার সম্মানসূচক ডিগ্রির পদক তুলে দেয়া হলো কন্যার হাতে। সমাবর্তন প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অর্জনে আবেগাপ্লুত তিনি। এ সময় বাবার শিক্ষাজীবনের স্মৃতিচারণ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৩, বর্তমান বাংলাদেশ একটি বদলে যাওয়া বাংলাদেশ।

এ সময় সবার কাছে অনুরোধ করে তিনি বলেন, আমাদের ভাষা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ধরে রেখে আমরা সারা বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলতে চাই। আমাদের উন্নয়ন শুধু শহর কেন্দ্রিক না। আমরা জাতির পিতার নির্দেশনা অনুযায়ী গ্রামের মানুষদের কথা মাথায় রেখে পরিকল্পনা নিচ্ছি, বাস্তবায়ন করছি। আমি চাই, আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানের মধ্য দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। আমার পক্ষে যতটুকু করার করেছি। এই অগ্রযাত্রা যেন থেমে না যায় সেই আহ্বান সবার প্রতি। বাংলাদেশ অনেক ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছে মনে রাখতে হবে।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মরণোত্তর সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লজ’ ডিগ্রি প্রদান করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিশেষ সমাবর্তনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বঙ্গবন্ধুকন্যা ও সমাবর্তন বক্তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বঙ্গবন্ধুর এই ডিগ্রি হস্তান্তর করেন।