Dhaka সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগ শুধু একজন মানুষকে মহিমান্বিত করার জন্য তাদের পুরো ক্ষমতার অপব্যবহার করে চলেছে : মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগ জিয়াউর রহমানকে মুছে ফেলতে চায় অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সৈনিক জিয়ার ডাকে স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু হয়েছে, এটাকে তারা মুছে ফেলতে চায়। আওয়ামী লীগ শুধু একজন মানুষকে মহিমান্বিত করার জন্য তাদের পুরো ক্ষমতার অপব্যবহার করে চলেছে। আমরা শেখ মুজিবের অবদানকে কখনো অস্বীকার করি না। কিন্তু কী করে অস্বীকার করা যাবে যার (জিয়া) ঘোষণায় আমরা স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু করেছিলাম। যারা এটা করতে চায়, এটা যে তাদের রাজনৈতিক সংকীর্ণতা সেটা প্রমাণ হয়।

সোমবার (৩ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ নজিরবিহীন দুর্নীতি করেছে। অপরদিকে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজকেও যুক্তরাষ্ট্র স্যাংশন দিয়েছে। সংসদ সদস্য আনারকে কলকাতায় নিয়ে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়েছে। একটা ইনস্টিটিউশন হিসেব এখন সেনাবাহিনীর অবস্থা কী? সেনাবাহিনীর সম্মান ইজ্জত কোথায় থাকে, যখন তার সাবেক সেনাপ্রধানকে স্যাংশন দেওয়া হয়। পুলিশবাহিনীর মর্যাদা কোথায় থাকে? যার সাবেক প্রধানকে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়। এরা (আওয়ামী লীগ) দেশটাকে একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছে।

নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই দলীয় সরকারের অধীনে তিনটা নির্বাচন হয়েছে। তিনটা নির্বাচনেই প্রহসন হয়েছে। কাল নির্বাচন কমিশন বলেছে এরকম বৈরি রাজনৈতিক পরিবেশে কখনও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ যে পরিস্থিতি তৈরি করেছে তাতে কোনও দলই তো নির্বাচনে আসে না। যে কারণে আজ নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। আজ এই সরকার শুধু রাজনীতিকেই ধ্বংস করেনি বরং পুরো দেশটাকেই ধ্বংস করে দিয়েছে।

আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে শোষণ করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আজ প্রাইমারি স্কুলের বইয়ের অবস্থা ভয়াবহ। কারণ এই বইয়ের মধ্যে মিথ্যা প্রচার চলেছ। ওখানে একজনের নাম ছাড়া আর কারো নাম নাই। এমনকি সেখানে তাদের যে নেতা তাজউদ্দীন আহমেদ, তারও নাম নাই। কর্নেল ওসমানীর নাম নাই। কারও নাম নাই। শুধু এক নেতা এক দেশ, ওই বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। এই করে করে তারা দীর্ঘকাল ধরে বাংলাদেশকে শোষণ করছে, লুট করছে। বাংলাদেশের সব লোকের অধিকার হরণ করে নিয়েছে।

সবাইকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আজ সবজির দাম, চালের দাম অবিশ্বাস্য। বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। কেন বেড়েছে? কারণ তারা চুরি করে করে এমন অবস্থা তৈরি করেছে যে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো ছাড়া উপায় নাই। আমাদের এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সমগ্র মানুষ যখন বেরিয়ে আসবে তখনই বিপ্লব হবে।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের স্মৃতিচারণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, মানুষ যে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে এটা একটা ঐতিহাসিক সত্য কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেটা মুছে ফেলতে চায়। জিয়া ক্ষণজন্মা পুরুষ ছিলেন। জিয়ার আহ্বানেই দ্বিধা বিভক্ত জাতি যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এটা সরকার মুছে ফেলতে চায়। আমরা শেখ মুজিবের অবদানকে কখনও অস্বীকার করি না। ৪৩ বছর পরেও জিয়াকে এদেশের মানুষ ভোলে নাই। যারা তার অবদানকে অস্বীকার করে তারা তো দেশের স্বাধীনতাকেই অস্বীকার করে, কারণ তিনি তো স্বাধীনতার ঘোষক।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমি যখন বলি খালেদা জিয়া দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা তখন আওয়ামী লীগের গা জ্বালা করে। কারণ তাদের নেত্রী তো আর মুক্তিযুদ্ধ করেনি। আমি এসব বলতে চাই না। আমি শুধু বলতে চাই, যার যা অবদান তা স্বীকার করতে হবে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের এখন সময় এসেছে নিজেদের সংগঠিত করার। আমরা চেষ্টা করছি, জেল খাটছি, বারবার জেলে যাচ্ছি কিন্তু এখনও চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে পারিনি। এই চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের জন্য আমাদের সংগঠনকে আরও দৃঢ় করতে হবে। নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝি থাকলে দূর করে ফেলতে হবে। সবাই মিলে একসঙ্গে এক জোটে নামতে হবে। কারণ এটা বিএনপির সমস্যা না, এটা বাংলাদেশের সমস্যা, এটা জাতির সমস্যা। এই জাতি ভবিষ্যতে টিকবে কী টিকবে না, আপনার ছেলেরা ভবিষ্যতে চাকরি পাবে কী পাবে না, তারা স্বাধীনভাবে চলতে পারবে কী পারবে না, তার পুরোটাই নির্ভর করছে এই সরকারকে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পরাজিত করতে না পারা পর্যন্ত।

জাতীয়তাবাদী মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, জাতীয়তাবাদী মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল ড. শাহিদা রফিক প্রমুখ।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আড়াই বছরেও শেষ হয়নি সেতু নির্মাণ কাজ, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

আওয়ামী লীগ শুধু একজন মানুষকে মহিমান্বিত করার জন্য তাদের পুরো ক্ষমতার অপব্যবহার করে চলেছে : মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৩:৩৫:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ জুন ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগ জিয়াউর রহমানকে মুছে ফেলতে চায় অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সৈনিক জিয়ার ডাকে স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু হয়েছে, এটাকে তারা মুছে ফেলতে চায়। আওয়ামী লীগ শুধু একজন মানুষকে মহিমান্বিত করার জন্য তাদের পুরো ক্ষমতার অপব্যবহার করে চলেছে। আমরা শেখ মুজিবের অবদানকে কখনো অস্বীকার করি না। কিন্তু কী করে অস্বীকার করা যাবে যার (জিয়া) ঘোষণায় আমরা স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু করেছিলাম। যারা এটা করতে চায়, এটা যে তাদের রাজনৈতিক সংকীর্ণতা সেটা প্রমাণ হয়।

সোমবার (৩ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ নজিরবিহীন দুর্নীতি করেছে। অপরদিকে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজকেও যুক্তরাষ্ট্র স্যাংশন দিয়েছে। সংসদ সদস্য আনারকে কলকাতায় নিয়ে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়েছে। একটা ইনস্টিটিউশন হিসেব এখন সেনাবাহিনীর অবস্থা কী? সেনাবাহিনীর সম্মান ইজ্জত কোথায় থাকে, যখন তার সাবেক সেনাপ্রধানকে স্যাংশন দেওয়া হয়। পুলিশবাহিনীর মর্যাদা কোথায় থাকে? যার সাবেক প্রধানকে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়। এরা (আওয়ামী লীগ) দেশটাকে একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছে।

নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই দলীয় সরকারের অধীনে তিনটা নির্বাচন হয়েছে। তিনটা নির্বাচনেই প্রহসন হয়েছে। কাল নির্বাচন কমিশন বলেছে এরকম বৈরি রাজনৈতিক পরিবেশে কখনও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ যে পরিস্থিতি তৈরি করেছে তাতে কোনও দলই তো নির্বাচনে আসে না। যে কারণে আজ নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। আজ এই সরকার শুধু রাজনীতিকেই ধ্বংস করেনি বরং পুরো দেশটাকেই ধ্বংস করে দিয়েছে।

আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে শোষণ করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আজ প্রাইমারি স্কুলের বইয়ের অবস্থা ভয়াবহ। কারণ এই বইয়ের মধ্যে মিথ্যা প্রচার চলেছ। ওখানে একজনের নাম ছাড়া আর কারো নাম নাই। এমনকি সেখানে তাদের যে নেতা তাজউদ্দীন আহমেদ, তারও নাম নাই। কর্নেল ওসমানীর নাম নাই। কারও নাম নাই। শুধু এক নেতা এক দেশ, ওই বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। এই করে করে তারা দীর্ঘকাল ধরে বাংলাদেশকে শোষণ করছে, লুট করছে। বাংলাদেশের সব লোকের অধিকার হরণ করে নিয়েছে।

সবাইকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আজ সবজির দাম, চালের দাম অবিশ্বাস্য। বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। কেন বেড়েছে? কারণ তারা চুরি করে করে এমন অবস্থা তৈরি করেছে যে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো ছাড়া উপায় নাই। আমাদের এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সমগ্র মানুষ যখন বেরিয়ে আসবে তখনই বিপ্লব হবে।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের স্মৃতিচারণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, মানুষ যে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে এটা একটা ঐতিহাসিক সত্য কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেটা মুছে ফেলতে চায়। জিয়া ক্ষণজন্মা পুরুষ ছিলেন। জিয়ার আহ্বানেই দ্বিধা বিভক্ত জাতি যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এটা সরকার মুছে ফেলতে চায়। আমরা শেখ মুজিবের অবদানকে কখনও অস্বীকার করি না। ৪৩ বছর পরেও জিয়াকে এদেশের মানুষ ভোলে নাই। যারা তার অবদানকে অস্বীকার করে তারা তো দেশের স্বাধীনতাকেই অস্বীকার করে, কারণ তিনি তো স্বাধীনতার ঘোষক।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমি যখন বলি খালেদা জিয়া দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা তখন আওয়ামী লীগের গা জ্বালা করে। কারণ তাদের নেত্রী তো আর মুক্তিযুদ্ধ করেনি। আমি এসব বলতে চাই না। আমি শুধু বলতে চাই, যার যা অবদান তা স্বীকার করতে হবে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের এখন সময় এসেছে নিজেদের সংগঠিত করার। আমরা চেষ্টা করছি, জেল খাটছি, বারবার জেলে যাচ্ছি কিন্তু এখনও চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে পারিনি। এই চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের জন্য আমাদের সংগঠনকে আরও দৃঢ় করতে হবে। নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝি থাকলে দূর করে ফেলতে হবে। সবাই মিলে একসঙ্গে এক জোটে নামতে হবে। কারণ এটা বিএনপির সমস্যা না, এটা বাংলাদেশের সমস্যা, এটা জাতির সমস্যা। এই জাতি ভবিষ্যতে টিকবে কী টিকবে না, আপনার ছেলেরা ভবিষ্যতে চাকরি পাবে কী পাবে না, তারা স্বাধীনভাবে চলতে পারবে কী পারবে না, তার পুরোটাই নির্ভর করছে এই সরকারকে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পরাজিত করতে না পারা পর্যন্ত।

জাতীয়তাবাদী মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, জাতীয়তাবাদী মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল ড. শাহিদা রফিক প্রমুখ।