Dhaka মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগ ছাড়া কেউ জনগণের কথা ভাবেনি : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো সরকার জনগণের কথা ভাবেনি বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতাকে হত্যা করে সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে সামরিক শাসন জারি করে যারা সরকারে এসেছিল, তারা কখনওই গণমানুষের কথা ভাবেনি। সেটা জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া যেই হোক। ক্ষমতাকে ভোগ করা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অত্যাচার করা-এটাই তারা জানত। বর্তমানে দুর্যোগ ও অগ্নিসন্ত্রাস মোকাবিলা করেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

রোববার (২০ আগস্ট) সকালে নবনির্মিত ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন ভবন’ ও ‘তথ্য কমিশন ভবন’ এবং ‘বিএফডিসি কমপ্লেক্স নির্মাণ’ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে সরকারপ্রধান এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মানবঢাল রচনা করেই আমাকে রক্ষা করেছিলেন। এটা বোধহয় আমাদের ভাগ্য যে, ওই ট্রাকে কোনো গ্রেনেড পড়েনি, ট্রাকের সঙ্গে লেগে সেটা মাটিতে পড়ে যায়। আমাকে যে মানবঢাল হয়ে রক্ষা করেছিলেন মোহাম্মদ হানিফ তার সমস্ত মাথায় স্প্লিন্টার পড়ে। ওইদিন আমাদের অনেকে আহত হয় এবং মারা যায়।

সিনেমা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, কলকাতা থেকে এই উপমহাদেশে সিনেমার যাত্রা শুরু। আমাদের সিনেমা শিল্পের যাত্রা জাতির পিতার হাত ধরে। তিনি শিল্পমন্ত্রী থাকা অবস্থায় এফডিসি নির্মাণ করেন।

দেশে এক সময় পরিবার নিয়ে সিনেমা দেখার অবস্থা না থাকলেও বর্তমানে ভালো মানের সিনেমা তৈরি হচ্ছে বলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, সিনেমায় জনসাধারণের জন্য বার্তা থাকতে হবে। মাঝে পরিবার নিয়ে সিনেমা দেখা যেত না। এখন তার পরিবর্তন হয়েছে। এখন আধুনিক প্রযুক্তিতে সিনেমা দেখানও হয়। হল মালিকদের সিনেপ্লেক্স তৈরির সুযোগ করে দিয়েছি। এখন ভালো সিনেমা নির্মাণ হচ্ছে, বিদেশে আমাদের সিনেমা প্রশংসা পাচ্ছে। চলচ্চিত্রকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা দিয়ে সুবিধার ব্যবস্থা আমরাই করেছি।

তিনি বলেন, আমার উদ্যোগে আমার পরামর্শেই হাতিরঝিলের পাশের রাস্তা হয়। এফডিসি গড়ে তোলার পেছনে আমার মায়ের অবদান আছে। পাকিস্তান আমলে সিনেমা দেখে রিকশায় করে বাবা-মা ফিরছিলেন। মা বলছিলেন, আমরা বাঙালিরা কি সিনেমা করতে পারি না? তখনই বঙ্গবন্ধু উদ্যোগ নেন এফডিসি করার। বিএনপির আমলে এমন সিনেমা হয়েছিল, যা পরিবার নিয়ে দেখা যেতো না। এখন মানুষ সিনেমা হলে ফিরছে।

শেখ হাসিনা বলেন, শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আমরা গঠন করেছি। যন্ত্রশিল্পী থেকে শুরু করে সব শিল্পীদের সহায়তা করেছি। মানসম্মত সিনেমা নির্মাণের সব ব্যবস্থা করেছি। এফডিসি কমপ্লেক্স করছি।

তথ্য চাওয়া ও পাওয়া মানুষের অধিকার জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো রাখঢাক নয়, জনগণের জন্য কাজ করে আওয়ামী লীগ। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে সার্বিক উন্নয়নে কাজ করছে সরকার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে টেলিডেনসিটি ১০৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা অভাবনীয়। দেশকে আধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।

২০০৪ সালের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার স্মৃতিচারণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, আগামীকাল ২১ আগস্ট। এই ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমরা একটি র‌্যালি করছিলাম। কারণ তার কিছুদিন আগে সিলেটে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর গ্রেনেড হামলাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বোমা হামলা-সন্ত্রাস চলছিল। কিন্তু সেই র‌্যালিতে প্রকাশ্য দিবালোকে গ্রেনেড হামলা করা হয়। সেই গ্রেনেডের আঘাতে আমাদের নারীনেত্রী আইভি রহমানসহ ২২ জন নেতাকর্মী এবং দুজন অজ্ঞাত নিহত হয়। লক্ষ্যটা ছিল আমি এবং আমরা যারা সেই ট্রাকের মঞ্চে ছিলাম তাদের হত্যা করা।

২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যের কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দেশের সার্বিক উন্নতির জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আজকে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। স্মার্ট বাংলাদেশে আমাদের স্মার্ট জনগোষ্ঠী হবে, স্মার্ট ইকোনোমি হবে, স্মার্ট সোসাইটি হবে, স্মার্ট সরকার হবে। সেটা সামনে নিয়েই আমরা সব ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন জনগোষ্ঠী এবং সমাজ এবং সরকার এবং দেশকে গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছি।

বিগত বছরগুলোতে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ ধারাবাহিক ভাবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতির সরকার চলছে। দেশে একটা স্থিতিশীলতা চলছে, যদিও এর মাঝে আমাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ, অগ্নিসন্ত্রাস অনেক কিছুই মোকাবিলা করতে হয়েছে। তারপরও কিন্তু বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা যেন অব্যহত থাকে, সেটাই আমরা চাই।

জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই তারা আমাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বার বার তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন বলেই এই কাজগুলো (দেশের উন্নয়নে) আমরা করতে পেরেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে কোন ক্ষুধা-দারিদ্র থাকবে না, ভূমিহীন মানুষ ঘর পাবে, প্রতিটি মানুষের জীবন মান উন্নত হবে। আমি এইটুকু চাই, আজকে আমাদের দেশটা সুন্দরভাবে গড়ে উঠবে। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

১৩ তলাবিশিষ্ট আধুনিক তথ্য কমিশন ভবনের উদ্বোধন প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বলেন, তথ্য চাওয়া এবং তথ্য পাওয়া এটা জনগণের অধিকার। এটা আমরা নিশ্চিত করেছি। এখন মানুষ কোনো তথ্য চাইলে পেতে পারেন। কারণ আওয়ামী লীগ জনগণের জন্য কাজ করে। আমরা যা করব সম্পূর্ণভাবে জনগণকে জানিয়ে, জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে, জনগণের কল্যাণে করাটাই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য এবং সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাই।

তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা যে সমস্ত কাজের ভিত্তি তৈরি করে দিয়েছিলেন আজ সেই কাজগুলি সফলভাবে করতে পারছি। আমি বিশ্বাস করি তিনি বেহেশত থেকে নিশ্চয়ই দেখবেন তার বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দুঃখী মানুষ তাদের ঘর পাচ্ছে। দুই বেলা খাওয়া হচ্ছে। তাদের পরনে কাপড় আছে। তারা আরও উন্নত জীবন পাবে, সেই পদক্ষেপই আমরা নিয়েছি।

সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষ নৌকার ভোট দিয়ে বারবার সেবা করার সুযোগ দিয়েছে বলেই কাজ করতে পেরেছি। ২০০৯ সাল থেকে দেশে ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক সরকার চলছে, স্থিতিশীলভাবে চলছে। যদিও এর মধ্যে প্রকৃতি-মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ, অগ্নিসন্ত্রাস অনেক কিছুই মোকাবিলা করতে হয়েছে। তারপরও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু বেহেশত থেকে নিশ্চয় দেখবেন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রা যেনো অব্যাহত থাকে, সেটাই আমরা চাই।

বিএনপির সময় তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কোনো কাজ হয়নি জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সুযোগ থাকার পরও সাবমেরিন ক্যাবলে বাংলাদেশকে সংযুক্ত করেননি খালেদা জিয়া। তিনি যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন মোবাইল ফোনের ব্যবস্থা ছিল না। খালেদা জিয়ার এক মন্ত্রী মোরশেদ খানের অধীনে কেবল এক কোম্পানি ছিল। এক ফোনের দাম ছিল এক লাখ ৩০ হাজার টাকা। ফোন করলে মিনিটে ১০ টাকা, ধরলেও ১০ টাকা। এই ছিল ফোনের অবস্থা।

তিনি বলেন, তথ্য চাওয়া-পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। আওয়ামী লীগ জনগণের জন্য কাজ করে। আওয়ামী লীগের কোনো রাখঢাক নেই, তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার চিন্তা নেই। জনগণকে জানিয়েই সব করে আওয়ামী লীগ।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মাইলস্টোনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আহত ৩

আওয়ামী লীগ ছাড়া কেউ জনগণের কথা ভাবেনি : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৩:২৯:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো সরকার জনগণের কথা ভাবেনি বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতাকে হত্যা করে সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে সামরিক শাসন জারি করে যারা সরকারে এসেছিল, তারা কখনওই গণমানুষের কথা ভাবেনি। সেটা জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া যেই হোক। ক্ষমতাকে ভোগ করা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অত্যাচার করা-এটাই তারা জানত। বর্তমানে দুর্যোগ ও অগ্নিসন্ত্রাস মোকাবিলা করেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

রোববার (২০ আগস্ট) সকালে নবনির্মিত ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন ভবন’ ও ‘তথ্য কমিশন ভবন’ এবং ‘বিএফডিসি কমপ্লেক্স নির্মাণ’ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে সরকারপ্রধান এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মানবঢাল রচনা করেই আমাকে রক্ষা করেছিলেন। এটা বোধহয় আমাদের ভাগ্য যে, ওই ট্রাকে কোনো গ্রেনেড পড়েনি, ট্রাকের সঙ্গে লেগে সেটা মাটিতে পড়ে যায়। আমাকে যে মানবঢাল হয়ে রক্ষা করেছিলেন মোহাম্মদ হানিফ তার সমস্ত মাথায় স্প্লিন্টার পড়ে। ওইদিন আমাদের অনেকে আহত হয় এবং মারা যায়।

সিনেমা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, কলকাতা থেকে এই উপমহাদেশে সিনেমার যাত্রা শুরু। আমাদের সিনেমা শিল্পের যাত্রা জাতির পিতার হাত ধরে। তিনি শিল্পমন্ত্রী থাকা অবস্থায় এফডিসি নির্মাণ করেন।

দেশে এক সময় পরিবার নিয়ে সিনেমা দেখার অবস্থা না থাকলেও বর্তমানে ভালো মানের সিনেমা তৈরি হচ্ছে বলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, সিনেমায় জনসাধারণের জন্য বার্তা থাকতে হবে। মাঝে পরিবার নিয়ে সিনেমা দেখা যেত না। এখন তার পরিবর্তন হয়েছে। এখন আধুনিক প্রযুক্তিতে সিনেমা দেখানও হয়। হল মালিকদের সিনেপ্লেক্স তৈরির সুযোগ করে দিয়েছি। এখন ভালো সিনেমা নির্মাণ হচ্ছে, বিদেশে আমাদের সিনেমা প্রশংসা পাচ্ছে। চলচ্চিত্রকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা দিয়ে সুবিধার ব্যবস্থা আমরাই করেছি।

তিনি বলেন, আমার উদ্যোগে আমার পরামর্শেই হাতিরঝিলের পাশের রাস্তা হয়। এফডিসি গড়ে তোলার পেছনে আমার মায়ের অবদান আছে। পাকিস্তান আমলে সিনেমা দেখে রিকশায় করে বাবা-মা ফিরছিলেন। মা বলছিলেন, আমরা বাঙালিরা কি সিনেমা করতে পারি না? তখনই বঙ্গবন্ধু উদ্যোগ নেন এফডিসি করার। বিএনপির আমলে এমন সিনেমা হয়েছিল, যা পরিবার নিয়ে দেখা যেতো না। এখন মানুষ সিনেমা হলে ফিরছে।

শেখ হাসিনা বলেন, শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আমরা গঠন করেছি। যন্ত্রশিল্পী থেকে শুরু করে সব শিল্পীদের সহায়তা করেছি। মানসম্মত সিনেমা নির্মাণের সব ব্যবস্থা করেছি। এফডিসি কমপ্লেক্স করছি।

তথ্য চাওয়া ও পাওয়া মানুষের অধিকার জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো রাখঢাক নয়, জনগণের জন্য কাজ করে আওয়ামী লীগ। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে সার্বিক উন্নয়নে কাজ করছে সরকার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে টেলিডেনসিটি ১০৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা অভাবনীয়। দেশকে আধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।

২০০৪ সালের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার স্মৃতিচারণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, আগামীকাল ২১ আগস্ট। এই ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমরা একটি র‌্যালি করছিলাম। কারণ তার কিছুদিন আগে সিলেটে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর গ্রেনেড হামলাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বোমা হামলা-সন্ত্রাস চলছিল। কিন্তু সেই র‌্যালিতে প্রকাশ্য দিবালোকে গ্রেনেড হামলা করা হয়। সেই গ্রেনেডের আঘাতে আমাদের নারীনেত্রী আইভি রহমানসহ ২২ জন নেতাকর্মী এবং দুজন অজ্ঞাত নিহত হয়। লক্ষ্যটা ছিল আমি এবং আমরা যারা সেই ট্রাকের মঞ্চে ছিলাম তাদের হত্যা করা।

২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যের কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দেশের সার্বিক উন্নতির জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আজকে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। স্মার্ট বাংলাদেশে আমাদের স্মার্ট জনগোষ্ঠী হবে, স্মার্ট ইকোনোমি হবে, স্মার্ট সোসাইটি হবে, স্মার্ট সরকার হবে। সেটা সামনে নিয়েই আমরা সব ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন জনগোষ্ঠী এবং সমাজ এবং সরকার এবং দেশকে গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছি।

বিগত বছরগুলোতে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ ধারাবাহিক ভাবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতির সরকার চলছে। দেশে একটা স্থিতিশীলতা চলছে, যদিও এর মাঝে আমাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ, অগ্নিসন্ত্রাস অনেক কিছুই মোকাবিলা করতে হয়েছে। তারপরও কিন্তু বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা যেন অব্যহত থাকে, সেটাই আমরা চাই।

জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই তারা আমাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বার বার তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন বলেই এই কাজগুলো (দেশের উন্নয়নে) আমরা করতে পেরেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে কোন ক্ষুধা-দারিদ্র থাকবে না, ভূমিহীন মানুষ ঘর পাবে, প্রতিটি মানুষের জীবন মান উন্নত হবে। আমি এইটুকু চাই, আজকে আমাদের দেশটা সুন্দরভাবে গড়ে উঠবে। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

১৩ তলাবিশিষ্ট আধুনিক তথ্য কমিশন ভবনের উদ্বোধন প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বলেন, তথ্য চাওয়া এবং তথ্য পাওয়া এটা জনগণের অধিকার। এটা আমরা নিশ্চিত করেছি। এখন মানুষ কোনো তথ্য চাইলে পেতে পারেন। কারণ আওয়ামী লীগ জনগণের জন্য কাজ করে। আমরা যা করব সম্পূর্ণভাবে জনগণকে জানিয়ে, জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে, জনগণের কল্যাণে করাটাই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য এবং সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাই।

তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা যে সমস্ত কাজের ভিত্তি তৈরি করে দিয়েছিলেন আজ সেই কাজগুলি সফলভাবে করতে পারছি। আমি বিশ্বাস করি তিনি বেহেশত থেকে নিশ্চয়ই দেখবেন তার বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দুঃখী মানুষ তাদের ঘর পাচ্ছে। দুই বেলা খাওয়া হচ্ছে। তাদের পরনে কাপড় আছে। তারা আরও উন্নত জীবন পাবে, সেই পদক্ষেপই আমরা নিয়েছি।

সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষ নৌকার ভোট দিয়ে বারবার সেবা করার সুযোগ দিয়েছে বলেই কাজ করতে পেরেছি। ২০০৯ সাল থেকে দেশে ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক সরকার চলছে, স্থিতিশীলভাবে চলছে। যদিও এর মধ্যে প্রকৃতি-মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ, অগ্নিসন্ত্রাস অনেক কিছুই মোকাবিলা করতে হয়েছে। তারপরও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু বেহেশত থেকে নিশ্চয় দেখবেন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রা যেনো অব্যাহত থাকে, সেটাই আমরা চাই।

বিএনপির সময় তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কোনো কাজ হয়নি জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সুযোগ থাকার পরও সাবমেরিন ক্যাবলে বাংলাদেশকে সংযুক্ত করেননি খালেদা জিয়া। তিনি যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন মোবাইল ফোনের ব্যবস্থা ছিল না। খালেদা জিয়ার এক মন্ত্রী মোরশেদ খানের অধীনে কেবল এক কোম্পানি ছিল। এক ফোনের দাম ছিল এক লাখ ৩০ হাজার টাকা। ফোন করলে মিনিটে ১০ টাকা, ধরলেও ১০ টাকা। এই ছিল ফোনের অবস্থা।

তিনি বলেন, তথ্য চাওয়া-পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। আওয়ামী লীগ জনগণের জন্য কাজ করে। আওয়ামী লীগের কোনো রাখঢাক নেই, তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার চিন্তা নেই। জনগণকে জানিয়েই সব করে আওয়ামী লীগ।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।