Dhaka সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগ চলে গেছে ঠিকই কিন্তু তাদের দোসররা এখনো রয়ে গেছে : মির্জা ফখরুল

গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি : 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ চলে গেছে ঠিকই কিন্তু তাদের দোসররা এখনো রয়ে গেছে। দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে বিভিন্নরকম অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে আওয়ামী লীগ। সকলকে সজাগ থাকতে হবে। হিন্দুভাইরা এ দেশের নাগরিক। নিশ্চয়তা দিচ্ছি, যেকোনও ঘটনা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করা হবে।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হান্নান শাহ্র স্মরণসভায় গাজীপুরের কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, হাসিনা পালালেও সংকট কাটেনি। মানুষ বিশ্বাস করে, অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, কোনও রকম তালবাহানা সহ্য করা হবে না। সমস্ত মামলা প্রত্যাহার করে অবিলম্বে তারেক রহমানকে দেশে ফেরার সুযোগ দিতে হবে। বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার না হলে কখনও নিরপেক্ষ অবস্থা তৈরি হবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, যৌক্তিক সময় মানে অনেক বেশি সময় না। যত দ্রুত নির্বাচন করা যাবে, ততই দেশের মঙ্গল হবে। অতিদ্রুত সংস্কার করে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনে আবারও রাজপথে আন্দোলন করবো।

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকারকে পরাজিত করার পর দম ফেলার সুযোগ পেয়েছেন। এই সুযোগ একদিনে তৈরি হয়নি। তারা গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। ক্ষমতা ধরে রাখতে প্রশাসন, বিচার, অর্থনৈতিক সবকিছু কুক্ষিগত করেছে। শেখ হাসিনা সরকার ভেবেছিল, সারাজীবন ক্ষমতায় থাকবে। অত্যাচর-নিপীড়ন করে ক্ষমতা ধরে রেখে সম্পদের পাহাড় গড়ার পরিকল্পনা ছিল।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘যারা একদিন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছিল, তারাই এখন দুর্নীতির দায়ে কারাগারে যাচ্ছে।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, একটি কথা পরিষ্কার করে বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র বিশ্বাস করে। অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে পার্লামেন্ট সরকার গঠন করতে হবে, সেই সরকার দেশ শাসন করবে। এজন্য যত দ্রুত সম্ভব দেশের প্রশাসনকে সংস্কার করে নির্বাচনের উপযোগী করতে হবে। সংস্কার আমরাও চাই।

মির্জা ফখরুল বলেন, গেল ১৭ বছরের বিএনপির প্রায় এক হাজার লোককে গুম করে হত্যা করা হয়েছে। ৬০ লাখ মানুষের ওপর মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের অত্যাচারে বিএনপি নেতারা ঘুমাতে পারতেন না। এখনো আওয়ামী লীগ বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছে। সামনে দুর্গাপূজা আসছে, এই পূজাকে কেন্দ্র করে তারা দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে পারে।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা বলতে চাই, আপনারা বাংলাদেশের নাগরিক। আমরা সবসময় আপনাদের পাশে আছি। বাংলাদেশের সমস্ত মানুষ আপনাদের পাশে দাঁড়াবে এবং আপনাদের পূজায় যেন হয় সে ব্যাপারে সচেষ্টা থাকবে।

বিএনপি মহাসচিব গার্মেন্টস সেক্টরকে অস্থিতিশীল করার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন। তবে তার লোকজন এখনো পোশাক শিল্প অস্থিতিশীল করছে।

আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ আমলে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তারা একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করে রেখেছিল। তারা দুর্নীতির নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছিল। শেখ হাসিনা ধরে নিয়েছিলেন, তিনি সারা জীবন ক্ষমতায় থাকবেন। এভাবে মানুষের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করবেন এবং সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলবেন।

হান্নান শাহর স্মৃতিচারণ করে ফখরুল বলেন, সৈনিক হলেও গণতন্ত্রের জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন আ স ম হান্নান শাহ। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মরদেহ যখন লুকিয়ে ফেলতে চাওয়া হয়েছিল, সেই সময় হান্নান শাহর যে ভূমিকা ছিল তা বিএনপি আজীবন স্মরণ করবে।

গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও ঢাকা বিভাগীয় সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি এবং হান্নান শাহের ছেলে শাহ্ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব খন্দকার আজিজুর রহমান পেরার পরিচালনায় অন্যদের মধ্যে দলের কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা কমিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ সভায় বক্তব্য দেন।

প্রয়াত হান্নান শাহ্ পুত্র শাহ্ রিয়াজুল হান্নানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে কাপাসিয়া ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলা থেকে দলের সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, কর্মী-সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা স্মরণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আওয়ামী লীগ চলে গেছে ঠিকই কিন্তু তাদের দোসররা এখনো রয়ে গেছে : মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৯:৫৬:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি : 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ চলে গেছে ঠিকই কিন্তু তাদের দোসররা এখনো রয়ে গেছে। দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে বিভিন্নরকম অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে আওয়ামী লীগ। সকলকে সজাগ থাকতে হবে। হিন্দুভাইরা এ দেশের নাগরিক। নিশ্চয়তা দিচ্ছি, যেকোনও ঘটনা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করা হবে।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হান্নান শাহ্র স্মরণসভায় গাজীপুরের কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, হাসিনা পালালেও সংকট কাটেনি। মানুষ বিশ্বাস করে, অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, কোনও রকম তালবাহানা সহ্য করা হবে না। সমস্ত মামলা প্রত্যাহার করে অবিলম্বে তারেক রহমানকে দেশে ফেরার সুযোগ দিতে হবে। বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার না হলে কখনও নিরপেক্ষ অবস্থা তৈরি হবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, যৌক্তিক সময় মানে অনেক বেশি সময় না। যত দ্রুত নির্বাচন করা যাবে, ততই দেশের মঙ্গল হবে। অতিদ্রুত সংস্কার করে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনে আবারও রাজপথে আন্দোলন করবো।

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকারকে পরাজিত করার পর দম ফেলার সুযোগ পেয়েছেন। এই সুযোগ একদিনে তৈরি হয়নি। তারা গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। ক্ষমতা ধরে রাখতে প্রশাসন, বিচার, অর্থনৈতিক সবকিছু কুক্ষিগত করেছে। শেখ হাসিনা সরকার ভেবেছিল, সারাজীবন ক্ষমতায় থাকবে। অত্যাচর-নিপীড়ন করে ক্ষমতা ধরে রেখে সম্পদের পাহাড় গড়ার পরিকল্পনা ছিল।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘যারা একদিন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছিল, তারাই এখন দুর্নীতির দায়ে কারাগারে যাচ্ছে।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, একটি কথা পরিষ্কার করে বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র বিশ্বাস করে। অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে পার্লামেন্ট সরকার গঠন করতে হবে, সেই সরকার দেশ শাসন করবে। এজন্য যত দ্রুত সম্ভব দেশের প্রশাসনকে সংস্কার করে নির্বাচনের উপযোগী করতে হবে। সংস্কার আমরাও চাই।

মির্জা ফখরুল বলেন, গেল ১৭ বছরের বিএনপির প্রায় এক হাজার লোককে গুম করে হত্যা করা হয়েছে। ৬০ লাখ মানুষের ওপর মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের অত্যাচারে বিএনপি নেতারা ঘুমাতে পারতেন না। এখনো আওয়ামী লীগ বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছে। সামনে দুর্গাপূজা আসছে, এই পূজাকে কেন্দ্র করে তারা দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে পারে।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা বলতে চাই, আপনারা বাংলাদেশের নাগরিক। আমরা সবসময় আপনাদের পাশে আছি। বাংলাদেশের সমস্ত মানুষ আপনাদের পাশে দাঁড়াবে এবং আপনাদের পূজায় যেন হয় সে ব্যাপারে সচেষ্টা থাকবে।

বিএনপি মহাসচিব গার্মেন্টস সেক্টরকে অস্থিতিশীল করার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন। তবে তার লোকজন এখনো পোশাক শিল্প অস্থিতিশীল করছে।

আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ আমলে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তারা একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করে রেখেছিল। তারা দুর্নীতির নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছিল। শেখ হাসিনা ধরে নিয়েছিলেন, তিনি সারা জীবন ক্ষমতায় থাকবেন। এভাবে মানুষের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করবেন এবং সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলবেন।

হান্নান শাহর স্মৃতিচারণ করে ফখরুল বলেন, সৈনিক হলেও গণতন্ত্রের জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন আ স ম হান্নান শাহ। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মরদেহ যখন লুকিয়ে ফেলতে চাওয়া হয়েছিল, সেই সময় হান্নান শাহর যে ভূমিকা ছিল তা বিএনপি আজীবন স্মরণ করবে।

গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও ঢাকা বিভাগীয় সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি এবং হান্নান শাহের ছেলে শাহ্ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব খন্দকার আজিজুর রহমান পেরার পরিচালনায় অন্যদের মধ্যে দলের কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা কমিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ সভায় বক্তব্য দেন।

প্রয়াত হান্নান শাহ্ পুত্র শাহ্ রিয়াজুল হান্নানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে কাপাসিয়া ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলা থেকে দলের সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, কর্মী-সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা স্মরণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।