নিজস্ব প্রতিবেদক :
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ ‘নির্বাচন নির্বাচন খেলা’ শুরু করেছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ছাড়া দলীয় সরকারের অধীনে এদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। ১৪-১৮ সালে ভোট দিতে পারেনি জনগণ। সামনের নির্বাচন নিয়েও ‘নির্বাচন নির্বাচন খেলা’ খেলতে চাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
শুক্রবার (৯ জুন) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক বিক্ষোভ মিছিলের আগে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে না হলে কোনো নির্বাচন হবে না। আওয়ামী লীগ সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। সুচিন্তিতভাবে সাধারণ মানুষের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে। শ্রমিকরা ন্যায্যমূল্য পায় না অথচ আওয়ামী লীগের নেতারা বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সমগ্র জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচন দিতে হবে। আন্দোলন শুরু হয়েছে, শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে এসেছে। আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করাসহ সব দাবি আদায় করা হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করে ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে কোনো নির্বাচন হবে না। ২০১৪-১৮এর মতো আবারও একতরফা নির্বাচনের জন্য সরকার নির্বাচনি খেলা খেলতে চায়, জনগণ তা আর হতে দেবে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ সরকার যত দ্রুত বিদায় নেবে দেশের ততই মঙ্গল। এরা দেশের অর্থনীতি পঙ্গু করে দিয়েছে। ভোট চুরি করে বিশ্বের কাছে আমাদের মাথা হেট করেছে। এরা ক্ষমতায় আসে লুটপাটের জন্য। সব লুটপাটের হিসেব এক দিন দিতে হবে।
আওয়ামী লীগের সরকারে যারা আছে, তাদের সঙ্গে যারা আছে তারা দেশ থেকে টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে বলেও এ সময় মন্তব্য করেন তিনি।
নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি নিয়ে ফখরুল বলেন, সাধারণ মানুষ চাল, ডাল, তেল, লবণ কিনতে পারছে না। আমার রিকশাচালক, দিনমজুর, গার্মেন্টসের শ্রমিক ভাইয়েরা কিনতে পারছে না। তাদেরকে যদি আমরা একটি সুস্থ সুন্দর জীবন ফিরিয়ে দিতে চাই তাহলে আমাদের প্রয়োজন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন।
‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’ স্লোগান ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ সরকার যারা জোর করে ১৪ বছর ক্ষমতা দখল করে আছে, তারা অত্যন্ত সুচিন্তিতভাবে সচেতনভাবে সাধারণ মানুষের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আজকে শ্রমিক ভাইয়েরা আপনারা এখানে সমবেত হয়েছেন, আপনাদের ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে…। শ্রমিকদের কাজের কোনও সংস্থান নেই। অথচ আওয়ামী লীগের সরকারে যারা আছে, তাদের সঙ্গে যারা আছে তারা অন্যায় অর্থ উপার্জন করে, লুটতরাজ করে দেশ থেকে টাকা পাচার করে দিচ্ছে।’
নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। কেউ ছাতা হাতে, কেউবা বৃষ্টিতে ভিজেই সামিল হয়েছেন বিক্ষোভ মিছিলে। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে নাইটেঙ্গেল থেকে কাকরাইল মোড় ঘুরে মালিবাগ হয়ে মগবাজারে গিয়ে শেষ হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, আমান উল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ।