নিজস্ব প্রতিবেদক :
নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নিজেদের মতো সবকিছু সাজিয়ে নিতে চায় বলে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচন শুরু হয়ে গেছে। পুলিশ ও প্রশাসনে রদবদল করা হচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ নিজেদের মতো সবকিছু সাজাতে চায়।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) দুপুরে ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ গলার জোরে বলে দেশে গণতন্ত্র আছে। আওয়ামী লীগ কখনোই ভিন্নমত সহ্য করতে পারে না। গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট করা হয়েছে। তারা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল, কিন্তু সেটা টিকেনি। এবারও টিকবে না।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, প্রতিহিংসা ও রাজনীতি থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনকে সরিয়ে দিতে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়া জরুরি হলেও সরকার কোনো সায় দিচ্ছে না।
সরকারকে হটাতে রাস্তায় নেমে আন্দোলন বেগবান করতে হবে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন এর কোনো বিকল্প নেই।
সভায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, ক’য়দিন আগে পত্রিকায় দেখলাম পুলিশে ব্যাপক রদবদল। ব্যাপক পদোন্নতি। সাড়ে সাতশ জনকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। আর পোস্টিংগুলো সব করা হচ্ছে। অর্থাৎ মাথার মধ্যে নির্বাচন। আবার গতকাল দেখলাম সচিবদের পরিবর্তন আনা হচ্ছে। অর্থাৎ প্রশাসনেও পরিবর্তন আনা হচ্ছে। একটাই উদ্দেশ্য নির্বাচনকে সামনে রেখে তাদের মতো করে সব সাজিয়ে নিতে চায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের বডির যে কেমিট্রি, সেই বডির কেমিট্রিটাই হচ্ছে ভিন্নরকম। তারা কখনোই ভিন্নমত সহ্য করতে পারে না, কখনোই পারে না।
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি রাখা হয়েছে উল্লেখ কওে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ, তিনি এখন জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। চিকিৎসকরা অবিলম্বে উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠাতে বলছেন। কিন্তু সরকার সেটা না করে বরং তারা বলছে যে অসুস্থতা নিয়ে আমরা রাজনীতি করছি। এর উত্তর দেওয়ার ভাষা আমাদের কাছে নেই। এর একমাত্র উত্তর হচ্ছে জনগণের অভ্যুত্থান।
সম্প্রতি পুলিশে রদবদল এবং পদোন্নতির যে খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে সে বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার তাদের মতো করে প্রশাসন সাজিয়ে নিচ্ছে। তারা নির্বাচন শুরু করে দিয়েছে। যেমন করে বাকশাল সাজিয়েছিল।
ক্ষমতাসীন দলের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের চেহারা সবসময় দুর্নীতিগ্রস্ত। তাদের সময় এই গণলুট হয়, সন্ত্রাস হয়। আমরা তাদের চিনি, এখন বড় বড় কথা বলে। আওয়ামী লীগের বডি কেমিস্ট্রিতে বোঝা যায় তারা ভিন্নমত সহ্য করতে পারে না। আওয়ামী লীগ এখন গালিতে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, চায়ের দোকানে যে ব্যক্তিটা গায়ের জোরে কথা বলে, টেবিল চাপড়ে কথা বলে মানুষটাকে আওয়ামী লীগ হিসেবে চিহ্নিত করে। কেউ খারাপ ব্যবহার করলে তাকে বলে তুই আওয়ামী লীগ। মানুষ জেগে উঠেছে। আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। এই আন্দোলনে জনগণের বিজয় হবে। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফোরামের আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন ঠাকুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় অন্যদের মধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, সদস্য কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।