নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগকে নিয়ে নির্বাচনে যাওয়ার বিএনপির আগ্রহ নাই বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মঈন খান বলেন, সরকারে থাকাকালীন সময়ে আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের সঙ্গে বেঈমানি করেছে। ফ্যাসিস্টদের নিয়ে কেন নির্বাচনে যাব? ফ্যাসিস্টদের নিয়ে নির্বাচনের আগ্রহ নেই বিএনপির। স্বৈরাচার বিরোধী প্রবাসী বাংলাদেশিদের আত্মীয় স্বজনদের ওপর জুলুম করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এই জাতির সঙ্গে বারবার বেইমানি করেছে। আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়ার আগে প্রমাণ করতে হবে, তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে কিনা।
মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগ কখনও স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি ছিল না। জান বাঁচানোর জন্য ১৯৭১ সালে সাত কোটি বাঙালিকে পাক হানাদার বাহিনীর বন্দুকের মুখে রেখে পালিয়েছিলেন তাদের নেতা। ২০২৪-এর ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তারা পাখির মতো গুলি করে মানুষ মেরেছে। নিজেদের ফ্যাসিবাদী আচরণ প্রকাশের পর একাত্তরের মতো আবারও দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের গুরুদায়িত্ব হলো গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়া। বিএনপি সরকারকে সহযোগিতা করবে। সংস্কার করে যতো দ্রুত সম্ভব জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, ‘অত্যাবশ্যকীয় সংস্কারগুলো শেষ করার পর, যত দ্রুত সম্ভব জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেবে অন্তর্র্বতী সরকার। এই প্রত্যাশা রয়েছে দেশের ১৮ কোটি জনগণের।’
মঈন খান বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, অন্তর্বর্তী সরকারের উপর জনগণের গুরুদায়িত্ব অর্পিত হয়েছে। সে দায়িত্ব হলো দেশের মানুষের গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়া। এটি হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপর ১৮ কোটি মানুষের প্রদত্ত ম্যান্ডেট। আমরা সরকারের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছি যাতে তারা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারে।’
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন, বিগত ১৫ বছর ধরে একটি স্বৈরাচারী সরকার দেশের মানুষের কণ্ঠরোধ করেছে, তাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, অর্থনৈতিক অধিকারও বাতিল করেছে। লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। গুম, খুন, অত্যাচার করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এক লাখ মামলা দেওয়া হয়েছে। এ সব মামলায় বেগম খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ের প্রায় ৫০ লাখ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, লন্ডনে বিএনপির নেতারা আন্দোলন করার সময়, সেখানে কিছু করতে না পেরে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের উপর জুলুম নির্যাতন করা হয়েছে। যারা বিদেশে ছিলেন, তাদের দেশে ফিরতে দেওয়া হয়নি। এক ধরনের শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। পরে দেশের ছাত্র-জনতা উঠে দাঁড়ায় এবং ফলস্বরূপ, জুলাই-আগস্টে তাদের বুকে গুলি মেরে হাজার হাজার ছাত্রকে হত্যা করে এই সরকার।
মঈন খান বলেন, পৃথিবী প্রমাণ করেছে, জনতার আন্দোলনে কোনো স্বৈরাচার শাসন টিকে থাকতে পারে না। এটা আবারও দেশের প্রেক্ষাপটে প্রমাণিত হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, দেশে পুনরায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে। সেই গণতন্ত্রের জন্যই তো ১৯৭১ সালে আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছিল।
এ সময় যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ-সভাপতি আবেদ রাজাসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।