Dhaka রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আইসিসির মাসসেরা হলেন মিরাজ

স্পোর্টস ডেস্ক : 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের স্বীকৃতি পেলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বাংলাদেশের এই তারকা অলরাউন্ডার জিতলেন আইসিসি এপ্রিল মাসের সেরা পুরুষ ক্রিকেটারের পুরস্কার। এ বছরের এপ্রিলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্ট সিরিজে ব্যাটে-বলে দাপট দেখিয়ে নতুন এক উচ্চতায় পা রাখলেন মিরাজ!

বুধবার (১৪ মে) এক বিজ্ঞপ্তিতে এপ্রিল মাসের সেরা ক্রিকেটারের নাম ঘোষণা করেছে আইসিসি। সেরার দৌড়ে মিরাজ পেছনে ফেলেছেন জিম্বাবুয়ের ব্লেসিং মুজারাবানি ও নিউজিল্যান্ডের বেন সিয়ার্সকে।

২০২১ সাল থেকে চালু হওয়া মাসসেরা ক্রিকেটার পুরস্কারে এর আগে বাংলাদেশের পক্ষে মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান। নারীদের মধ্যে জিতেছেন নাহিদা আক্তার। পুরুষ ক্রিকেটার হিসেবে সাকিব ২০২৩ সালের মার্চে জেতেন এ পুরস্কার। প্রায় দুই বছর পর মিরাজ বাংলাদেশকে এনে দিলেন এই সম্মান। এই প্রথমবারের মতো এই পুরস্কার পেলেন ২৭ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার ।

এমন অর্জনের পর মিরাজ বলেন, আইসিসি মেনস প্লেয়ার অব দ্য মান্থ পাওয়া দারুণ সম্মানের। এটি বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত একটি পুরস্কার এবং গ্লোবাল ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হওয়াটা আমার জন্য অনেক গর্বের। এটি আমাকে আমার পথচলার কথা মনে করিয়ে দেয়-২০১৬ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে সেরা খেলোয়াড় হওয়াটা যেমন বিশাল প্রেরণা ছিল, এই পুরস্কারও তেমনি বিশেষ কিছু।

বাংলাদেশের এই তারকা ক্রিকেটার আরও বলেন, এটি আমাকে আরও ভালো খেলতে অনুপ্রাণিত করবে, দেশের জন্য অবদান রাখতে সাহায্য করবে। আমি ধন্যবাদ দিতে চাই আমার সতীর্থ, কোচ এবং ভক্তদের-এই পুরস্কার তাদের সবার।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে মিরাজ ব্যাটে-বলে ছিলেন সমান উজ্জ্বল। দুই টেস্টে ৩৮.৬৬ গড়ে করেন ১১৬ রান, নিয়েছেন ১৫ উইকেট মাত্র ১১.৮৬ গড় দিয়ে। সিলেট টেস্টে দুই ইনিংসে নিয়েছিলেন টানা দুটি পাঁচ উইকেট-৫/৫২ ও ৫/৫০। যদিও সেই ম্যাচে তিন উইকেটে হেরে যায় বাংলাদেশ।

তবে চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্টে নিজের সামর্থ্যের পুরোটা দেন মিরাজ। প্রথম ইনিংসে খেলেন দারুণ এক সেঞ্চুরি-১০৪ রান ১৬২ বলে। পরে বল হাতে আবারও পাঁচ উইকেট (৫/৩২) নিয়ে বাংলাদেশকে এনে দেন ইনিংস ও ১০৬ রানের বড় জয়।

এই পারফরম্যান্সেই নিজেকে ছাড়িয়ে গেছেন মিরাজ। এনে দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটকে আরও একটি আন্তর্জাতিক সম্মান। বলা দরকার, আইসিসির নিরপেক্ষ ভোটিং অ্যাকাডেমি ও ক্রিকেটপ্রেমীদের সম্মিলিত ভোটে ঠিক হয় মাসসেরার এই পুরস্কার।

বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে বল হাতে ঝলক দেখান মুজারাবানি। ৬ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার এ পেসার দুই টেস্ট মিলিয়ে নেন মোট ১০ উইকেট। এর মধ্যে ৯টিই সিলেটে, যা চার বছর পর জিম্বাবুয়েকে টেস্ট জেতাতে সহায়তা করে। সিলেট টেস্টে সেরা খেলোয়াড়ও হন মুজারাবানি।

নিউজিল্যান্ডের পেসার সিয়ার্স গত মাসে আলো ছড়িয়েছেন পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে। নিজেদের মাঠে বাবর-রিজওয়ানদের ৩–০ ব্যবধানে ধবলধোলাই করে কিউইরা। সিয়ার্স প্রথম ওয়ানডেতে না খেললেও শেষ দুই ওয়ানডেতে পাঁচটি-পাঁচটি করে নেন ১০ উইকেট।

২০২১ সাল থেকে মাসসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার দিচ্ছে আইসিসি। বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির একটি স্বাধীন ভোটিং একাডেমি সেরা খেলোয়াড় নির্বাচন করেন। প্যানেলে আছেন সাবেক ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার ও ক্রীড়া সাংবাদিক। এ ছাড়া দর্শকেরাও আইসিসির ওয়েবসাইটে গিয়ে মনোনীত তিন খেলোয়াড়ের একজনকে ভোট দিতে পারেন।

নারী-পুরুষ মিলিয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের চার ক্রিকেটার চারবার আইসিসির মাসসেরা হলেন। ২০২১ সালের মে মাসে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এই পুরস্কার জেতেন মুশফিকুর রহিম। সাকিব জিতেছেন দুবার ২০২১ সালের জুলাইয়ের পর ২০২৩ সালের মার্চে। একমাত্র বাংলাদেশি নারী ক্রিকেটার হিসেবে নাহিদা আক্তার আইসিসির মাসসেরা স্বীকৃতি পেয়েছেন ২০২৩ সালের নভেম্বরে।

মেয়েদের বিভাগে এপ্রিল মাসের সেরা হয়েছেন স্কটল্যান্ডের অধিনায়ক ক্যাথরিন ব্রাইস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক হেইলি ম্যাথুজ ও পাকিস্তানের অধিনায়ক সানা ফাতিমাকে পেছনে মাসসেরা হন ব্রাইস। পাকিস্তানে গত মাসে অনুষ্ঠিত নারী বিশ্বকাপ বাছাইয়ে সর্বোচ্চ রান করার পাশাপাশি টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হন তিনি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

৩২ নম্বরে ফুল দিতে গিয়ে কারাগারে যাওয়া সেই রিকশাচালক জামিন পেলেন

আইসিসির মাসসেরা হলেন মিরাজ

প্রকাশের সময় : ০৩:০৬:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

স্পোর্টস ডেস্ক : 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের স্বীকৃতি পেলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বাংলাদেশের এই তারকা অলরাউন্ডার জিতলেন আইসিসি এপ্রিল মাসের সেরা পুরুষ ক্রিকেটারের পুরস্কার। এ বছরের এপ্রিলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্ট সিরিজে ব্যাটে-বলে দাপট দেখিয়ে নতুন এক উচ্চতায় পা রাখলেন মিরাজ!

বুধবার (১৪ মে) এক বিজ্ঞপ্তিতে এপ্রিল মাসের সেরা ক্রিকেটারের নাম ঘোষণা করেছে আইসিসি। সেরার দৌড়ে মিরাজ পেছনে ফেলেছেন জিম্বাবুয়ের ব্লেসিং মুজারাবানি ও নিউজিল্যান্ডের বেন সিয়ার্সকে।

২০২১ সাল থেকে চালু হওয়া মাসসেরা ক্রিকেটার পুরস্কারে এর আগে বাংলাদেশের পক্ষে মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান। নারীদের মধ্যে জিতেছেন নাহিদা আক্তার। পুরুষ ক্রিকেটার হিসেবে সাকিব ২০২৩ সালের মার্চে জেতেন এ পুরস্কার। প্রায় দুই বছর পর মিরাজ বাংলাদেশকে এনে দিলেন এই সম্মান। এই প্রথমবারের মতো এই পুরস্কার পেলেন ২৭ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার ।

এমন অর্জনের পর মিরাজ বলেন, আইসিসি মেনস প্লেয়ার অব দ্য মান্থ পাওয়া দারুণ সম্মানের। এটি বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত একটি পুরস্কার এবং গ্লোবাল ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হওয়াটা আমার জন্য অনেক গর্বের। এটি আমাকে আমার পথচলার কথা মনে করিয়ে দেয়-২০১৬ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে সেরা খেলোয়াড় হওয়াটা যেমন বিশাল প্রেরণা ছিল, এই পুরস্কারও তেমনি বিশেষ কিছু।

বাংলাদেশের এই তারকা ক্রিকেটার আরও বলেন, এটি আমাকে আরও ভালো খেলতে অনুপ্রাণিত করবে, দেশের জন্য অবদান রাখতে সাহায্য করবে। আমি ধন্যবাদ দিতে চাই আমার সতীর্থ, কোচ এবং ভক্তদের-এই পুরস্কার তাদের সবার।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে মিরাজ ব্যাটে-বলে ছিলেন সমান উজ্জ্বল। দুই টেস্টে ৩৮.৬৬ গড়ে করেন ১১৬ রান, নিয়েছেন ১৫ উইকেট মাত্র ১১.৮৬ গড় দিয়ে। সিলেট টেস্টে দুই ইনিংসে নিয়েছিলেন টানা দুটি পাঁচ উইকেট-৫/৫২ ও ৫/৫০। যদিও সেই ম্যাচে তিন উইকেটে হেরে যায় বাংলাদেশ।

তবে চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্টে নিজের সামর্থ্যের পুরোটা দেন মিরাজ। প্রথম ইনিংসে খেলেন দারুণ এক সেঞ্চুরি-১০৪ রান ১৬২ বলে। পরে বল হাতে আবারও পাঁচ উইকেট (৫/৩২) নিয়ে বাংলাদেশকে এনে দেন ইনিংস ও ১০৬ রানের বড় জয়।

এই পারফরম্যান্সেই নিজেকে ছাড়িয়ে গেছেন মিরাজ। এনে দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটকে আরও একটি আন্তর্জাতিক সম্মান। বলা দরকার, আইসিসির নিরপেক্ষ ভোটিং অ্যাকাডেমি ও ক্রিকেটপ্রেমীদের সম্মিলিত ভোটে ঠিক হয় মাসসেরার এই পুরস্কার।

বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে বল হাতে ঝলক দেখান মুজারাবানি। ৬ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার এ পেসার দুই টেস্ট মিলিয়ে নেন মোট ১০ উইকেট। এর মধ্যে ৯টিই সিলেটে, যা চার বছর পর জিম্বাবুয়েকে টেস্ট জেতাতে সহায়তা করে। সিলেট টেস্টে সেরা খেলোয়াড়ও হন মুজারাবানি।

নিউজিল্যান্ডের পেসার সিয়ার্স গত মাসে আলো ছড়িয়েছেন পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে। নিজেদের মাঠে বাবর-রিজওয়ানদের ৩–০ ব্যবধানে ধবলধোলাই করে কিউইরা। সিয়ার্স প্রথম ওয়ানডেতে না খেললেও শেষ দুই ওয়ানডেতে পাঁচটি-পাঁচটি করে নেন ১০ উইকেট।

২০২১ সাল থেকে মাসসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার দিচ্ছে আইসিসি। বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির একটি স্বাধীন ভোটিং একাডেমি সেরা খেলোয়াড় নির্বাচন করেন। প্যানেলে আছেন সাবেক ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার ও ক্রীড়া সাংবাদিক। এ ছাড়া দর্শকেরাও আইসিসির ওয়েবসাইটে গিয়ে মনোনীত তিন খেলোয়াড়ের একজনকে ভোট দিতে পারেন।

নারী-পুরুষ মিলিয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের চার ক্রিকেটার চারবার আইসিসির মাসসেরা হলেন। ২০২১ সালের মে মাসে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এই পুরস্কার জেতেন মুশফিকুর রহিম। সাকিব জিতেছেন দুবার ২০২১ সালের জুলাইয়ের পর ২০২৩ সালের মার্চে। একমাত্র বাংলাদেশি নারী ক্রিকেটার হিসেবে নাহিদা আক্তার আইসিসির মাসসেরা স্বীকৃতি পেয়েছেন ২০২৩ সালের নভেম্বরে।

মেয়েদের বিভাগে এপ্রিল মাসের সেরা হয়েছেন স্কটল্যান্ডের অধিনায়ক ক্যাথরিন ব্রাইস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক হেইলি ম্যাথুজ ও পাকিস্তানের অধিনায়ক সানা ফাতিমাকে পেছনে মাসসেরা হন ব্রাইস। পাকিস্তানে গত মাসে অনুষ্ঠিত নারী বিশ্বকাপ বাছাইয়ে সর্বোচ্চ রান করার পাশাপাশি টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হন তিনি।