নিজস্ব প্রতিবেদক :
অ্যান্টিক মেটাল কয়েন দিয়ে ব্যবসার নামে প্রতারণা করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে চার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। গ্রেপ্তার চারজন ‘ম্যাগনেটিক কয়েন’ প্রতারক চক্রের সদস্য।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাতে আদাবরের প্রিন্স বাজার, শেখেরটেক, সূচনা কমিউনিটি সেন্টার ও কৃষি মার্কেটসহ অন্যান্য এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- ইফতেখার আহম্মেদ (৪৪), আবু নাঈম মো. ফাইজানুল হক ওরফে ডক্টর নাঈম (৪৮), মো. আব্দুল হালিম তালুকদার কুরাইশি (৪২) ও আবুল কালাম আজাদ (৪৬)।
এ সময় তাদের হেফাজত হতে চারটি ‘এন্টিক মেটাল কয়েন’ (ধাতব মুদ্রা), একটি ৫০ লক্ষ টাকার ব্যাংক চেক, নগদ ১৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং আসামিদের প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ১০টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার (২১ মার্চ) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আট মাস আগে ইফতেখার আহম্মেদ মিজানুর রহমান নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচিত হন। তাকে ‘অ্যান্টিক মেটাল কয়েন’ নামক একটি ব্যবসা সম্পর্কে প্রলোভন দেখান। জাপান ও ইউএসএর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এই কয়েনের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং তারা এই কয়েনগুলোকে খুব উচ্চমূল্যে বিক্রি করতে সক্ষম বলে জানান ইফতেখার।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর গুলশানে একটি হোটেলে মিজানুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করে তারা জানায়, প্রতিটি কয়েনের বাজার মূল্য প্রায় ২০ বিলিয়ন ইউএস ডলার। তারা একজন ভুয়া কেমিস্ট মো. আব্দুল হালিম তালুকদার কুরাইশির মাধ্যমে কয়েনগুলোর যাচাই করে মিজানুরকে একটি রিপোর্ট দেয়।
এরপর, মিজানুর রহমান অগ্রিম ৪৫ লাখ টাকা দেন এবং পরে আরও ৭৫ লাখ টাকা নগদ এবং ৫০ লাখ টাকার ইসলামী ব্যাংকের চেক দেন। পরবর্তীতে, মিজানুর বুঝতে পারেন, এই কয়েনগুলো আসলে ভুয়া এবং তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এরপর তিনি আদাবর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
আদাবর থানা-পুলিশ মামলার ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করে এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, গ্রেপ্তাররা আন্তজেলা ম্যাগনেটিক কয়েন প্রতারক চক্রের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে এই ধরনের প্রতারণা করে আসছিল।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের পাশাপাশি এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তার অভিযান চলছে।