Dhaka শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে প্রথমবার ফাইনালে ইংল্যান্ড

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৮:২৯:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৩
  • ২০৭ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডে যৌথভাবে আয়োজিত হচ্ছে এবারের নারীদের বিশ্বকাপ। বিশ্ব শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড। আর এতে অজিদের ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবার মতে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে ইংলিশরা।

নারী ফুটবল বিশ্বকাপের নবম আসর মানেই যেন উত্তেজনা-রোমাঞ্চকর লড়াই। ৩২ দেশের লড়াই শেষে ফাইনালে যাওয়ার ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল দুই পরাশক্তি স্পেন ও সুইডেন। নিউজিল্যান্ডের ইডেন পার্কে বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে ২-১ গোলে জয়ে পেয়েছে স্পেন। এই জয়ে প্রথমবারের মতো ইতিহাস গড়ে নারী বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে স্প্যানিশরা। আর অজিদের হারিয়ে স্প্যানিশদের প্রতিপক্ষ হিসেবে ফাইনালে পা রাখলো ইংল্যান্ড।

এর আগে বিশ্বকাপে তিনবার কোয়ার্টার ফাইনাল এবং দুইবার সেমি ফাইনাল খেললেও ফাইনালে যাওয়া হয়নি ইংলিশদের। এবারই প্রথম সেমির বাঁধা মাড়িয়ে ঘরের মাঠে অজিদের স্বপ্নভঙ্গ করে স্বপ্নের শিরোপা ছোয়ার আরও নিকটে পৌঁছে গেল তারা।

২০১৫ এবং ২০১৯ বিশ্বকাপে টানা দুইবার সেমি ফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল ইংলিশদের। তবে তৃতীয়বারের বেলায় আর ভাগ্য বিধাতা বিমুখ করেনি তাদের। সিডনির অলিম্পিক স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে তারা ফাইনালে উঠেন।

বাংলাদেশ সময় বুধবার (১৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অনুষ্ঠিত হওয়া ম্যাচে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে ইংল্যান্ড। তবে বারবার স্বাগতিকদের ডি-বক্সে ঢুকেও ব্যর্থ হতে হয় তাদের।

প্রথম পনের মিনিটে বলার মত সুযোগ করতে পারেনি কেউই। ১৮ মিনিটে ইংলিশ অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ইলা টনির শট সাইড নেটে না লাগলে হয়ত এগিয়ে যেতে পারত ইংল্যান্ড। তবে তার আক্ষেপ বেশি বড় হয়নি। ম্যাচের ৩৬ মিনিটে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে মাঠের বাম দিক ধরে বক্সে ঢুকে পড়েন এলা টনি। অস্ট্রেলিয়ার এক খেলোয়াড় তাকে আটকাতে গিয়েও ব্যর্থ হন। আর সেই সুযোগে কোণাকুণি শটে গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়ান এই প্রমীলা তারকা। প্রথমার্ধে আর গোলের দেখা পায়নি কোনো দলই।

বিরতির পর থেকেই অবশ্য ইংলিশ রক্ষণে আতঙ্ক ছড়াতে শুরু করে স্যাম কার-ক্যাটরিয়া গোরিরা। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টা করেছিল অজিরা। তাতে সফলতা আসেনি খুব একটা।

অবশ্য অস্ট্রেলিয়া পরে ম্যাচে ফিরেছে। তাও অধিনায়ক স্যাম কারের কল্যাণে। মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে এককভাবেই এগিয়ে গিয়েছেন। এরপর ডিবক্সের বাইরে থেকে করেছেন টুর্নামেন্টের অন্যতম দর্শনীয় গোল। ৬৩ মিনিটের সেই গোল আশা দেখাচ্ছিল স্বাগতিকদের।

ইংল্যান্ডের সামনে সুযোগ ছিল এই ম্যাচ জিতে প্রথমবারের মতো ফাইনাল খেলা। সেই লক্ষ্য নিয়েই খেলতে থাকে তারা। অস্ট্রেলিয়া সমতা ফেরানোর পরও তাই নিজেদের খেলায় পরিবর্তন আনেননি ইংল্যান্ডের মেয়েরা। আক্রমণের ধার বাড়ানোর সুফলও এসেছে হাতেনাতে। ম্যানসিটি নারী দলের লরেন হ্যাম্প ম্যাচে ফেরান ইংল্যান্ডকে। ৭১ মিনিটে অস্ট্রেলিয়ার রক্ষণের ভুলে এগিয়ে যায় থ্রি লায়োনিসরা। এগিয়ে আসা অজি গোলরক্ষক ম্যাকেঞ্জিকে সহজ শটে পরাস্ত করেন হ্যাম্প (২-১)।

মূলত এখানেই অজি মেয়েদের মনোবল ভেঙে পড়ে। গোল খেয়ে আর উঠে দাঁড়াতে পারেনি তারা। এই সুযোগ নিয়েই স্বপ্ন পূরণের আরও কাছে পৌঁছে যায় ইংলিশ মেয়েরা। ম্যাচের ৮৬ মিনিটে আলেসা রুশো শেষ পেরেকটা ঠুঁকে দেন অস্ট্রেলিয়ার কফিনে। আর তাতেই ঘরের মাঠে ৭৬ হাজার দর্শকের সামনে হারের যন্ত্রণায় লুটিয়ে পড়ে অস্ট্রেলিয়ার মেয়েরা।

সেমিফাইনালে স্বাগতিক অজিদের বিপক্ষে আধিপত্য বজায় রেখেই খেলেছে ইউরোপিয়ান ফুটবলের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। ম্যাচের মোট ৫৮ শতাংশ সময় বল নিজেদের নিয়ন্ত্রনে রেখেছিল তারা।

অজিদের বিপক্ষে আজকের ম্যাচে ইংল্যান্ড আজ মোট ১৫ টি শট নেয় যার ৫টি তারা রাখতে পেরেছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে ১২ টি শট নেয়া অস্ট্রেলিয়া লক্ষ্যে রাখতে পেরেছিল মোট ৪টি।

ফাইনালে রোববার (২০ আগস্ট) স্পেনের মুখোমুখি হবে ইংলিশ নারীরা। এর আগে দুই দলের কেউই বিশ্বকাপ শিরোপার দেখা পায়নি। সিডনির ফাইনাল তাই ফুটবল বিশ্বকে উপহার দিবে নতুন এক চ্যাম্পিয়ন দল।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে প্রথমবার ফাইনালে ইংল্যান্ড

প্রকাশের সময় : ০৮:২৯:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক : 

অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডে যৌথভাবে আয়োজিত হচ্ছে এবারের নারীদের বিশ্বকাপ। বিশ্ব শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড। আর এতে অজিদের ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবার মতে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে ইংলিশরা।

নারী ফুটবল বিশ্বকাপের নবম আসর মানেই যেন উত্তেজনা-রোমাঞ্চকর লড়াই। ৩২ দেশের লড়াই শেষে ফাইনালে যাওয়ার ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল দুই পরাশক্তি স্পেন ও সুইডেন। নিউজিল্যান্ডের ইডেন পার্কে বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে ২-১ গোলে জয়ে পেয়েছে স্পেন। এই জয়ে প্রথমবারের মতো ইতিহাস গড়ে নারী বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে স্প্যানিশরা। আর অজিদের হারিয়ে স্প্যানিশদের প্রতিপক্ষ হিসেবে ফাইনালে পা রাখলো ইংল্যান্ড।

এর আগে বিশ্বকাপে তিনবার কোয়ার্টার ফাইনাল এবং দুইবার সেমি ফাইনাল খেললেও ফাইনালে যাওয়া হয়নি ইংলিশদের। এবারই প্রথম সেমির বাঁধা মাড়িয়ে ঘরের মাঠে অজিদের স্বপ্নভঙ্গ করে স্বপ্নের শিরোপা ছোয়ার আরও নিকটে পৌঁছে গেল তারা।

২০১৫ এবং ২০১৯ বিশ্বকাপে টানা দুইবার সেমি ফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল ইংলিশদের। তবে তৃতীয়বারের বেলায় আর ভাগ্য বিধাতা বিমুখ করেনি তাদের। সিডনির অলিম্পিক স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে তারা ফাইনালে উঠেন।

বাংলাদেশ সময় বুধবার (১৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অনুষ্ঠিত হওয়া ম্যাচে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে ইংল্যান্ড। তবে বারবার স্বাগতিকদের ডি-বক্সে ঢুকেও ব্যর্থ হতে হয় তাদের।

প্রথম পনের মিনিটে বলার মত সুযোগ করতে পারেনি কেউই। ১৮ মিনিটে ইংলিশ অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ইলা টনির শট সাইড নেটে না লাগলে হয়ত এগিয়ে যেতে পারত ইংল্যান্ড। তবে তার আক্ষেপ বেশি বড় হয়নি। ম্যাচের ৩৬ মিনিটে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে মাঠের বাম দিক ধরে বক্সে ঢুকে পড়েন এলা টনি। অস্ট্রেলিয়ার এক খেলোয়াড় তাকে আটকাতে গিয়েও ব্যর্থ হন। আর সেই সুযোগে কোণাকুণি শটে গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়ান এই প্রমীলা তারকা। প্রথমার্ধে আর গোলের দেখা পায়নি কোনো দলই।

বিরতির পর থেকেই অবশ্য ইংলিশ রক্ষণে আতঙ্ক ছড়াতে শুরু করে স্যাম কার-ক্যাটরিয়া গোরিরা। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টা করেছিল অজিরা। তাতে সফলতা আসেনি খুব একটা।

অবশ্য অস্ট্রেলিয়া পরে ম্যাচে ফিরেছে। তাও অধিনায়ক স্যাম কারের কল্যাণে। মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে এককভাবেই এগিয়ে গিয়েছেন। এরপর ডিবক্সের বাইরে থেকে করেছেন টুর্নামেন্টের অন্যতম দর্শনীয় গোল। ৬৩ মিনিটের সেই গোল আশা দেখাচ্ছিল স্বাগতিকদের।

ইংল্যান্ডের সামনে সুযোগ ছিল এই ম্যাচ জিতে প্রথমবারের মতো ফাইনাল খেলা। সেই লক্ষ্য নিয়েই খেলতে থাকে তারা। অস্ট্রেলিয়া সমতা ফেরানোর পরও তাই নিজেদের খেলায় পরিবর্তন আনেননি ইংল্যান্ডের মেয়েরা। আক্রমণের ধার বাড়ানোর সুফলও এসেছে হাতেনাতে। ম্যানসিটি নারী দলের লরেন হ্যাম্প ম্যাচে ফেরান ইংল্যান্ডকে। ৭১ মিনিটে অস্ট্রেলিয়ার রক্ষণের ভুলে এগিয়ে যায় থ্রি লায়োনিসরা। এগিয়ে আসা অজি গোলরক্ষক ম্যাকেঞ্জিকে সহজ শটে পরাস্ত করেন হ্যাম্প (২-১)।

মূলত এখানেই অজি মেয়েদের মনোবল ভেঙে পড়ে। গোল খেয়ে আর উঠে দাঁড়াতে পারেনি তারা। এই সুযোগ নিয়েই স্বপ্ন পূরণের আরও কাছে পৌঁছে যায় ইংলিশ মেয়েরা। ম্যাচের ৮৬ মিনিটে আলেসা রুশো শেষ পেরেকটা ঠুঁকে দেন অস্ট্রেলিয়ার কফিনে। আর তাতেই ঘরের মাঠে ৭৬ হাজার দর্শকের সামনে হারের যন্ত্রণায় লুটিয়ে পড়ে অস্ট্রেলিয়ার মেয়েরা।

সেমিফাইনালে স্বাগতিক অজিদের বিপক্ষে আধিপত্য বজায় রেখেই খেলেছে ইউরোপিয়ান ফুটবলের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। ম্যাচের মোট ৫৮ শতাংশ সময় বল নিজেদের নিয়ন্ত্রনে রেখেছিল তারা।

অজিদের বিপক্ষে আজকের ম্যাচে ইংল্যান্ড আজ মোট ১৫ টি শট নেয় যার ৫টি তারা রাখতে পেরেছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে ১২ টি শট নেয়া অস্ট্রেলিয়া লক্ষ্যে রাখতে পেরেছিল মোট ৪টি।

ফাইনালে রোববার (২০ আগস্ট) স্পেনের মুখোমুখি হবে ইংলিশ নারীরা। এর আগে দুই দলের কেউই বিশ্বকাপ শিরোপার দেখা পায়নি। সিডনির ফাইনাল তাই ফুটবল বিশ্বকে উপহার দিবে নতুন এক চ্যাম্পিয়ন দল।