রংপুর জেলা প্রতিনিধি :
অপহরণ হওয়া ৪ শিশুকে উদ্ধার করেছে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। শুক্রবার রাতে রংপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। এ সময় অপহরণকারী আদুরী বেগম নামে এক নারীকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
শনিবার (২৯ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী।
আটক আদুরী বেগম (৪০) কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ফকিরচর গ্রামের মনছুর আলীর স্ত্রী। তিনি রংপুর নগরীর বাবুপাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে হারাগাছ থানায় একটি অপহরণ মামলা করেছেন এক শিশুর বাবা। ওই মামলায় আদুরী বেগমকে প্রধান করে আরও অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
শিশুদের স্বজন ও স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার দিনের বেলা আদুরী বেগম নিজেকে ‘অসহায়-বিপদগ্রস্ত’ দাবি করে নগরীর ৭নম্বর ওয়ার্ডের তপোধন গ্রামের আশিকুল ইসলামের বাড়িতে আশ্রয় চান।
অসহায় ভেবে তাকে আশ্রয় দিলে রাতে ওই বাড়িতেই অবস্থান করেন আদুরী। শুক্রবার ভোরে সেহেরি করার পরে সারাদিন সেখানে ছিলেন তিনি। পরে ইফতারের পরপরই আশপাশের চার শিশুসহ তিনি নিখোঁজ হন।
বিষয়টি শিশুদের স্বজনরা টের পেলে এলাকায় হৈচৈ পড়ে যায়। দ্রুত পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
দ্রুত বিভিন্ন ইউনিটকে জানানো হলে রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড এলাকাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেয় পুলিশ।
এরপর রাতে চার শিশু নিয়ে ঘোরাফেরা করতে দেখে সন্দেহ হলে ওই নারীকে আটক করে স্টেশনে থাকা লোকজন। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা নারীকে মারধরেরও চেষ্টা করে।
রংপুর রেলস্টেশনের সুপার শংকর গাঙ্গুলি বলেন, “স্থানীয়রা ওই নারীকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে তাদের সবাইকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে শিশু চারজনকে পাচারের উদ্দেশ্যে আনা হয়েছিল “
রংপুর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবুল কালাম বলেন, “আমরা ৪ শিশুসহ নারীকে আটক করে সেনাবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানার ওসির হেফাজতে হস্তান্তর করেছি।”
পরে শুক্রবার রাতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তাকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী বলেন, ভালো খবর হলো নিষ্পাপ এই বাচ্চাগুলোকে উদ্ধার করা হয়েছে। রাতেই সবার পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। এ ঘটনায় একটি অপহরণ মামলা হয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেপ্তার নারীকে আদালতে পাঠানো হবে। তার সঙ্গে অন্য আরও কেউ জড়িত রয়েছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।