স্পোর্টস ডেস্ক :
প্যারিস অলিম্পিকে টেনিসের ‘বিগ ফোরের’ আরেকটি নক্ষত্রের বিদায়। সুইস কিংবদন্তি রজার ফেদেরারের পর এবার বিদায় নিলেন অ্যান্ডি মারে। বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) প্যারিস অলিম্পিকে ছেলেদের দ্বৈতে হেরে যাওয়ার পরেই ক্যারিয়ারের ইতি টানেন ব্রিটিশ তারকা।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) ছেলেদের দ্বৈত ইভেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে যুক্তরাষ্ট্রের টেলর ফ্রিৎজ ও টমি পল জুটির কাছে ৬-২, ৬-৪ গেমে হেরেছে গ্রেট ব্রিটেনের মারে ও ড্যান ইভানস জুটি।
টেনিস থেকে চাওয়া-পাওয়ার হিসেব পেছনে রেখে বিদায়বেলায় র্যাঙ্কিংয়ের সাবেক এক নম্বর বলেন, নিজের ক্যারিয়ার, অর্জন ও এই খেলায় যতটুকু অবদান রাখতে পেরেছি, তা নিয়ে আমি গর্বিত। অবশ্যই এটা আবেগের। কারণ, এটাই (আমার) শেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ।
‘তবে এখন আমি সত্যিই খুশি। যেভাবে শেষ হলো, তাতে আমি খুশি। এটা ভালো লাগছে যে অলিম্পিকে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী শেষ করতে পেরেছি। কারণ, (চোটের কারণে) গত কয়েক বছরে এর কোনো নিশ্চয়তা ছিল না।’- আরও যোগ করেন তিনটি গ্র্যান্ডস্লাম জয়ী তারকা।
বিদায়বেলায় প্রতিপক্ষ তারকাদের কাছ থেকে অভিবাদন পেয়েছেন মারে। সার্বিয়ান কিংবদন্তি নোভাক জোকোভিচ গ্রেট ব্রিটেনের এই তারকাকে ‘অবিশ্বাস্য প্রতিদ্বন্দ্বী’ আখ্যা দিয়ে বলেন, টেনিসে সেরা যোদ্ধাদের একজন সে। আমি নিশ্চিত, তার লড়াই করার চেতনা কয়েক প্রজন্মকে প্রেরণা জোগাবে।
বিদায়বেলায় মারেকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন বর্তমান উইম্বলডন ও ফ্রেঞ্চ ওপেন চ্যাম্পিয়ন কার্লোস আলকারাজ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে আলকারাজ লিখেছেন, একই কোর্টে তোমার সঙ্গে দাঁড়ানোটা ছিল বিশেষ কিছু। কিংবদন্তিতুল্য ক্যারিয়ারের জন্য এবং সবার উদাহরণ হয়ে ওঠার জন্য অভিনন্দন। তুমি সব সময়ই একজন সমর্থককে পাবে এখানে।
চার বছর পর রিও অলিম্পিকে হুয়ান মার্টিন দেল পোত্রোকে হারিয়ে ছেলে ও মেয়েদের ইভেন্ট মিলিয়ে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে অলিম্পিকের একক ইভেন্টে দুটি সোনা জয়ের কীর্তি গড়েন। সব মিলিয়ে ক্যারিয়ারে ৪৬টি শিরোপা জিতেছেন মারে। আয় করেছেন ৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার।
এর আগে মারে পেশাদার টেনিস ক্যারিয়ার শুরু করেন ২০০৫ সালে। এরপর থেকে ৩৭ বছর বয়সী মারে মোট এক হাজার একটি এককের ম্যাচ খেলছেন, সঙ্গে খেলেছেন অনেক দ্বৈতের ম্যাচ। সবমিলিয়ে ক্যারিয়ারে ৪৬টি এটিপি শিরোপা জয়ী মারে ২০১৫ সালে ব্রিটেনকে ডেভিস কাপ জয়েও নেতৃত্ব দেন তিনি। প্রথম গ্র্যান্ডস্ল্যাম জেতেন ২০১২ সালের ইউএস ওপেনে। এরপর ২০১৩ ও ২০১৬ সালের উইম্বলডনের ট্রফি উঁচিয়ে ধরেন তিনি।
পরবর্তীতে অসংখ্যবার চোট আঘাত হেনেছে মারের শরীরে। যে কারণে বারবার কোর্টের বাইরে ছিটকে পড়েছেন। ঘুরে দাঁড়িয়ে ফিরেছেন কোর্টে; কিন্তু পুরোনো ছন্দ আর ফিরে পাননি তিনি। ২০১২ সালে ইউএস ওপেন জয়ে শুরু। এরপর ২০১৩ সালে উইম্বলডন জিতে ঘুচিয়েছেন ব্রিটিশদের ৭৭ বছরের অপেক্ষা। ২০১৬ সালে আবারও জেতেন উইম্বলডন। ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকে রজার ফেদেরারকে হারিয়ে সোনা জেতেন।