আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
অর্থমন্ত্রী লিন্ডনারকে বরখাস্ত করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস। এর ফলে লিবারেল ফ্রি ডেমোক্র্যাট পার্টি (এফডিপি) এফডিপি সব মন্ত্রীকে তুলে নিয়েছে। এর ফলে তিন দলের এই জোটে ভাঙন দেখা দিয়েছে। শলৎস ছিলেন এই জোটের নেতা।
এফডিপি-র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পর গ্রিন পার্টিকে নিয়ে সংখ্যালঘু সরকার চালাবেন শলৎস। বাজেট পাস করার জন্য তিনি সিডিইউ-র সমর্থন চেয়েছেন। রক্ষণশীল নেতা মেরজ এই বিষয়ে দলের সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন।
এফডিপি নেতা লিন্ডনারকে বহিষ্কারের পর সাংবাদিক সম্মেলন শলৎস বলেন, তিনি (লিন্ডনার) খুবই ক্ষুদ্র রাজনৈতিক নীতি নিয়ে চলছিলেন। এটা একেবারেই মেনে নেয়া যায় না। অর্থমন্ত্রী আমাদের কোনো প্রস্তাব রূপায়ণ করতে রাজি ছিলেন না। আমি দেশকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছি।’
শলৎস বলেন, ২০২৫ সালের বাজেটে এক হাজার কোটি ইউরোর ঘাটতির মোকাবিলা করার জন্য একটা পরিকল্পনা অর্থমন্ত্রীকে দিয়েছিলেন। এই পরিকল্পনা নিয়ে মতবিরোধের জেরেই জোটে ভাঙন ধরলো।
গত সপ্তাহে লিন্ডনার একটি নথি প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি আর্থিক প্রস্তাবের একটা তালিকা দেন, যা অন্য দলগুলো মানেনি। তার মধ্যে ছিল, জবকল্যাণে খরচ ছাঁটাই করা, পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে খরচ ছাঁটাই করা, কোম্পানিগুলির কর কম করার প্রস্তাব কার্যকর করা নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতৈক্য হয়নি।
শলৎসের বক্তব্য, এফডিপি নেতা তার নতুন প্রস্তাব কার্যকর করার কোনো ইচ্ছেপ্রকাশ করেননি। অথচ, ওই প্রস্তাবগুলো ছিল দেশের জন্য জরুরি ও ভালো। দেশের ক্ষতি হোক এটা তিনি চাননি।
জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, তিনি প্রস্তাব দিয়েছিলেন, বিদ্যুতের দাম কমানোর জন্য কোম্পানিগুলোকে সাহায্য করার জন্য, গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানিতে কর্মরতদের চাকরি বাঁচাতে বাড়তি ঋণ নেওয়া হোক। তিনি বিনিয়োগ করার জন্য কোম্পানিগুলোকে কর ছাড়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ইউক্রেনকে বাড়তি সাহায্য করার কথা বলেছিলেন।
শলৎস জানান, তিনি গ্রিন পার্টির সঙ্গে মিলে সংখ্যালঘু সরকার চালাবেন। আস্থাভোট নেবেন ১৫ জানুয়ারি। যদি আস্থাভোটে হেরে যান সেক্ষেত্রে মার্চে নির্বাচন হবে। জামান চ্যান্সেলর জানান, তিনি সিডিইউ ও সিএসইউ-এর সঙ্গে কথা বলবেন।
এএফডির প্রতিক্রিয়া
বিরোধী অতি-ডানপন্থি এএফডি জানিয়েছে, তারা শলৎসের জোট সরকারে ভাঙনকে স্বাগত জানাচ্ছে। অনেক আগেই এটা হওয়া উচিত ছিল। তাদের হাত থেকে জার্মানির মুক্তি পাওয়া দরকার ছিল।
এএফডি নেতাদের অভিযোগ, এই জোট দেশকে আর্থিক সংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছে। বর্তমান সংকট থেকে দেশকে বের করে আনার জন্য নতুন রাজনৈতিক উদ্যোগ দরকার।
বামপন্থি দলগুলোর বক্তব্য
জার্মানির সমাজবাদী বামপন্থি দলগুলো তাদের নির্বাচনী প্রচার শুরু করে দিয়েছে। বামপন্থি দলগুলো একযোগে ঘোষণা করেছে, তাদের অনুকূলে হাওয়া আছে। শলৎসের জোট দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে এবং অস্থিরতা তৈরি করেছে। তারা তিন বছর ধরে ক্ষমতায় থেকেও দেশ ও মানুষকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ।