Dhaka বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অর্ণবের স্ত্রী সুনিধিকে খুনের হুমকি

  • বিনোদন ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৬:৫২:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ২২১ জন দেখেছেন

বিনোদন ডেস্ক : 

বাংলাদেশের জনপ্রিয় গায়ক সায়ান চৌধুরী অর্ণবের স্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, হুমকি দিয়ে তার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে অপরাধীরা। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে এ ঘটনা ঘটেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (সিবিআই) পরিচয় দিয়ে সাইবার অপরাধীরা পাঁচ লাখ টাকা না দিলে সুনিধি নায়েক ও তার বাবাকে হত্যার হুমকি দেয়। এমনকি তার ছবি ডার্ক ওয়েবে ছড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেয়।

জানা গেছে, বিশ্বভারতীর সঙ্গীত ভবনের সাবেক শিক্ষার্থী সুনিধি কর্মসূত্রে শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লীর একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। গত বুধবার বাড়িতে একাই ছিলেন তিনি। সেদিন অপরিচিত কয়েকজন ব্যক্তিকে বাড়ির বাইরে ঘোরাফেরা করতে দেখেন তিনি। পরে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি হায়দরাবাদের সিবিআই পরিচয় দিয়ে তার ফোনে কল করে। সুনিধির বাড়ির একশো মিটারের মধ্যে শান্তিনিকেতন থানা। ঘটনাটি দ্রুত জানাজানি হওয়ায় শান্তিনিকেতনে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে শান্তিনিকেতন থানা।

সুনিধি বলেন, বুধবার তার কাছে ফোন আসে। বলা হয়, তিনি নাকি নরেশ গোয়েল নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে আর্থিক তছরুপের ঘটনায় জড়িত। এমনকি তার নামে নাকি একটি ক্রেডিট কার্ডও তোলা হয়েছে। এর পরেই সুনিধিকে বলা হয় তাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কথোপকথন এভাবে শুরু হলেও পরে তাকে ও তার বাবাকে খুনের হুমকি দিতে থাকেন অভিযুক্তরা। খুনের হুমকি পেয়ে বাধ্য হয়ে বৃহস্পতিবার ৫ লাখ রুপি পাঠিয়ে দেন তিনি।

ফোন পাওয়ার পরে সন্দেহ হয়নি?- এমন প্রশ্নে এ কণ্ঠশিল্পী বলেন, ওরা আমার ও বাবার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সমস্ত তথ্য জানে। একটা গল্প বানিয়ে বলে, আর্থিক তছরূপের মামলায় আমি নাকি ধরা পড়েছি! খুনের হুমকিও দেওয়া হয় আমাদের। বাড়ির বাইরে এক অজ্ঞাত পরিচিতকে ঘোরাঘুরি করতে দেখেছি। ওরা ৬-৭ মাস ধরে নজরদারি চালাচ্ছিল আমার ওপরে। এ-ও বলেছে, আমি যদি মুখ খুলি তা হলে নরেশ গোয়েল আমাকে মেরে ফেলবে। হিন্দি এবং ইংরেজিতে কথা বলছিল ওরা।

সুনিধি বলেন, প্রথমে আমি ভেবেছিলাম সত্যিই হয়তো হায়দরাবাদের সিবিআই ফোন করেছে। পরে বুঝতে পারি এরা জালিয়াত। তবে এখন প্রশাসন সাহায্য করছে এবং ঘটনার তদন্ত চলছে।

তিনি অভিযোগ করেন, প্রতারকেরা তাকে জানান যে- তার ফোন হ্যাক করা হয়েছে। সুনিধি বলেন, আমি কাউকে মেসেজ বা ফোন করলেও নাকি তারা জানতে পারছেন। ওরা এ-ও বলেন যে আমার ছবি ডার্কওয়েবে ছেড়ে দেবে। আমাকে মানসিকভাবে ভেঙে দেওয়াই ওদের উদ্দেশ্য ছিল। আমি গত তিন দিন ধরে খুব ভয়ে ছিলাম। এখন তদন্ত চলছে। আমি টাকা ফেরত চাই। এ ছাড়াও অপরাধীদের শাস্তি চাই। তার সঙ্গে নিরাপত্তাও চাই।

সুনিধি নায়েক রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী হিসেবে পরিচিত। শেকড়ের টানে প্রায়ই তিনি শান্তিনিকেতনে বেড়াতে যান। সে কারণে পূর্বপল্লীতে একটি বাড়িও ভাড়া নিয়েছেন। ঘটনার দিন অপরিচিত নম্বর থেকে ফোনে হত্যার হুমকিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তিনি। পরে অপরাধীদের কথা মতো নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা পাঠিয়ে দেন। রাতে স্থানীয় বন্ধুদের মাধ্যমে থানায় অভিযোগ করেন সুনিধি। ঘটনার পর শান্তিনিকেতনে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সুনিধি।

আসামে জন্ম নেওয়া সুনিধির সঙ্গে বিশ্বভারতীতে পরিচয় অর্ণবের। সুনিধির কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত শুনে মুগ্ধ হয়েছিলেন অর্ণব। সেই পরিচয় থেকে প্রেম ও ২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে বিয়ে করেন তারা। প্রায়ই বাংলাদেশে আসেন সুনিধি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

অর্ণবের স্ত্রী সুনিধিকে খুনের হুমকি

প্রকাশের সময় : ০৬:৫২:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিনোদন ডেস্ক : 

বাংলাদেশের জনপ্রিয় গায়ক সায়ান চৌধুরী অর্ণবের স্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, হুমকি দিয়ে তার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে অপরাধীরা। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে এ ঘটনা ঘটেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (সিবিআই) পরিচয় দিয়ে সাইবার অপরাধীরা পাঁচ লাখ টাকা না দিলে সুনিধি নায়েক ও তার বাবাকে হত্যার হুমকি দেয়। এমনকি তার ছবি ডার্ক ওয়েবে ছড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেয়।

জানা গেছে, বিশ্বভারতীর সঙ্গীত ভবনের সাবেক শিক্ষার্থী সুনিধি কর্মসূত্রে শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লীর একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। গত বুধবার বাড়িতে একাই ছিলেন তিনি। সেদিন অপরিচিত কয়েকজন ব্যক্তিকে বাড়ির বাইরে ঘোরাফেরা করতে দেখেন তিনি। পরে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি হায়দরাবাদের সিবিআই পরিচয় দিয়ে তার ফোনে কল করে। সুনিধির বাড়ির একশো মিটারের মধ্যে শান্তিনিকেতন থানা। ঘটনাটি দ্রুত জানাজানি হওয়ায় শান্তিনিকেতনে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে শান্তিনিকেতন থানা।

সুনিধি বলেন, বুধবার তার কাছে ফোন আসে। বলা হয়, তিনি নাকি নরেশ গোয়েল নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে আর্থিক তছরুপের ঘটনায় জড়িত। এমনকি তার নামে নাকি একটি ক্রেডিট কার্ডও তোলা হয়েছে। এর পরেই সুনিধিকে বলা হয় তাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কথোপকথন এভাবে শুরু হলেও পরে তাকে ও তার বাবাকে খুনের হুমকি দিতে থাকেন অভিযুক্তরা। খুনের হুমকি পেয়ে বাধ্য হয়ে বৃহস্পতিবার ৫ লাখ রুপি পাঠিয়ে দেন তিনি।

ফোন পাওয়ার পরে সন্দেহ হয়নি?- এমন প্রশ্নে এ কণ্ঠশিল্পী বলেন, ওরা আমার ও বাবার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সমস্ত তথ্য জানে। একটা গল্প বানিয়ে বলে, আর্থিক তছরূপের মামলায় আমি নাকি ধরা পড়েছি! খুনের হুমকিও দেওয়া হয় আমাদের। বাড়ির বাইরে এক অজ্ঞাত পরিচিতকে ঘোরাঘুরি করতে দেখেছি। ওরা ৬-৭ মাস ধরে নজরদারি চালাচ্ছিল আমার ওপরে। এ-ও বলেছে, আমি যদি মুখ খুলি তা হলে নরেশ গোয়েল আমাকে মেরে ফেলবে। হিন্দি এবং ইংরেজিতে কথা বলছিল ওরা।

সুনিধি বলেন, প্রথমে আমি ভেবেছিলাম সত্যিই হয়তো হায়দরাবাদের সিবিআই ফোন করেছে। পরে বুঝতে পারি এরা জালিয়াত। তবে এখন প্রশাসন সাহায্য করছে এবং ঘটনার তদন্ত চলছে।

তিনি অভিযোগ করেন, প্রতারকেরা তাকে জানান যে- তার ফোন হ্যাক করা হয়েছে। সুনিধি বলেন, আমি কাউকে মেসেজ বা ফোন করলেও নাকি তারা জানতে পারছেন। ওরা এ-ও বলেন যে আমার ছবি ডার্কওয়েবে ছেড়ে দেবে। আমাকে মানসিকভাবে ভেঙে দেওয়াই ওদের উদ্দেশ্য ছিল। আমি গত তিন দিন ধরে খুব ভয়ে ছিলাম। এখন তদন্ত চলছে। আমি টাকা ফেরত চাই। এ ছাড়াও অপরাধীদের শাস্তি চাই। তার সঙ্গে নিরাপত্তাও চাই।

সুনিধি নায়েক রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী হিসেবে পরিচিত। শেকড়ের টানে প্রায়ই তিনি শান্তিনিকেতনে বেড়াতে যান। সে কারণে পূর্বপল্লীতে একটি বাড়িও ভাড়া নিয়েছেন। ঘটনার দিন অপরিচিত নম্বর থেকে ফোনে হত্যার হুমকিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তিনি। পরে অপরাধীদের কথা মতো নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা পাঠিয়ে দেন। রাতে স্থানীয় বন্ধুদের মাধ্যমে থানায় অভিযোগ করেন সুনিধি। ঘটনার পর শান্তিনিকেতনে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সুনিধি।

আসামে জন্ম নেওয়া সুনিধির সঙ্গে বিশ্বভারতীতে পরিচয় অর্ণবের। সুনিধির কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত শুনে মুগ্ধ হয়েছিলেন অর্ণব। সেই পরিচয় থেকে প্রেম ও ২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে বিয়ে করেন তারা। প্রায়ই বাংলাদেশে আসেন সুনিধি।