Dhaka সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সংস্কারের নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও তা পুরোপুরি কাজে আসেনি : দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সংস্কারের নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও তা পুরোপুরি কাজে আসেনি বলে মন্তব্য করেছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে সিপিডির উদ্যোগে সংস্কার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে প্লাটফর্ম ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচের’ আনুষ্ঠানিক সূচনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, অভ্যুত্থানের পর সংস্কার নিয়ে যে উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা তৈরি হয়েছিল তা এখন অনেকটাই থেমে গেছে। এর পেছনে বড় ধরনের স্বার্থের সংঘাত আছে কি না, সেটিও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। অন্তর্বর্তী সরকার কি পথ হারিয়েছে? এ প্রশ্ন আমাদের মধ্যে বড় করে আসছে।

আগামী নির্বাচন ও বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সামনে রেখে দেশে ঝড় বইছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ঝড়ের মধ্যেও সম্পদ রক্ষা করতে হবে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর সংস্কার নিয়ে মানুষের যে প্রত্যাশা জেগেছিল, তা যথাযথ গুরুত্ব পাচ্ছে কি না, তা নজরে রাখবে বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচ।

তিনি আরো বলেন, সরকারের সাথে যে উৎসাহ নিয়ে নাগরিক সমাজ কাজ শুরু করেছিল, তাতে এখন ভাটা পড়েছে। রিফর্ম ওয়াচের সংলাপে তিনি বলেন, পিছিয়ে পড়া মানুষের কথা তেমন বলা হচ্ছে না।

এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী সময়ে সবার প্রত্যাশা ছিল বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এক বছরে সেই সংস্কার কার্যক্রম কত দূর এগোল? অন্তর্বর্তী সরকার তার অবশিষ্ট সময়ে সংস্কারকে আর কতটুকু এগিয়ে নিতে পারবে? রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে সংস্কারের আকাঙ্ক্ষার কতটুকুই-বা প্রতিফলিত হবে? এ বিষয়গুলো দেখার জন্য নাগরিক প্ল্যাটফর্ম থেকে বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচ উদ্যোগ শুরু করছে, যার মাধ্যমে সংস্কার কার্যক্রমে পিছিয়ে পড়া মানুষের কণ্ঠস্বর বা অংশগ্রহণ কতটা থাকে, সেটা দেখার চেষ্টা করা হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, সংস্কারের আলোচনা দীর্ঘদিন ধরেই আছে। কিন্তু যাঁরা সংস্কার করবেন, তাঁরা কতটা অনুধাবন করছেন? এখানে রাষ্ট্র ও সরকারের সক্ষমতা ও ইচ্ছার বড় বিষয় জড়িত। তা ছাড়া আমলা, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক এলিটদের সংস্কারবিরোধিতার বিষয় রয়েছে। তাই সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো কতটা অঙ্গীকারবদ্ধ, সেটাও দেখতে হবে।

আলোচনায় সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আগের অনেক সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়নি। এবার কি হবে, সেটার জবাব জরুরি। তবে এবার আমরা সাফল্যের বিষয়ে আশাবাদী। তাই সবাইকে এ কার্যক্রমে যুক্ত করেছি।’

সেমিনারে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের বিভিন্ন প্রতিনিধি সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে তাঁদের মতামত তুলে ধরেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সরকার যখন চাইবে তখনই নির্বাচন, ইসি দায় নেবে না : সিইসি

অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সংস্কারের নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও তা পুরোপুরি কাজে আসেনি : দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

প্রকাশের সময় : ০৩:৩৬:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সংস্কারের নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও তা পুরোপুরি কাজে আসেনি বলে মন্তব্য করেছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে সিপিডির উদ্যোগে সংস্কার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে প্লাটফর্ম ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচের’ আনুষ্ঠানিক সূচনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, অভ্যুত্থানের পর সংস্কার নিয়ে যে উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা তৈরি হয়েছিল তা এখন অনেকটাই থেমে গেছে। এর পেছনে বড় ধরনের স্বার্থের সংঘাত আছে কি না, সেটিও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। অন্তর্বর্তী সরকার কি পথ হারিয়েছে? এ প্রশ্ন আমাদের মধ্যে বড় করে আসছে।

আগামী নির্বাচন ও বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সামনে রেখে দেশে ঝড় বইছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ঝড়ের মধ্যেও সম্পদ রক্ষা করতে হবে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর সংস্কার নিয়ে মানুষের যে প্রত্যাশা জেগেছিল, তা যথাযথ গুরুত্ব পাচ্ছে কি না, তা নজরে রাখবে বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচ।

তিনি আরো বলেন, সরকারের সাথে যে উৎসাহ নিয়ে নাগরিক সমাজ কাজ শুরু করেছিল, তাতে এখন ভাটা পড়েছে। রিফর্ম ওয়াচের সংলাপে তিনি বলেন, পিছিয়ে পড়া মানুষের কথা তেমন বলা হচ্ছে না।

এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী সময়ে সবার প্রত্যাশা ছিল বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এক বছরে সেই সংস্কার কার্যক্রম কত দূর এগোল? অন্তর্বর্তী সরকার তার অবশিষ্ট সময়ে সংস্কারকে আর কতটুকু এগিয়ে নিতে পারবে? রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে সংস্কারের আকাঙ্ক্ষার কতটুকুই-বা প্রতিফলিত হবে? এ বিষয়গুলো দেখার জন্য নাগরিক প্ল্যাটফর্ম থেকে বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচ উদ্যোগ শুরু করছে, যার মাধ্যমে সংস্কার কার্যক্রমে পিছিয়ে পড়া মানুষের কণ্ঠস্বর বা অংশগ্রহণ কতটা থাকে, সেটা দেখার চেষ্টা করা হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, সংস্কারের আলোচনা দীর্ঘদিন ধরেই আছে। কিন্তু যাঁরা সংস্কার করবেন, তাঁরা কতটা অনুধাবন করছেন? এখানে রাষ্ট্র ও সরকারের সক্ষমতা ও ইচ্ছার বড় বিষয় জড়িত। তা ছাড়া আমলা, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক এলিটদের সংস্কারবিরোধিতার বিষয় রয়েছে। তাই সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো কতটা অঙ্গীকারবদ্ধ, সেটাও দেখতে হবে।

আলোচনায় সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আগের অনেক সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়নি। এবার কি হবে, সেটার জবাব জরুরি। তবে এবার আমরা সাফল্যের বিষয়ে আশাবাদী। তাই সবাইকে এ কার্যক্রমে যুক্ত করেছি।’

সেমিনারে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের বিভিন্ন প্রতিনিধি সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে তাঁদের মতামত তুলে ধরেন।