Dhaka সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অভ্যুত্থানের পর সুন্দর সুযোগ এসেছে, কিন্তু রাজনীতিতে অনৈক্যের সুর : মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে রাজনীতিতে ঐক্য প্রতিষ্ঠার বড় সুযোগ এসেছে। তারপরও দেশের রাজনীতিতে ঐক্যের সম্ভাবনা থাকলেও অনৈক্যের সুর লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারর্সে ‘ম্যাগাজিন বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা’র আয়োজনে এসএসসি জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনীতির মধ্যে যদি সততা না থাকে, তাহলে রাজনীতি কখনোই সুন্দর হবে না। ক্ষমতায় এসে সম্পদ তৈরির মানসিকতা থাকলে মানুষের ঘৃণা ছাড়া কিছুই অর্জন হয় না।

তিনি বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত নিম্ন মানের। এরজন্য দায়ী রাজনীতিবিদ এবং আমলাতন্ত্র।

একটা ক্রান্তিকাল চলছে, উল্লেখ করে তিনি বলেন, চারদিকে অনৈক্যের সুর দেখে অনেকেই হতাশ। রাজনীতিবিদরাই দেশের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করে, কেউ জাতি গঠনে কাজ করে, কেউ নিজের স্বার্থে ব্যবহার করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমানে এত বড় একটা অভ্যুত্থানের পরে একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে যে, দেশটাকে আবার সুন্দর করে গড়ে তুলবার। কিন্তু আমরা যখন চারদিকে দেখছি যে, আমাদের রাজনীতিবিদরা ঐক্য হারিয়ে ফেলছেন, অনেককে চলে যাচ্ছেন। চারদিকে দেখছি, যে একটা অনৈক্যের সুর। তখন আমরা অনেকেই হতাশ হচ্ছি।

কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা পড়ে শুনিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভবিষ্যৎ তোমাকে ডাকছে। আজকে তোমরা যারা এখন যৌবনে পা দিচ্ছা, নতুন পৃথিবীতে পা দিচ্ছে সেই পৃথিবী তোমাদের ডাকছে। যে কথাটা ডক্টর সুবর খান বলেছেন যে, নিজেকে তৈরি করতে হবে পৃথিবীর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে। পৃথিবী প্রতিযোগিতার পৃথিবী হয়ে গেছে তুমি টিকতে না পারো তুমি নিক্ষিপ্ত হয়ে যাবে। সেই জায়গায় তোমাকে পৌঁছাতে হবে। তারপরে তোমাকে তৈরি হতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য যে, আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা সেইরকম তো নেই বরঞ্চ অত্যন্ত নিম্নমানের। এর জন্য দায়ী রাজনীতিবিদরাই, এর জন্য দায়ী আমরাই, এর জন্য দায়ী আমাদের আমলাতন্ত্র।

তিনি বলেন, এখানে শিক্ষার উপরে খুব কম গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা বিএ পাস করি, এমএ পাস করি চাঁদপুরের গ্রাম থেকে অথবা আমার ঠাকুরগাঁওয়ের গ্রাম থেকেৃ সে ঘুরে বেড়ায় কোন কাজ পায় না কারণ বিএ পাস এমএ পাসকে চাকরি দিতে পারেন না। কিন্তু সে যদি বিএসসি পাস করতো অথবা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে একটা ডিপ্লোমা নিতে পারতো ইলেকট্রিসিটির উপরে অথবা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উপরে অথবা অন্যান্য বিষয়ের উপরে তাহলে কিন্তু তার চাকরি কেউ আটকাতে পারতো না। এই যে নীতির ব্যাপারটা এখানেই রাজনীতিবিদদের ব্যর্থতা।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের স্যাররা আন্দোলন করছেন, রাস্তায় আছেন শিক্ষকদের বেতনের জন্য। এটা তো অনেক ভালো হতে পারতো যদি আমরা পুরোপুরি এটাকে পরিবর্তন করে শুধুমাত্র অতি মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চ শিক্ষা এবং আমাদের সাধারণ বেশিরভাগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য আমরা যদি ভোকেশনাল এন্ড টেকনিক্যাল ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করতে পারতাম তাহলে আমাদের সবচেয়ে ভালো লাভবান হতে পারতাম।

আজকে কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা নাই, তার কোন ইনস্টিটিউট নাই। ভোকেশনাল সেন্টারগুলো নাই। আমরা এগুলো তৈরি করি না। আমরা বিএ পাস, এমএফ তৈরি করছি। তাহলে এই তরুণরা বিকশিত হবে কিভাবে?

মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য কারিগরি শিক্ষার ওপরে জোর দিতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপির প্রশিক্ষন বিষয়ক সম্পাদক রাশেদা বেগম হীরার সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মোবারক হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান মো. সবুর খান, বিএনপির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমার প্রধান সম্পাদক হারুন অর রশিদ, শিক্ষাবিদ এম এ সাজ্জাদ, জমিরুল আকতার, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের আহ্বায়ক কবীর হোসেন, সদস্য সচিব কাজী শওকত হোসেন, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের ঢাকা মহানগর উত্তরের অধ্যাপক সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, মুন্সিগঞ্জ বিএনপির সদস্য মোশাররফ হোসেন পুস্তিসহ কৃতি শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আগামী সংসদে কারা যাবে, তার নির্ধারকের ভূমিকায় থাকবে এনসিপি : সারজিস আলম

অভ্যুত্থানের পর সুন্দর সুযোগ এসেছে, কিন্তু রাজনীতিতে অনৈক্যের সুর : মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৪:২৬:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে রাজনীতিতে ঐক্য প্রতিষ্ঠার বড় সুযোগ এসেছে। তারপরও দেশের রাজনীতিতে ঐক্যের সম্ভাবনা থাকলেও অনৈক্যের সুর লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারর্সে ‘ম্যাগাজিন বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা’র আয়োজনে এসএসসি জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনীতির মধ্যে যদি সততা না থাকে, তাহলে রাজনীতি কখনোই সুন্দর হবে না। ক্ষমতায় এসে সম্পদ তৈরির মানসিকতা থাকলে মানুষের ঘৃণা ছাড়া কিছুই অর্জন হয় না।

তিনি বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত নিম্ন মানের। এরজন্য দায়ী রাজনীতিবিদ এবং আমলাতন্ত্র।

একটা ক্রান্তিকাল চলছে, উল্লেখ করে তিনি বলেন, চারদিকে অনৈক্যের সুর দেখে অনেকেই হতাশ। রাজনীতিবিদরাই দেশের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করে, কেউ জাতি গঠনে কাজ করে, কেউ নিজের স্বার্থে ব্যবহার করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমানে এত বড় একটা অভ্যুত্থানের পরে একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে যে, দেশটাকে আবার সুন্দর করে গড়ে তুলবার। কিন্তু আমরা যখন চারদিকে দেখছি যে, আমাদের রাজনীতিবিদরা ঐক্য হারিয়ে ফেলছেন, অনেককে চলে যাচ্ছেন। চারদিকে দেখছি, যে একটা অনৈক্যের সুর। তখন আমরা অনেকেই হতাশ হচ্ছি।

কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা পড়ে শুনিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভবিষ্যৎ তোমাকে ডাকছে। আজকে তোমরা যারা এখন যৌবনে পা দিচ্ছা, নতুন পৃথিবীতে পা দিচ্ছে সেই পৃথিবী তোমাদের ডাকছে। যে কথাটা ডক্টর সুবর খান বলেছেন যে, নিজেকে তৈরি করতে হবে পৃথিবীর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে। পৃথিবী প্রতিযোগিতার পৃথিবী হয়ে গেছে তুমি টিকতে না পারো তুমি নিক্ষিপ্ত হয়ে যাবে। সেই জায়গায় তোমাকে পৌঁছাতে হবে। তারপরে তোমাকে তৈরি হতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য যে, আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা সেইরকম তো নেই বরঞ্চ অত্যন্ত নিম্নমানের। এর জন্য দায়ী রাজনীতিবিদরাই, এর জন্য দায়ী আমরাই, এর জন্য দায়ী আমাদের আমলাতন্ত্র।

তিনি বলেন, এখানে শিক্ষার উপরে খুব কম গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা বিএ পাস করি, এমএ পাস করি চাঁদপুরের গ্রাম থেকে অথবা আমার ঠাকুরগাঁওয়ের গ্রাম থেকেৃ সে ঘুরে বেড়ায় কোন কাজ পায় না কারণ বিএ পাস এমএ পাসকে চাকরি দিতে পারেন না। কিন্তু সে যদি বিএসসি পাস করতো অথবা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে একটা ডিপ্লোমা নিতে পারতো ইলেকট্রিসিটির উপরে অথবা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উপরে অথবা অন্যান্য বিষয়ের উপরে তাহলে কিন্তু তার চাকরি কেউ আটকাতে পারতো না। এই যে নীতির ব্যাপারটা এখানেই রাজনীতিবিদদের ব্যর্থতা।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের স্যাররা আন্দোলন করছেন, রাস্তায় আছেন শিক্ষকদের বেতনের জন্য। এটা তো অনেক ভালো হতে পারতো যদি আমরা পুরোপুরি এটাকে পরিবর্তন করে শুধুমাত্র অতি মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চ শিক্ষা এবং আমাদের সাধারণ বেশিরভাগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য আমরা যদি ভোকেশনাল এন্ড টেকনিক্যাল ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করতে পারতাম তাহলে আমাদের সবচেয়ে ভালো লাভবান হতে পারতাম।

আজকে কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা নাই, তার কোন ইনস্টিটিউট নাই। ভোকেশনাল সেন্টারগুলো নাই। আমরা এগুলো তৈরি করি না। আমরা বিএ পাস, এমএফ তৈরি করছি। তাহলে এই তরুণরা বিকশিত হবে কিভাবে?

মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য কারিগরি শিক্ষার ওপরে জোর দিতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপির প্রশিক্ষন বিষয়ক সম্পাদক রাশেদা বেগম হীরার সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মোবারক হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান মো. সবুর খান, বিএনপির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমার প্রধান সম্পাদক হারুন অর রশিদ, শিক্ষাবিদ এম এ সাজ্জাদ, জমিরুল আকতার, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের আহ্বায়ক কবীর হোসেন, সদস্য সচিব কাজী শওকত হোসেন, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের ঢাকা মহানগর উত্তরের অধ্যাপক সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, মুন্সিগঞ্জ বিএনপির সদস্য মোশাররফ হোসেন পুস্তিসহ কৃতি শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন।