স্পোর্টস ডেস্ক :
বার্সেলোনার হয়ে খেলার স্বপ্ন অনেকেরই থাকে। বিশেষ করে লা মেসিয়া একাডেমিতে বেড়ে ওঠা তরুণদের তো অবশ্যই। মার্ক গিউইয়েরও ছিল। কিন্তু অভিষেকে বলে প্রথম স্পর্শেই গোল করবেন, আর সেই গোলে দল জিতবে এতটা দুঃসাহসী স্বপ্ন তাঁর কখনোই ছিল না।
রোবাবর (২২ অক্টোবর) বার্সেলোনার অলিম্পিক স্টেডিয়ামে অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে এটিই ঘটেছে গিউইয়ের সঙ্গে। লা লিগা অভিষেকের ৩৩ সেকেন্ডেই বার্সেলোনাকে গোল এনে দিয়েছেন ১৭ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার। ম্যাচের ৮০ মিনিটে দেওয়া গিউইয়ের গোলে বার্সা ১-০ ব্যবধানে জিতে মাঠ ছেড়েছে।
এটি লিগে বার্সেলোনার সপ্তম জয়। ১০ ম্যাচ শেষে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে বার্সা, ১ পয়েন্ট বেশি নিয়ে শীর্ষ দুটি স্থানে রিয়াল মাদ্রিদ ও জিরোনা।
গিউইয়ের সিনিয়র অভিষেক অনেকটা হুট করেই। রবার্ট লেভানডোভস্কি ও ফ্রাঙ্কি ডি ইয়ংয়ের মতো সিনিয়র খেলোয়াড় ইনজুরিতে পড়ায় ভাগ্য খুলে যায় গিউইয়ের। তবে মাঠে নামার জন্য দ্বিতীয়ার্ধের শেষ ভাগ পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হয় তাকে।
ঘরের মাঠে বিলবাওয়ের বিপক্ষে ম্যাচে চোটের কারণে ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং, পেদ্রি ও রবার্ট লেভানডভস্কিকে পায়নি বার্সেলোনা। এরপরও অবশ্য জোয়াও ফেলিক্স, ফেরান তোরেস, ফারমিন লোপেজদের নিয়ে গড়া আক্রমণভাগ বিলবাও রক্ষণে চাপ তৈরি করতে পেরেছে। ম্যাচের ১০ মিনিটে ফেলিক্সের একটি শট বারে লেগে ফিরে আসে। দুবার তাঁকে গোলবঞ্চিত করেন বিলবাও গোলকিপার উনাই সিমোন।
ম্যাচের প্রথমার্ধে বেশ কয়েকবার প্রতিপক্ষের রক্ষণে হানা দিয়েও ব্যর্থ হয় বার্সা। এর মধ্যে হুয়াও ফেলিক্সের দারুণ একটি শট ক্রসবারে লাগে। ম্যাচের এক ঘণ্টা পূর্ণ হওয়ার আগে ফেলিক্সের আরও এক শট ঠেকান বিলবাওয়ের গোলরক্ষক উনাই সিমোন।
লোপেজের বদলি হয়ে নামার আধা মিনিট পরই ফেলিক্স থেকে পাওয়া বল ডান পায়ের শটে জালে জড়িয়ে দেন গিউই। ১৭ বছর ২৯১ দিন বয়সী গিউই চলতি শতাব্দীতে লা লিগায় বার্সেলোনার সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা।
ম্যাচ শেষে লা মেসিয়া একাডেমিতে বেড়ে ওঠা এই তরুণ ইস্পোর্টস ৩-কে বলেন, আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না। মনে হচ্ছে শ্বাস নিতে পারছি না! এটা অকল্পনীয়। সারাটা জীবন সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি. . আমি আজ ঘুমাতে পারব না।
বার্সেলোনার হয়ে অভিষেকে গোল করবেন, এমন স্বপ্ন সব সময়ই দেখে এসেছেন গিউই, এমন কিছুর স্বপ্ন যে আমি কতবার দেখেছি। প্রায় প্রতি রাতেই। (গোলের মুহূর্ত) হুট করেই যেন ঘটে গেল। আমি ভাবারও সময় পাইনি। আমার মন বলছিল গোল হয়ে যেতে পারে। ফেলিক্স যখন বলটা নিয়ন্ত্রণে নিলেন, দেখলাম ওদের রক্ষণের পেছনে কিছুটা ফাঁকা আছে। উনি আমাকে বলটা দিলেন, উনাই সিমনের বিপক্ষে আমি গোল করে ফেললাম। এত বড় মাপের একজন গোলকিপারের বিপক্ষে গোল করতে পারাটা আমার জন্য সম্মানের।
ম্যাচ শেষে বার্সেলোনা কোচ জাভির অভিনন্দন পেয়েছেন গিউই। পেয়েছেন প্রশংসাবাণীও, আমি ওকে বলেছিলাম তুমি একটা সুযোগ পাবে। সে একটা সুযোগই পেয়েছে, আর সেটাই কাজে লাগিয়েছে। আমার মনে হয়েছে সে এই পর্যায়ে খেলার জন্য প্রস্তুত। আমি মার্কের জন্য খুবই খুশি। সে পরিশ্রমী। বলে প্রথম স্পর্শেই গোল করাটা অসাধারণ ব্যাপার। আমি ওকে অভিনন্দন জানিয়েছ। ওর এখন কেমন অনুভূতি হচ্ছে বুঝতেই পারছেন। খুব সম্ভবত এটা ওর জীবনের সেরা দিন।
এ সপ্তাহে বার্সেলোনার পরের ম্যাচ চ্যাম্পিয়নস লিগে শাখতার দোনেৎস্কের বিপক্ষে। আগামী শনিবার রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে লিগের প্রথম এল ক্লাসিকো।