আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
চাকরি থেকে অবসর নিতে যাচ্ছেন এশিয়ার প্রথম নারী ট্রেনচালক সুরেখা যাদব (৬০)। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ভারতীয় রেলে তার কর্মজীবনের শেষ দিন।
মালগাড়ি থেকে শুরু করে হাই স্পিড বন্দে ভারত ট্রেনও চালিয়েছেন তিনি। মহারাষ্ট্রের কৃষক পরিবারের মেয়ে সুরেখা যখন ১৯৮৯ সালে ট্রেন চালানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন, তখন তার উপর ভরসা রাখতে পারেননি অনেকেই।
অনেকেই তখন চোখ কপালে তুলেছিলেন। কিন্তু স্বপ্ন দেখা এবং সেই স্বপ্নের উপর ভরসা রাখা ছাড়েননি সুরেখা।
১৯৮৯ সালে সহকারী চালক হিসেবে নিজের কেরিয়ার শুরু করেছিলেন তিনি। ১৯৯৬ সালে তিনি মালবাহী ট্রেনের চালক হয়েছিলেন। এর পরে ২০০০ সালে তিনি হয়েছিলেন মোটরওম্যান।
সেন্ট্রাল রেলের মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা স্বপনীল নীলা বলেন, ‘সুরেখা যাদব শুধু নিজেই রেকর্ড তৈরি করেননি। তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মহিলা, যারা রেলের চালক হিসেবে চাকরি করতে চান, তাদের উৎসাহ জুগিয়েছেন।’
সুরেখা যাদব জন্ম মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলায় এক কৃষক পরিবারে। তিনি শৈশব থেকেই পড়াশোনায় ভালো ছিলেন। সরকারি পলিটেকনিক কলেজ থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।
এর পর তার রেলে যোগ দেওয়া। ভারতের রেলওয়েতে বর্তমানে ১৫০০ নারী ট্রেন চালক রয়েছেন। তাদের পথ দেখিয়েছিলেন সুরেখাই।
অবসরের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, রেল আমাকে এই সুযোগ করে দিয়েছে। আমার কর্মজীবনের আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। আমার মা-বাবা কোনওদিন পেশা নিয়ে নিরুৎসাহী করেননি। আর সেই জন্যই আমি সাফল্য ছুঁতে পেরেছি।
এটি কেবল একটি চাকরির সমাপ্তি নয়, বরং একটি অনুপ্রেরণামূলক যাত্রার সমাপ্তি যা সারা ভারতে হাজার হাজার নারীকে নতুন দিকনির্দেশনা দিয়েছে।
যখন লোকো পাইলটের কেবিনকে কেবল পুরুষদের জন্য বিবেচনা করা হত, তখন তিনি সেই ধারণা ভেঙে দিয়েছিলেন এবং প্রমাণ করেছিলেন যে, নারীরাও লোকো পাইলটের (ট্রানচালক) মতো কঠিন দায়িত্ব পালন করতে পারেন।