Dhaka মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ১০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অবসরের ঘোষণা দিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ১০:২৭:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪
  • ১৯৪ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকেই আলোচনায় ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। অভিজ্ঞ এই টাইগার ক্রিকেটারের ব্যাটিংটা ঠিক টি-টোয়েন্টি সুলভ নয় বলেও কম সমালোচনা হচ্ছিল না। যে কারণে ভারতের বিপক্ষে চলমান সিরিজের দলে তাকে দেখেও অনেকে অবাক হয়েছিলেন। এরই মধ্যে শোনা যাচ্ছিল, ভারত সিরিজেই সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেটকে বিদায় বলে দেবেন রিয়াদ। অবশেষে দিল্লিতে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচের আগেরদিন ফরম্যাটটি থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই জানিয়ে দিলেন টি-টোয়েন্টি সংস্করণ থেকে তার অবসরের সিদ্ধান্তের কথা। চারপাশে চলমান আলোচনা যে মিথ্যে নয়, সেটাই শুরুতে জানিয়ে দিলেন ৩৯ ছুঁই ছুঁই এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। ভারতের বিপক্ষে শেষ টি-টোয়েন্টি হবে তার ম্যাচ, ‘হ্যাঁ, সত্যিই আমি এই সিরিজের শেষ ম্যাচেই অবসর নিতেছি।’

মাহমুদউল্লাহ বলেন, এই সিরিজ শুরুর আগেই অবসরের ঘোষণা দেওয়ার চিন্তা ঠিক করে রেখেছিলেন, ‘এই সিরিজের শেষ ম্যাচের পরেই আমি টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেব। আসলে এটা আমি এই সফরে আসার আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম। আমি আমার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। আমার কোচ, অধিনায়ক, নির্বাচক ও বোর্ড সভাপতিকেও সিদ্ধান্ত জানিয়েছি।’

৩৮ পেরোনো তারকার মতে, বিদায় বোলার এটাই উপযুক্ত সময়, ‘আমি মনে করি, এটাই সঠিক সময় এই সংস্করণ থেকে সরে গিয়ে সামনে ওয়ানডে যা আছে, সেদিকে মনোযোগ দেওয়ার। আমার জন্য এবং পরের (টি-টোয়েন্টি) বিশ্বকাপের কথা যদি ভাবি, দলের জন্যও এটাই সঠিক সময়।’
অবসরের সিদ্ধান্ত নেওয়ার দিনে মাহমুদউল্লাহ যেন আত্মপক্ষ সমর্থন করলেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, ‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলতে গেলে আপনি যদি বেশি চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েন, তাহলে পারফর্ম করতে পারবেন না। কোনোদিন সফল হবেন, কোনোদিন হবেন না। ছয় নম্বরে ব্যাট করাটা অনেক কঠিন, এখানে পাঁচটা ইনিংস খেললে খুব সম্ভবত ৩ ইনিংসে আপনি ব্যর্থ হবেন, একটা খুব ভালো হবে, আর আরেকটা মাঝারি হবে। তবে নির্দিষ্টভাবে, ওই পজিশনে ওই ব্যাটারদের জন্য এটাই কাজ। তাকে টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে এবং বোর্ড থেকেও সমর্থন দিতে হবে। বাইরে কী কথা হলো, সেদিকে কান দেওয়া যাবে না। সে তার জায়গায় বাকি সবার আস্থা অর্জন করতে পারলে অনেক ভালো করবে।’

বিদায় ঘোষণার মঞ্চে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সেরা মুহূর্তটির কথা স্মরণ করলেন মাহমুদউল্লাহ। ২০১৮ সালে নিদাহাস ট্রফিতে বাংলাদেশকে ফাইনালে তুলতে দারুণ এক ক্যামিও ইনিংস খেলেছিলেন। ওটাই মাহমুদউল্লাহর ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংস। আবার ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সহজ লক্ষ্য ছুঁতে না পারার বেদনাও আছেন। দুইয়ের মিশ্রণেই মাহমুদউল্লাহর অনুভূতি স্বাভাবিক। তিনি বলছেন, ‘ক্যারিয়ারে কতটা সফল হয়েছি তা আমি বলতে পারবো না। তবে আমি আমার জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। অনেক সময় সফল হয়েছি, অনেক সময় হইনি। তবে এসব নিয়ে এখন আর ভাবছি না। তবে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে আলোকিত মূহূর্ত নিঃসন্দেহে নিদাহাস ট্রফির সেই ম্যাচটা। যে ম্যাচটা আমাদের জন্য সেমিফাইনাল হয়ে গিয়েছিল, শ্রীলঙ্কাকে হারানোর সেই ম্যাচ। হতাশাজনক মুহূর্ত বলবো বেঙ্গালুরুতে ২০১৬’র টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ওই ম্যাচটা আমার জীবনকেও বদলে দিয়েছিল।’

সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েই সংবাদ সম্মেলনের ইতি টেনেছেন মাহমুদউল্লাহ, ‘মানুষের ভালোবাসা ও দোয়া না থাকলে এই পর্যন্ত আসতে পারতাম না। তাদের সঙ্গে সাংবাদিকদেরও ধন্যবাদ দিতে চাই। যারা আমাকে পছন্দ করে না তাদেরও ধন্যবাদ দিতে চাই।’

বুধবার (৯ অক্টোবর) দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ। এরপর ১২ অক্টোবর হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ। সেটিই হবে বাংলাদেশের জার্সিতে মাহমুদউল্লাহ’র শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি।

২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে নাইরোবিতে কেনিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয় মাহমুদউল্লাহর। বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১৩৯টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন তিনি। ১১৭.৭৪ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন ২৩৯৫, গড় ২৩.৪৮।

দেশকে ৪৩টি টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্বও দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। অধিনায়ক হিসেবে জয় পেয়েছেন ১৬টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে, হার ২৬টিতে। এর আগে ২০২১ সালের জুলাইয়ে টেস্ট থেকে অবসরে যান মাহমুদউল্লাহ। এবার টি-টোয়েন্টিও ছাড়লেন। বাকি রইলো কেবল ওয়ানডে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংসদ নির্বাচনে কালো টাকার ছড়াছড়ি হলে ব্যবস্থা নেবে দুদক : দুদক চেয়ারম্যান

অবসরের ঘোষণা দিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ

প্রকাশের সময় : ১০:২৭:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪

স্পোর্টস ডেস্ক : 

সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকেই আলোচনায় ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। অভিজ্ঞ এই টাইগার ক্রিকেটারের ব্যাটিংটা ঠিক টি-টোয়েন্টি সুলভ নয় বলেও কম সমালোচনা হচ্ছিল না। যে কারণে ভারতের বিপক্ষে চলমান সিরিজের দলে তাকে দেখেও অনেকে অবাক হয়েছিলেন। এরই মধ্যে শোনা যাচ্ছিল, ভারত সিরিজেই সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেটকে বিদায় বলে দেবেন রিয়াদ। অবশেষে দিল্লিতে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচের আগেরদিন ফরম্যাটটি থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই জানিয়ে দিলেন টি-টোয়েন্টি সংস্করণ থেকে তার অবসরের সিদ্ধান্তের কথা। চারপাশে চলমান আলোচনা যে মিথ্যে নয়, সেটাই শুরুতে জানিয়ে দিলেন ৩৯ ছুঁই ছুঁই এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। ভারতের বিপক্ষে শেষ টি-টোয়েন্টি হবে তার ম্যাচ, ‘হ্যাঁ, সত্যিই আমি এই সিরিজের শেষ ম্যাচেই অবসর নিতেছি।’

মাহমুদউল্লাহ বলেন, এই সিরিজ শুরুর আগেই অবসরের ঘোষণা দেওয়ার চিন্তা ঠিক করে রেখেছিলেন, ‘এই সিরিজের শেষ ম্যাচের পরেই আমি টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেব। আসলে এটা আমি এই সফরে আসার আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম। আমি আমার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। আমার কোচ, অধিনায়ক, নির্বাচক ও বোর্ড সভাপতিকেও সিদ্ধান্ত জানিয়েছি।’

৩৮ পেরোনো তারকার মতে, বিদায় বোলার এটাই উপযুক্ত সময়, ‘আমি মনে করি, এটাই সঠিক সময় এই সংস্করণ থেকে সরে গিয়ে সামনে ওয়ানডে যা আছে, সেদিকে মনোযোগ দেওয়ার। আমার জন্য এবং পরের (টি-টোয়েন্টি) বিশ্বকাপের কথা যদি ভাবি, দলের জন্যও এটাই সঠিক সময়।’
অবসরের সিদ্ধান্ত নেওয়ার দিনে মাহমুদউল্লাহ যেন আত্মপক্ষ সমর্থন করলেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, ‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলতে গেলে আপনি যদি বেশি চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েন, তাহলে পারফর্ম করতে পারবেন না। কোনোদিন সফল হবেন, কোনোদিন হবেন না। ছয় নম্বরে ব্যাট করাটা অনেক কঠিন, এখানে পাঁচটা ইনিংস খেললে খুব সম্ভবত ৩ ইনিংসে আপনি ব্যর্থ হবেন, একটা খুব ভালো হবে, আর আরেকটা মাঝারি হবে। তবে নির্দিষ্টভাবে, ওই পজিশনে ওই ব্যাটারদের জন্য এটাই কাজ। তাকে টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে এবং বোর্ড থেকেও সমর্থন দিতে হবে। বাইরে কী কথা হলো, সেদিকে কান দেওয়া যাবে না। সে তার জায়গায় বাকি সবার আস্থা অর্জন করতে পারলে অনেক ভালো করবে।’

বিদায় ঘোষণার মঞ্চে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সেরা মুহূর্তটির কথা স্মরণ করলেন মাহমুদউল্লাহ। ২০১৮ সালে নিদাহাস ট্রফিতে বাংলাদেশকে ফাইনালে তুলতে দারুণ এক ক্যামিও ইনিংস খেলেছিলেন। ওটাই মাহমুদউল্লাহর ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংস। আবার ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সহজ লক্ষ্য ছুঁতে না পারার বেদনাও আছেন। দুইয়ের মিশ্রণেই মাহমুদউল্লাহর অনুভূতি স্বাভাবিক। তিনি বলছেন, ‘ক্যারিয়ারে কতটা সফল হয়েছি তা আমি বলতে পারবো না। তবে আমি আমার জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। অনেক সময় সফল হয়েছি, অনেক সময় হইনি। তবে এসব নিয়ে এখন আর ভাবছি না। তবে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে আলোকিত মূহূর্ত নিঃসন্দেহে নিদাহাস ট্রফির সেই ম্যাচটা। যে ম্যাচটা আমাদের জন্য সেমিফাইনাল হয়ে গিয়েছিল, শ্রীলঙ্কাকে হারানোর সেই ম্যাচ। হতাশাজনক মুহূর্ত বলবো বেঙ্গালুরুতে ২০১৬’র টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ওই ম্যাচটা আমার জীবনকেও বদলে দিয়েছিল।’

সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েই সংবাদ সম্মেলনের ইতি টেনেছেন মাহমুদউল্লাহ, ‘মানুষের ভালোবাসা ও দোয়া না থাকলে এই পর্যন্ত আসতে পারতাম না। তাদের সঙ্গে সাংবাদিকদেরও ধন্যবাদ দিতে চাই। যারা আমাকে পছন্দ করে না তাদেরও ধন্যবাদ দিতে চাই।’

বুধবার (৯ অক্টোবর) দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ। এরপর ১২ অক্টোবর হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ। সেটিই হবে বাংলাদেশের জার্সিতে মাহমুদউল্লাহ’র শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি।

২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে নাইরোবিতে কেনিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয় মাহমুদউল্লাহর। বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১৩৯টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন তিনি। ১১৭.৭৪ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন ২৩৯৫, গড় ২৩.৪৮।

দেশকে ৪৩টি টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্বও দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। অধিনায়ক হিসেবে জয় পেয়েছেন ১৬টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে, হার ২৬টিতে। এর আগে ২০২১ সালের জুলাইয়ে টেস্ট থেকে অবসরে যান মাহমুদউল্লাহ। এবার টি-টোয়েন্টিও ছাড়লেন। বাকি রইলো কেবল ওয়ানডে।