রংপুর জেলা প্রতিনিধি :
রংপুর সিটি করপোরেশনের (রসিক) ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও তাজহাট থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া আলম শিপলুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টায় নগরীর বিনোদপুর রেলক্রসিং এলাকার বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি ৪টি মামলার গ্রেফতার পরোয়ানাভুক্ত আসামি। আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেট্রোপলিটন তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল কাদের।
তিনি আরো জানান, রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার একটি মামলার ওয়ারেন্ট থাকায় কোতোয়ালি থানা পুলিশ আটক করে কোতোয়ালি থানায় নিয়েছেন।
এর আগে বিকেলে দর্শনা মোড় রেল গেট এলাকার ভগ্নিপতির বাড়িতে জাকারিয়া আলম শিপলুকে আটক করতে যায় পুলিশ। আটক করতে যাওয়ার বিষয়টি মুহুর্তের মধ্যেই ছড়িয়ে পরলে ওয়ার্ড ও এলাকার নারীরা পুরো বাড়ি ঘিরে ফেলে এবং বাড়ির ভিতরে পুলিশ কে প্রবেশে বাধা তৈরি করে। এদিকে সময় বাড়ার সাথে সাথে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাড়তে থাকে, সেই সাথে পুলিশের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। এ সময় তুমুল উত্তেজনা সৃস্টি হয়। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কয়েক দফা চেষ্টা করেন শিপলুর সাথে কথা বলার কিন্তু এলাকাবাসীর বাধার মুখে সম্ভব হয়নি। পরে রাত ৯ টার দিকে জাকারিয়া আলম শিপলুর সাথে আলোচনার কথা বলে এলাকাবাসীর প্রচণ্ড বাধার মুখেও আটক করে কোতোয়ালি থানায় নেয়া হয়।
এর আগে শুক্রবার বিকেলে দর্শনা মোড় রেলগেট বিনোদপুর এলাকার ভগ্নিপতির বাড়িতে অবস্থান করা জাকারিয়া আলম শিপলুকে আটক করতে যায় পুলিশ। আটক করতে যাওয়ার বিষয়টি মুহূর্তের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়লে এলাকার শত শত নারী-পুরুষ পুরো বাড়ি ঘিরে ফেলে। তারা বাড়ির ভেতরে প্রবেশে পুলিশকে বাধা দেয় এবং গ্রেপ্তার চেষ্টার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করতে থাকে। একপর্যায়ে অবস্থা বেগতিক হতে থাকলে কোতয়ালী থানা থেকে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স ও জলকামান পাঠানো হয়।
এদিকে, সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ দলীয় নেতাকর্মীদের ভিড় বাড়তে থাকে, সেই সঙ্গে পুলিশের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। এসময় তুমুল উত্তেজনা দেখা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কয়েক দফায় শিপলুর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু এলাকাবাসীর তোপের মুখে তারা ব্যর্থ হন। পরে সাড়ে রাত ৯টার দিকে জাকারিয়া আলম শিপলুকে তার ব্যক্তিগত একটি গাড়িতে করে কোতোয়ালি থানায় নেওয়া হয়।
আটক না গ্রেফতার বিষয়টি পরে বিস্তারিত জানাবেন বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আরিফুজ্জামান।
অন্যদিকে, কাউন্সিলর জাকারিয়া আলম শিপলুকে আটক ও হয়রানি করা হলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুমকি দিয়েছে এলাকাবাসী। তাদের অভিযোগ, রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী শাফিউল ইসলাম শাফি পুলিশ দিয়ে জাকারিয়া আলম শিপলুকে হয়রানি করছেন, যা অন্যায় এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
রসিক কাউন্সিলর জাকারিয়া আলম শিপলুর আইনজীবী মাহামুদুল হক সেলিম সাংবাদিকদের জানান, কাউন্সিলর শিপলুকে যে মামলায় কোতোয়ালি থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে এসেছে সে মামলা সম্পর্কে তিনি জানতেন না। এ মামলার চার্জশিটে কাউন্সিলরকে অভিযুক্ত করেছে পুলিশ। শনিবার আদালতে কাউন্সিলরের জামিন আবেদন করা হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ১ এপ্রিল যমুনা টেলিভিশনের অপরাধ অনুসন্ধানমূলক অনুষ্ঠান ক্রাইম সিনে সড়ক ও জনপদ বিভাগের জমি জালিয়াতি করে রেজিস্ট্রি বায়না দলিল করা সংক্রান্ত মামলায় এক বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ও একাধিক মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি কাউন্সিলর জাকারিয়া ইসলাম শিপলুর বিরুদ্ধে জমি দখল, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপকর্ম প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়। এ ঘটনায় সংক্ষুব্ধ হয়ে কাউন্সিলর শিপলু গত বুধবার (৫ এপ্রিল) সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যমুনা টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার মাজহারুল মান্নানসহ তিন জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন দাখিল করেন। এরপর দিন রংপুরের সাংবাদিক সমাজ মানববন্ধন সমাবেশ করে মামলার আবেদন প্রত্যাহার এবং কাউন্সিলর শিপলুর গ্রেফতার দাবি করেন।