মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেন, অন্যের জন্য গর্ত করলে যে সেই গর্তে পরতে হয় তার প্রমাণ শেখ হাসিনা। তিনি আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিনা অপরাধে কারাগারে বন্দি করে রেখেছিলেন। ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে ২০০০ ছাত্র-জনতার হত্যার দায় নিয়ে শেখ হাসিনা চলে গেছেন। তিনি ভেবেছিলেন তার প্রভু ভারত সরকার তাকে টিকিয়ে রাখবে। কিন্তু পারেনি।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার উলাইল ইউনিয়নের রূপসা গ্রামের শহীদ রফিকুল ইসলামের বাড়িতে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ভিডিও বার্তা দেওয়ার জন্য তারেক রহমানের সমালোচনা করতেন। আজ শেখ হাসিনা নিজেই ফেসবুক, ইউটিউবে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। কোথায় গেল আপনার বাহাদুরি।
রিজভী বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান বাকশাল কায়েম করতে চেয়েছিলেন, ওই সময় অনেক পত্র-পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ঠিক একই কায়দায় তার মেয়েও (শেখ হাসিনা) ক্ষমতায় এসে দিগন্ত টেলিভিশন, ইসলামী টেলিভিশন, চ্যানেল ওয়ান এবং আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ করে দেয়।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ এবং আহতদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞ থাকতে হবে। তাদের অবদানের কথা স্মরণ করতে তাদের নামে স্থাপনা ও সড়কের নামকরণ করতে হবে। বিএনপি জনগণের দল। আগামীতে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করলে তাদের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হবে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ভারত সরকারের মনে অনেক কষ্ট, কারণ তাদের প্রিয় মানুষ শেখ হাসিনা এখন বাংলাদেশে নেই। শেখ হাসিনার কাছ থেকে ভারত ব্যাপক সুবিধা নিয়েছে।
তিনি বলেন, সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ চলছে, এর সঙ্গে ভারতের এক ব্যবসায়ী জড়িত আছেন। ওপরে দেখিয়েছে বাংলাদেশের কিছু ব্যক্তির নাম তাও আবার সব শেখ পরিবারের আত্মীয়-স্বজন। বিনা টেন্ডারে সব কয়টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ দেওয়া হয়েছে। কম দামি কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে ভারতের ব্যবসায়ী আদানি। তিনি আবার হুমকি দিয়েছেন টাকা পরিশোধ না করলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করে দেবেন।
তিনি আরো বলেন, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস নামক এক ব্যক্তিকে ভারত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দোহাই দিয়ে বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছে, যদিও এই ব্যক্তিকে তার সংগঠন থেকে আগেই বহিষ্কার করা হয়েছিল। তিনি জানান, বাংলাদেশের জনগণ এখন এসব চক্রান্ত বুঝতে শিখেছে।
রিজভী আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের উদ্দেশ্যে বলেন, ছাত্র জনতার আন্দোলনে যারা শহীদ ও আহত হয়েছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে হবে। তাদের অবদান স্মরণ করতে হবে এবং তাদের নামে স্থাপনা ও সড়কের নামকরণ করতে হবে। বিএনপি জনগণের দল, এবং আগামীতে জনগণের ভোটে সরকার গঠন করলে তাদের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হবে।
আমরা বিএনপি পরিবারের সভাপতি আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতা, আমরা বিএনপি পরিবারের উপদেষ্টা এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত ও প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুলসহ শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও আহতরা বক্তব্য রাখেন। পরে আহত ও নিহত পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।