Dhaka বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অন্তর্বর্তী সরকারকে সহসাই কেয়ারটেকার সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে : আমীর খসরু

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অতি দ্রুত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কেয়ারটেকার সরকারে রূপান্তর করার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এই সরকারকে সহসাই কেয়ারটেকার সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। কেয়ারটেকার সরকারের জায়গায় অবতীর্ণ হওয়ার অর্থ হচ্ছে পুরোপুরি নিরপেক্ষ অবস্থানে যাওয়ার কথা বলছি।

বুধবার (২২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম আয়োজিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমতা রক্ষায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গুরুত্ব শীর্ষক আলেচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা কোনো অনির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে কিছু প্রত্যাশা করি না। আমাদের একটাই দাবি যত দ্রুত সম্ভব জনগণের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। একটি গণতান্ত্রিক সরকারের অধীনে, জনগণের ম্যান্ডেটের ভিত্তিতে নির্বাচিত সংসদ গঠন করতে হবে।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের এখনই কেয়ারটেকার মোডে চলে যাওয়া উচিত। যারা বিতর্কিত, যারা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদেরকে সরকারি দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে হবে। তা না হলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

তিনি বলেন, দেশে এখন কোথাও কোনো জবাবদিহিতা নেই। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন কিংবা শিক্ষাঙ্গন সবখানেই জবাবদিহির ঘাটতি তৈরি হয়েছে।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে এখন থেকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মুডে যেতে হবে। নির্বাচিত সরকার ছাড়া টানা ১৫ মাস ধরে দেশ চলছে, যা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে। বর্তমান সরকারের কাছে জনগণের কোনো প্রত্যাশা নেই, কারণ তাদের ম্যান্ডেট নেই।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, যত দ্রুত সম্ভব জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে। নির্বাচিত সরকার না থাকায় রাষ্ট্রের সবখাতে চাপ সৃষ্টি হয়েছে। যাদের পদত্যাগ করার কথা, তারাও এখনও পদে বহাল আছেন, যা প্রশাসনিক জটিলতা বাড়াচ্ছে।

আমীর খসরু বলেন, নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। নিরপেক্ষ নির্বাচনই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথ খুলে দিতে পারে। এ ছাড়া সরকারের ভেতরের কিছু ব্যক্তি নিয়োগ ও পদায়নে প্রভাব খাটাচ্ছেন, যা নিরপেক্ষতার পরিবেশ নষ্ট করছে। এসব ব্যক্তির উপস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা পালন করতে পারবে না।

বিএনপির এ নেতা বলেন, বর্তমান সরকারের উচিত এখন বড় কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়া। দৈনন্দিন প্রশাসনিক কাজেই সীমাবদ্ধ থাকা প্রয়োজন, না হলে জনমনে প্রশ্ন উঠবে।

তিনি বলেন, বিএনপি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করছে। দলটি বিশৃঙ্খলা নয়, শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবর্তনে বিশ্বাসী। জনগণের কাছে গিয়ে ইশতেহার ও দাবি তুলে ধরাই এখন বিএনপির লক্ষ্য।

আমীর খসরু বলেন, সরকারের ভেতরের কিছু লোকের কারণে যদি পরিস্থিতি বিঘ্নিত হয়, তবে সেটি সরকারেরই সম্মানহানি ঘটাবে। তাই অন্তর্বর্তী সরকারকে এখন থেকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে।

দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিএনপি বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরোধী জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের কোনো বিষয়ে বাইরের শক্তির হস্তক্ষেপ বরদাশত করা হবে না।

আমীর খসরু বলেন, বর্তমানে ১৪-১৫ মাস ধরে নির্বাচিত সরকার ছাড়া দেশ চলছে। নির্বাচিত প্রতিনিধিত্ব না থাকায় রাষ্ট্রে জবাবদিহিতা হারিয়ে গেছে। প্রশাসন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সব জায়গায় এখন জবাবদিহিতার ঘাটতি স্পষ্ট। এটা দেশের গণতন্ত্রের জন্য ভয়াবহ সংকেত।

তিনি বলেন, নির্বাচিত সরকার না থাকলে কারো কাছে জবাবদিহির প্রশ্নই আসে না। সরকার উপরে, জনগণ নিচে মাঝখানে কোনো সেতু নেই। এই সেতুই তো নির্বাচিত প্রতিনিধি। এখন সেই সেতু অনুপস্থিত।

স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে বিএনপির অবস্থান পরিষ্কার উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, আমাদের সম্পর্ক হবে বিশ্বের প্রতিটি দেশের সঙ্গে পারস্পরিক সম্মান ও স্বার্থ রক্ষার ভিত্তিতে। কিন্তু কোনো দেশের নির্দেশে নয়, বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক কৌশল বাংলাদেশ নিজেরাই নির্ধারণ করবে। ’

বক্তব্যের শেষে তিনি বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রের জন্য আপসহীন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের মালিকানা পুনঃপ্রতিষ্ঠা হোক।

মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজীজ উলফাতের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইসচেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ দলের নেতাকর্মীরা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিরসরাইয়ে ২০৯ কোটি টাকায় হবে অ্যাক্সেস সড়ক

অন্তর্বর্তী সরকারকে সহসাই কেয়ারটেকার সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে : আমীর খসরু

প্রকাশের সময় : ০৩:৪৩:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অতি দ্রুত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কেয়ারটেকার সরকারে রূপান্তর করার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এই সরকারকে সহসাই কেয়ারটেকার সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। কেয়ারটেকার সরকারের জায়গায় অবতীর্ণ হওয়ার অর্থ হচ্ছে পুরোপুরি নিরপেক্ষ অবস্থানে যাওয়ার কথা বলছি।

বুধবার (২২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম আয়োজিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমতা রক্ষায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গুরুত্ব শীর্ষক আলেচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা কোনো অনির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে কিছু প্রত্যাশা করি না। আমাদের একটাই দাবি যত দ্রুত সম্ভব জনগণের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। একটি গণতান্ত্রিক সরকারের অধীনে, জনগণের ম্যান্ডেটের ভিত্তিতে নির্বাচিত সংসদ গঠন করতে হবে।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের এখনই কেয়ারটেকার মোডে চলে যাওয়া উচিত। যারা বিতর্কিত, যারা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদেরকে সরকারি দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে হবে। তা না হলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

তিনি বলেন, দেশে এখন কোথাও কোনো জবাবদিহিতা নেই। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন কিংবা শিক্ষাঙ্গন সবখানেই জবাবদিহির ঘাটতি তৈরি হয়েছে।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে এখন থেকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মুডে যেতে হবে। নির্বাচিত সরকার ছাড়া টানা ১৫ মাস ধরে দেশ চলছে, যা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে। বর্তমান সরকারের কাছে জনগণের কোনো প্রত্যাশা নেই, কারণ তাদের ম্যান্ডেট নেই।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, যত দ্রুত সম্ভব জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে। নির্বাচিত সরকার না থাকায় রাষ্ট্রের সবখাতে চাপ সৃষ্টি হয়েছে। যাদের পদত্যাগ করার কথা, তারাও এখনও পদে বহাল আছেন, যা প্রশাসনিক জটিলতা বাড়াচ্ছে।

আমীর খসরু বলেন, নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। নিরপেক্ষ নির্বাচনই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথ খুলে দিতে পারে। এ ছাড়া সরকারের ভেতরের কিছু ব্যক্তি নিয়োগ ও পদায়নে প্রভাব খাটাচ্ছেন, যা নিরপেক্ষতার পরিবেশ নষ্ট করছে। এসব ব্যক্তির উপস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা পালন করতে পারবে না।

বিএনপির এ নেতা বলেন, বর্তমান সরকারের উচিত এখন বড় কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়া। দৈনন্দিন প্রশাসনিক কাজেই সীমাবদ্ধ থাকা প্রয়োজন, না হলে জনমনে প্রশ্ন উঠবে।

তিনি বলেন, বিএনপি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করছে। দলটি বিশৃঙ্খলা নয়, শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবর্তনে বিশ্বাসী। জনগণের কাছে গিয়ে ইশতেহার ও দাবি তুলে ধরাই এখন বিএনপির লক্ষ্য।

আমীর খসরু বলেন, সরকারের ভেতরের কিছু লোকের কারণে যদি পরিস্থিতি বিঘ্নিত হয়, তবে সেটি সরকারেরই সম্মানহানি ঘটাবে। তাই অন্তর্বর্তী সরকারকে এখন থেকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে।

দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিএনপি বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরোধী জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের কোনো বিষয়ে বাইরের শক্তির হস্তক্ষেপ বরদাশত করা হবে না।

আমীর খসরু বলেন, বর্তমানে ১৪-১৫ মাস ধরে নির্বাচিত সরকার ছাড়া দেশ চলছে। নির্বাচিত প্রতিনিধিত্ব না থাকায় রাষ্ট্রে জবাবদিহিতা হারিয়ে গেছে। প্রশাসন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সব জায়গায় এখন জবাবদিহিতার ঘাটতি স্পষ্ট। এটা দেশের গণতন্ত্রের জন্য ভয়াবহ সংকেত।

তিনি বলেন, নির্বাচিত সরকার না থাকলে কারো কাছে জবাবদিহির প্রশ্নই আসে না। সরকার উপরে, জনগণ নিচে মাঝখানে কোনো সেতু নেই। এই সেতুই তো নির্বাচিত প্রতিনিধি। এখন সেই সেতু অনুপস্থিত।

স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে বিএনপির অবস্থান পরিষ্কার উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, আমাদের সম্পর্ক হবে বিশ্বের প্রতিটি দেশের সঙ্গে পারস্পরিক সম্মান ও স্বার্থ রক্ষার ভিত্তিতে। কিন্তু কোনো দেশের নির্দেশে নয়, বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক কৌশল বাংলাদেশ নিজেরাই নির্ধারণ করবে। ’

বক্তব্যের শেষে তিনি বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রের জন্য আপসহীন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের মালিকানা পুনঃপ্রতিষ্ঠা হোক।

মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজীজ উলফাতের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইসচেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ দলের নেতাকর্মীরা।