নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এখনই সময়। এক মুহূর্তও দেরি নয়। আসুন আমরা সবাই গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণভাবে রাজপথে নেমে পড়ি। সোচ্চার কণ্ঠে আমরা উচ্চারণ করবো, আর নয়। তুমি (সরকার) যাও। এনাফ ইজ এনাফ। এখন দয়া করে (ক্ষমতা) ছেড়ে দিয়ে জনগণের একটা রাষ্ট্র, সরকার ও সংসদ তৈরি করার ব্যবস্থা করে দাও। অন্যথায় তুমি পালাবার পথটাও খুঁজে পাবে না।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল এ সভায় বলেন, আজকে বড় দল, ছোট দল, মাঝারি দল, এটা বড় কথা নয়। বিএনপি, নাগরিক ঐক্য না কি গণসংহতি, না কি গণতন্ত্র মঞ্চ- এটা বড় কথা নয়। বড় হচ্ছে আমাদের দেশ ও মানুষ আজকে বিপদগ্রস্ত ও বিপন্ন। এই অস্তিত্বকে রক্ষা করা আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব নিয়ে আমাদের সামনে এগিয়ে আসতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর আওয়ামী লীগের শাসনে অত্যন্ত পরিকল্পিত ও সুচিন্তিতভাবে জনগণের অধিকারগুলোকে কেড়ে নেওয়ার জন্য একটা আইনগত ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। আর আওয়ামী লীগের চরিত্র হচ্ছে, তারা ক্ষমতা এককভাবে ভোগ করতে চায়। আর সেখানে জনগণ তাদের কাছে কোনো ব্যাপার না।
তিনি বলেন, এবারের আন্দোলনে একটা পরিবর্তন এসেছে। আমরা যে রাজনৈতিক দলগুলো একসঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করছি- আমরা খুব পরিষ্কার করে বলেছি, আমরা একদফা দিয়েছি। অর্থাৎ এই সরকারের পতন।
তিনি বলেন, আজকে বড়-ছোট-মাঝারি দল এটা বড় কথা নয়। বিএনপি নাকি নাগরিক ঐক্য, নাকি গণসংহতি আন্দোলন, না গণতন্ত্র মঞ্চ এটা বড় কথা নয়। আমাদের দেশ, আমাদের মানুষ আজকে বিপদগ্রস্ত, বিপন্ন। এদের অস্তিত্বকে রক্ষা করার আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব নিয়ে আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে তরুণ-যুবকেরা আছেন এই সাকি (জোনায়েদ সাকি) দলে এবং অনেকে আছেন তরুণ-যুবক, তারা সামনে এগিয়ে এসেছেন। আমি অন্তরের অন্তরস্থল থেকে চাই যে, তারা আরো বিস্তৃত হোক, তাদের সংগঠন আরো বড় হোক, তারা গণমানুষের মধ্যে চলে যাক। মানুষকে তারা জাগিয়ে তুলক। সত্যিকার অর্থে একটা শোষনহীন একটা সমাজ ব্যবস্থা নির্মাণ করুক, এটা আমি আন্তরিকভাবে চাই। আমি বিশ্বাস করি একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ছাড়া সেটা সম্ভব নয়। সেই গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করতে হলে আমাদেরকে এখনই সময়। আর কোনো দেরি করার সময় নেই।
তিনি বলেন, আজকে সেই সময় এসেছে। আমাদের জনগনকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। আমি খুব আনন্দিত হই, প্রথমবারের মতো আজকে আমরা এখানে যারা আছি, তার বাইরেও যারা আছেন, আমরা সবাই এক হয়েছি, একটিই দাবি সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। একটা নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে সেখানে নতুন নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
অসুস্থ খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিতসা করতে না দেয়ার সরকারের প্রতিহিংসার কথাও তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।
সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের মিলনায়তনে গণসংহতি আন্দোলনের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘গণতন্ত্রের সংগ্রাম ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ৩১ দফা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
গনসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারীর সভাপতিত্বে সম্পাদকমণ্ডলী সদস্য জুলহাসনাইন বাবুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।