নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিশ্বের অনেক উন্নয়নশীল দেশও সর্বজনীন পেনশন চালুর দুঃসাহস করে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের এবং একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকরের দাবিতে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে যুব মহিলা লীগ।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। অনেক উন্নয়নশীল দেশও এই দুঃসাহস করে না। এসময় রাষ্ট্রকে মানবিক করার ক্ষেত্রে সর্বজনীন পেনশন চালু করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল জানে না, পাকিস্তানিরা দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু যখন দেশ পুনর্গঠন করেছিল তার মৃত্যুর আগে জিডিপি ছিল ৯ ভাগ। খালেদা জিয়া- এরশাদ সরকার তো দুরের কথা আওয়ামী লীগ সরকারও এখন পর্যন্ত ৯ ভাগ জিডিপিতে পৌঁছাতে পারেনি। কাজেই যা বলবেন মির্জা ফখরুল সাহেব সাবধানে কথা বলবেন। ইতিহাস পরিসংখ্যান জেনে কথা বলবেন।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা তারেক রহমানকে বাংলাদেশে পাঠাতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাহাঙ্গীর কবির নানক।
নানক বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে এ রাজপথে রক্তের প্লাবন বইয়ে দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ সেদিন হত্যার লীলাভূমিতে পরিণত করেছিল তারেক রহমান। তার পরিকল্পনায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে শান্তি সমাবেশে একটি, দুইটি, পাঁচটি নয়; ১৪টি গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হলো। শেখ হাসিনাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য এ হামলা করা হয়েছিল। নেতাকর্মীরা মানবঢাল দিয়ে তাকে রক্ষা করে যখন গাড়িয়ে ওঠানো হচ্ছিল, তখন তার গাড়িতেও গুলি চালানো হয়। এই তো ছিলো বিএনপির ইতিহাস।
এ সময় তিনি বিএনপি নেতা তারেক রহমানকে বাংলাদেশ পাঠিয়ে দেয়ার জন্য যুক্তরাজ্যের কাছে দাবি জানান।
বিভিন্ন দেশ বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করে নানক বলেন, এখন পর্যন্ত যাদের খুঁজে পাওয়া গিয়েছে তাদের মধ্যে নুর চৌধুরী আছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, কানাডায় আছেন মেজর কিসমত। আমাদের প্রশ্ন এই খুনিরা যে দেশ দুটিতে রয়েছে সেই দেশ দুটি মানবাধিকার, গণতন্ত্র সভ্যতার কথা বলে আর খুনিদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়। সেটা ধিক্কার জানানোর ভাষা জানা নেই।
বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনা করে তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল বলেছেন, জিয়া বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত নন। আমরা প্রশ্ন রাখতে চাই, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর সর্বোচ্চ সুবিধাভোগী কে হয়েছে? সেই সুবিধাভোগী জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর জেনারেল জিয়া অবৈধভাবে আইন লঙ্ঘন করে সেদিন হ্যাঁ-না ভোট দিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে আত্ম-স্বীকৃত খুনিদের এমপি বানিয়ে এনেছিলেন। মির্জা ফখরুল জবাব দেবেন কী কারণে বঙ্গবন্ধুর আত্ম-স্বীকৃত খুনিদের সংসদে এনেছিলেন। যখন খুনিদের বিরুদ্ধে জাগরণ গণ-ধিক্কার সৃষ্টি হয়েছে, তখন খুনিদের বিশেষ বিমানে বিদেশে কে পাঠিয়েছিল? জিয়াউর রহমান। বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি কে দিয়েছিল, জিয়াউর রহমান। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বিধায় হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী জিয়াউর রহমান এ খুনিদের দেশ থেকে বাইরে পাঠিয়ে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়েছিল।
এ সময় মির্জা ফখরুলকে ইতিহাস জেনে কথা বলার পরামর্শ দেন আওয়ামী লীগের এ নেতা।
যুব মহিলা লীগের সভাপতি আলেয়া সারোয়ার ডেইজীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুনতানা লিলির সঞ্চলনায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুব মহিলা লীগের সভাপতি ফারজানা ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক নিলুফা রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি তাহেরা খাতুন লুৎফা, সাধারণ সম্পাদক শামীমা রহমান।