স্পোর্টস ডেস্ক :
ভারত-পাকিস্তানের চলমান দ্বন্দ্বের প্রভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) আঠারোতম আসর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে বিসিসিআই।
শুক্রবার (৯ মে) জরুরি এক বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইপিএলের গভর্নিং কাউন্সিল।
এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পরবর্তী সিদ্ধান্ত আসা পর্যন্ত স্থগিত থাকবে আইপিএল। টুর্নামেন্টের বাকি সূচি ও ভেন্যু নতুন করে পর্যালোচনার পর ঘোষণা করা হবে। এখন পর্যন্ত চলতি মৌসুমে ৫৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্রুপ পর্বের। প্লে অফের আগে বাকি আছে আরও ১২ ম্যাচ।
ভারত-পাকিস্তানের চলমান এই সঙ্কট, দুই প্রতিবেশি রাষ্ট্রের আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের কারণে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছেন আইপিএল খেলতে যাওয়া বিদেশি ক্রিকেটাররাও। বিসিসিআই জানিয়েছে, সব বিদেশি ক্রিকেটারকেই তাদের নিজ নিজ দেশের পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। ইতোমধ্যে ১০ ফ্র্যাঞ্চাইজিকে টুর্নামেন্ট স্থগিতের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে বিসিসিআই।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ মে) দিল্লিতে অনুষ্ঠিতব্য দিল্লি ক্যাপিটালস ও পাঞ্জাব কিংসের ম্যাচটি নিরাপত্তাজনিত কারণে মাঝপথে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। ম্যাচ বাতিলের পর থেকেই শুরু হয় জোরালো গুঞ্জন আইপিএলের বাকি অংশ আদৌ অনুষ্ঠিত হবে কি না। শেষ পর্যন্ত গুঞ্জন সত্যি করে পুরো টুর্নামেন্টই স্থগিত করা হলো।
ক্রিকইনফো জানায়, ম্যাচ বাতিলের পর দু’দলের খেলোয়াড়দের বিশেষ ট্রেনে করে দিল্লিতে স্থানান্তর করা হয়। বিসিসিআই জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত টুর্নামেন্টের খেলা পুনরায় শুরুর কোনো সম্ভাবনা নেই।
অন্যদিকে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)ও পিএসএল ২০২৫-এর বাকি ম্যাচগুলো সরিয়ে নিচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে পিসিবি জানায়, পিএসএল-এর লিগ পর্বের বাকি চারটি ম্যাচ ও প্লে-অফ পর্বের সবগুলো ম্যাচ আমিরাতে অনুষ্ঠিত হবে। শিগগিরই তারিখ ও ভেন্যু ঘোষণা করা হবে।
ভারত ও পাকিস্তানে অবস্থানরত অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারদের অনেকে টুর্নামেন্ট ছেড়ে দেশে ফিরতে চাইছেন বলে জানা গেছে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) জানিয়েছে, তারা প্রতিনিয়ত দুই দেশে অবস্থানরত ক্রিকেটারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে।
প্রসঙ্গত, আইপিএলের ১৮তম আসরে এখন পর্যন্ত মোট ৫৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যার মধ্যে ধর্মশালার পরিত্যক্ত ম্যাচও রয়েছে। গ্রুপ পর্বে এখনো ১২টি ম্যাচ বাকি রয়েছে, যার মধ্যে লখনৌ (২টি), হায়দরাবাদ, আহমেদাবাদ (৩টি), দিল্লি, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু (২টি), মুম্বাই ও জয়পুরে হওয়ার কথা ছিল। এরপর প্লে-অফের ম্যাচগুলো হায়দরাবাদ ও কলকাতায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
বিশ্বের দুই বৃহৎ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট স্থগিত ও স্থানান্তরের এ সিদ্ধান্ত ক্রিকেট বিশ্বের জন্য এক বড় ধাক্কা বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।