Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অনির্দিষ্টকালের জন্য পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করলো ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

পেঁয়াজ রফতানিতে এবার অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করলো ভারত। এ সংক্রান্ত পরবর্তী আদেশ আসার আগ পর্যন্ত স্থগিত থাকবে পেঁয়াজ রফতানি।

শুক্রবার (২২ মার্চ) রাতে এক আদেশের মাধ্যমে অনির্দিষ্টকালের এ নিষেধাজ্ঞা দেয় দেশটির সরকার। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।

রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার এ পদক্ষেপ নিয়েছে।

এর আগে, গত ডিসেম্বরে পেঁয়াজ রফতানিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। যেটির মেয়াদ ছিল ৩১ মার্চ পর্যন্ত। ওই সময় বলা হয়েছিল, দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল রাখতে অস্থায়ী এ নিষেধাজ্ঞা।

দিল্লির এই সিদ্ধান্তে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেতে পারে শঙ্কা রয়েছে। এদিকে, মুম্বাইভিত্তিক একটি পেঁয়াজ রফতানি সংস্থার কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, এই আদেশ হতবুদ্ধিকর ও পুরোপুরি অপ্রয়োজনীয়। এমনিতেই দেশের মধ্যে পেঁয়াজ এখন পানির দামে বিক্রি হচ্ছে, তার ওপর কিছুদিন পর নতুন ফসল আসবে। তখন কী হবে?’

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ডিসেম্বরে রফতানি নিষেধাজ্ঞা দেয়ার আগে মহারাষ্ট্রের পাইকারি বাজারগুলোতে প্রতি ১০০ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ৫০০ রুপিতে। নিষেধাজ্ঞার পর থেকে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করে। বর্তমানে বাজারগুলোতে প্রতি ১০০ কেজি পেঁয়াজের পাইকারি মূল্য ১ হাজার ২০০ রুপিতে নেমেছে। নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় দাম আরও কমতে পারে।

ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রকে দেশটির পেঁয়াজের রাজধানী বলা হয়। দেশটির পেঁয়াজের মোট চাহিদার বড় অংশই আসে এ রাজ্য থেকে।

প্রসঙ্গত, ভারত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ পেঁয়াজ রপ্তানিকারী দেশ। বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, নেপাল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ভারতীয় পেঁয়াজের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। তবে মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশেও রপ্তানি হয় ভারতীয় পেঁয়াজ।

ডিসেম্বরে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর থেকে দেশটির অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের দামে ধস নামলেও বিশ্ববাজারে দাম বাড়ছে হু হু করে। বাংলাদেশের বাজারে বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা থেকে ৭০ টাকা দরে। কয়েক দিন আগে এই দর ১২০ টাকা ছুঁয়েছিল।

ভারতের কৃষিপণ্য রপ্তানি সংক্রান্ত সরকারি সংস্থা হর্টিকালচার এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিলের (হেপা) প্রেসিডেন্ট অজিত শাহ এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি অস্বাভাবিক নয়। প্রতি বছরেই মার্চ-এপ্রিল মাসে (আন্তর্জাতিক) বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি দেখা দেয়। এতদিন ভারতীয় পেঁয়াজ এই ঘাটতি সামাল দিতো। সরকারের সিদ্ধান্তের কারণে এ বছরের তিন মাসে বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ পৌঁছায়নি, সেজন্যই এ ঘাটতি।’

‘তবে মে মাসে মিসর-তুরস্ক থেকে পেঁয়াজের চালান আসা শুরু হবে। সেসময় দামও স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে আসবে।’

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

অনির্দিষ্টকালের জন্য পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করলো ভারত

প্রকাশের সময় : ০৪:২৯:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

পেঁয়াজ রফতানিতে এবার অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করলো ভারত। এ সংক্রান্ত পরবর্তী আদেশ আসার আগ পর্যন্ত স্থগিত থাকবে পেঁয়াজ রফতানি।

শুক্রবার (২২ মার্চ) রাতে এক আদেশের মাধ্যমে অনির্দিষ্টকালের এ নিষেধাজ্ঞা দেয় দেশটির সরকার। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।

রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার এ পদক্ষেপ নিয়েছে।

এর আগে, গত ডিসেম্বরে পেঁয়াজ রফতানিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। যেটির মেয়াদ ছিল ৩১ মার্চ পর্যন্ত। ওই সময় বলা হয়েছিল, দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল রাখতে অস্থায়ী এ নিষেধাজ্ঞা।

দিল্লির এই সিদ্ধান্তে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেতে পারে শঙ্কা রয়েছে। এদিকে, মুম্বাইভিত্তিক একটি পেঁয়াজ রফতানি সংস্থার কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, এই আদেশ হতবুদ্ধিকর ও পুরোপুরি অপ্রয়োজনীয়। এমনিতেই দেশের মধ্যে পেঁয়াজ এখন পানির দামে বিক্রি হচ্ছে, তার ওপর কিছুদিন পর নতুন ফসল আসবে। তখন কী হবে?’

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ডিসেম্বরে রফতানি নিষেধাজ্ঞা দেয়ার আগে মহারাষ্ট্রের পাইকারি বাজারগুলোতে প্রতি ১০০ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ৫০০ রুপিতে। নিষেধাজ্ঞার পর থেকে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করে। বর্তমানে বাজারগুলোতে প্রতি ১০০ কেজি পেঁয়াজের পাইকারি মূল্য ১ হাজার ২০০ রুপিতে নেমেছে। নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় দাম আরও কমতে পারে।

ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রকে দেশটির পেঁয়াজের রাজধানী বলা হয়। দেশটির পেঁয়াজের মোট চাহিদার বড় অংশই আসে এ রাজ্য থেকে।

প্রসঙ্গত, ভারত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ পেঁয়াজ রপ্তানিকারী দেশ। বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, নেপাল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ভারতীয় পেঁয়াজের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। তবে মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশেও রপ্তানি হয় ভারতীয় পেঁয়াজ।

ডিসেম্বরে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর থেকে দেশটির অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের দামে ধস নামলেও বিশ্ববাজারে দাম বাড়ছে হু হু করে। বাংলাদেশের বাজারে বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা থেকে ৭০ টাকা দরে। কয়েক দিন আগে এই দর ১২০ টাকা ছুঁয়েছিল।

ভারতের কৃষিপণ্য রপ্তানি সংক্রান্ত সরকারি সংস্থা হর্টিকালচার এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিলের (হেপা) প্রেসিডেন্ট অজিত শাহ এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি অস্বাভাবিক নয়। প্রতি বছরেই মার্চ-এপ্রিল মাসে (আন্তর্জাতিক) বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি দেখা দেয়। এতদিন ভারতীয় পেঁয়াজ এই ঘাটতি সামাল দিতো। সরকারের সিদ্ধান্তের কারণে এ বছরের তিন মাসে বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ পৌঁছায়নি, সেজন্যই এ ঘাটতি।’

‘তবে মে মাসে মিসর-তুরস্ক থেকে পেঁয়াজের চালান আসা শুরু হবে। সেসময় দামও স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে আসবে।’