নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, জনগণের সরকারই সরকার পরিচালনা করছে। অদৃশ্য শক্তি দ্বারা সরকার পরিচালনা বিএনপির চরিত্র। অদৃশ্য শক্তির মানসিক ট্রমায় ভুগছে বিএনপি। অদৃশ শক্তির মাধ্যমে সরকার চালানো বিএনপির আদর্শিক চরিত্র। তাদের সময় অদৃশ অপশক্তি বিকল্প পাওয়ার সেন্টার হিসেবে হাওয়া ভবন সরকার পরিচালনা করতো।
রোববার (১২ মে) বিকেলে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বিফ্রিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপি এমন এক নির্বাচন কমিশন চায়, যে নির্বাচন কমিশন তাদের জয়ের নিশ্চয়তা দেবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, ২০০৯ সালের আগে বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা কুক্ষিগত ছিল। তখন প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় নির্বাচন কমিশন চলতো। এখন শেখ হাসিনা পার্লামেন্টে আইন পাস করে নির্বাচন ব্যবস্থা স্বাধীন করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আসছেন বলে জানিয়ে বলেন, ডোনাল্ড লু বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে কথা বার্তা বলবেন। দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক এগিয়ে নিতে তিনি আসবেন। বিএনপি মনে করেছে আবার নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেবে কি না। এই ধরনের উদ্ভট চিন্তা করছে।
তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে পাঠানো মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের চিঠির ফলোআপ করতে ডোনাল্ড লু বাংলাদেশে আসছেন।
ডোনাল্ড লু বাংলাদেশে আসা স্বাভাবিক হলেও আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কথা বলে উত্তাপ ছড়াচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা কোনো উত্তাপ ছড়াতে চাইনি। আমরা বিএনপির হাসিখুশি ভাব দেখলাম, হঠাৎ চাঙ্গা হয়ে গেছে। সামনে তো কিছু নেই। এখন ডোনাল্ড লু এসে সামনে কিছু করার অভিসন্ধি আছে কি না সেটা বিএনপিই ভালো জানে। আমাদের সঙ্গে তাদের আলোচনা হবে। আমেরিকার সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের যে চিঠি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সেটার ফলোআপ করার জন্যই আসছেন ডোনাল্ড লু। আমরা সেটাই মনে করি।
ডোনাল্ড লু বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আসছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারের সঙ্গে কথাবার্তা বলবেন। এখন বিএনপি মনে করে আবার নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দিবে কি না। এ ধরনের উদ্ভট চিন্তাও তাদের থাকতে পারে। তারা তো এমন অনেক উদ্ভট চিন্তা করে প্রলাপ বকেছিল বারবার। জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়ে বেসামাল হয়ে পড়েছে তারা।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচনে জয়ী হওয়ার নিশ্চয়তা ছাড়া বিএনপি অংশ নিতে চায় না। ফখরুল সাহেব জনস্বাস্থ্য নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলেছেন। তাদের সময় দেশের মানুষকে অর্ধাহারে, অনাহারে থাকতে হতো। ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে শুধু খাদ্য নিরাপত্তায় নিশ্চিত করেনি বরং খাদ্য উৎপাদনে উদ্বৃত্ত দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি দেশকে আবারও খাদ্য ঘাটতির দিকে নিয়ে যায়। চিকিৎসা ব্যবস্থাকে আওয়ামী লীগ সরকার যথেষ্ট উন্নত করেছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এই কমিউনিটি সেবা জাতিসংঘ কর্তৃক শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে প্রশংসিত হয়েছেন।
অন্য আরেক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা নির্বাচনের আগেই বলেছেন, দেশে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে। নেতাকর্মীদের তিনি এ ব্যাপারে সতর্ক করে দেন। শেখ হাসিনা কিন্তু বলেননি নির্বাচন হলেই সংকট কেটে যাবে। তিনি বলেছেন দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হতে পারে। সে চেষ্টা অনেকেই করছেন আন্তর্জাতিকভাবে ও দেশের অভ্যন্তরে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির সংবাদ মানেই হলো অসত্যকে সত্য বলে চালানোর সুনিপুণ কৌশল। সত্যকে পাশ কাটিয়ে মিথ্যা তথ্য তুলে ধরা, নিজের অতীত অপকর্ম ভুলে গিয়ে বিএনপি দায় অপরের ওপর চাপিয়ে দেওয়া। বিএনপির নেতারা নেতিবাচক রাজনীতিতে জড়িয়ে অবিরাম মিথ্যাচার, অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। কোন অদৃশ্য শক্তি বাংলাদেশ চালাচ্ছে পরিষ্কার করে ফখরুল সাহেব বলবেন কী?
তিনি বলেন, এখন দেশটা নাকি আমরা চালাচ্ছি না। একটা নির্বাচিত সরকার ৪২ শতাংশ ভোট পেয়ে সরকার গঠন করেছে। নিরপেক্ষ নির্বাচন বলতে যা বুঝায়, সেই রকম একটা নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশন করতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ২০০৯ সালে আগে নির্বাচন ব্যবস্থা কী ছিল? নির্বাচন কমিশন প্রধানমন্ত্রীর অধীনে ছিল। সেখান থেকে সংসদে আইন করে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন করেছেন। নির্বাচন ব্যবস্থাকে শেখ হাসিনা স্বাধীন করেছেন।
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি এমন একটা নির্বাচন কমিশন চায়, সে নির্বাচনে বিএনপিকে জিতার গ্যারান্টি দেবে। বিজয় লাভের নিশ্চয়তা ছাড়া এই দল নির্বাচনে অংশ নিতে চায় না।
এসময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দীন নাছিম, মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।