সিলেট জেলা প্রতিনিধি :
সিলেটে দশ বছর আগে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক হজরত আলী (৩৫) হত্যা মামলার পাঁচজনকে প্রাণদণ্ড দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টেবর) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক শায়লা শারমিন এ রায় দেন।
অটোরিকশা চালক হযরত আলী সুনামগঞ্জ জেলার মঙ্গলকাটা বাজারের জাহাঙ্গীরনগর এলাকার সাইদ মিয়ার ছেলে। তিনি সিলেট নগরীর দক্ষিণ সুরমা এলাকার আলমপুরে খালেদ মিয়ার কলোনিতে ভাড়া থেকে অটোরিকশা চালাতেন।
দণ্ডিরা হলেন- সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রওশন আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম (২১), শান্তিগঞ্জ উপজেলার বাদশা মিয়ার ছেলে সুমন আহমদ (১৯), একই উপজেলার ফজিল বারীর ছেলে শিপু মিয়া (১৯), মুসুক মিয়ার ছেলে জাকারিয়া মুন্ন (২০) ও হরমুজ আলীর ছেলে মো. রুহল আমিন (২০)।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেন সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী ও এপিপি আবদুস সাত্তার। তিনি বলেন, হজরত আলী হত্যা মামলায় অভিযুক্ত পাঁচ জনকেই আদালতের বিচারক মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন। মামলায় ২০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৮ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা জামিনে ছিলেন। গত ২৬ সেপ্টেম্বর আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের তারিখ থেকে তারা পলাতক রয়েছেন।’
মামলার বরাত দিয়ে আদালত সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ১৭ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে অটোরিকশা নিয়ে বের হলে আসামিরা সিলেটের বিয়ানীবাজার যাওয়ার কথা বলে ভাড়া নেন অটোরিকশা। পথিমধ্যে ছুরিকাঘাত করে চালককে ফেলে অটোরিকশা ছিনিয়ে নিয়ে যান আসামিরা। পরে আহতাবস্থায় উদ্ধার করা হলে হযরত আলী মারা যান।
এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই শুকুর আলী বাদী হয়ে বিয়ানীবাজার থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ৪ নভেম্বর পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা (এসআই) বাছিত মিয়া। মামলাটির অভিযোগ গঠনের পর আসামিদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ায় ২৪ জন সাক্ষীর ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক এ রায় দেন।
মামলায় বাদীপক্ষে কৌঁসুলি ছিলেন অ্যাডভোকেট জায়েদা বেগম এবং আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট হাসান আহমদ। রায়ে আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তাঁরা এটিকে একটি যুগান্তকারী রায় বলে উল্লেখ করেন।
রায় ঘোষণার পর নিহতের ছোট ভাই শুক্কুর আলী সাংবাদিকদের বলেন, “মামলার রায়ে আমরা খুশি। দ্রুত পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার করে ফাঁসি কার্যকর করার দাবি জানাই।’’