Dhaka শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অক্সিজেনের অভাবে গাজার হাসপাতালে ৪ জনের মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ায় গাজায় একটি হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যায় থাকা ৪ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরের নাসের হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছেন গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি এই খবর জানিয়েছে।

দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের আল-নাসের হাসপাতাল প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সেনারা ঘেরাও করে রাখার পর অভিযান চালায়। বৃহস্পতিবার হাসপাতালে অভিযান চালানোর কয়েক ঘণ্টা আগে, ইসরায়েলি বাহিনীর ছোড়া গুলিতে একজন রোগী নিহত এবং ছয়জন আহত হয় বলে কর্মীরা জানিয়েছেন।

হামাস সেখানে জিম্মিদের আটকে রেখেছে, এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তারা এই অভিযান চালিয়েছে বলে জানায়। তবে এই অভিযোগকে অস্বীকার করেছে হামাস। অভিযানের সময় হাসপাতালের কর্মী এবং রোগীরা গোলাগুলির মুখে পড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। হাসপাতালের পরিচালক বিবিসিকে বলেছেন, ‘অবস্থা বিপর্যয়কর এবং বিপজ্জনক।

এদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, ‘যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে একজন গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় অংশ নিয়েছিলেন। তিনি একজন অ্যাম্বুল্যান্স চালক এবং জিম্মিদের গাড়ি চালিয়ে গাজায় নিয়ে গিয়েছিলেন। এ ছাড়া তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন গ্রুপের একজন সদস্য।’

হাগারি আরো বলেন, ‘ওই এলাকা থেকে আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং মুক্ত করা জিম্মিদের সাক্ষ্য থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে, ইসরায়েলি জিম্মিদের ওই হাসপাতালে রাখা হয়েছিল। তবে হাসপাতালটিতে অভিযান চালিয়ে ইসরায়েলি বিশেষ বাহিনী সেখানে জিম্মিদের থাকার বিষয়ে কোনো প্রমাণ পায়নি এবং তল্লাশি এখনো অব্যাহত আছে।

চিকিৎসাকর্মীরা রোগীদের স্ট্রেচারে করে একটি ধোঁয়া বা ধুলাভর্তি করিডর দিয়ে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। অন্য আরো একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মানুষজন আসবাবপত্র এবং অন্যান্য জিনিসপত্র একটি দরজার সামনে এনে জড়ো করছে। তখন এক ব্যক্তিকে ইংরেজিতে বলতে শোনা যায়, ‘ইসরায়েলি বাহিনী হাসপাতালের ভেতর প্রবেশ করেছে।’

হাসপাতালের ভেতরে থাকা একজন নার্স বিবিসিকে বলেন, ‘অভিযান চলার সময় হাসপাতালের ভেতরে অনেকগুলো কুকুর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

হাসপাতালের পরিচালক নাহিদ আবু-তেইমা বিবিসি অ্যারাবিককে বলেন, হাসপাতাল ভবনের দৃষ্টিসীমার মধ্যে কয়েক ঘণ্টা ধরে গোলা নিক্ষেপ এবং মারাত্মক ধরনের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। হাসপাতালের রোগীদের একটি ওয়ার্ডে সারিবদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। তাদের মধ্যে অনেকে মারাত্মক আহত ছিল।

তিনি জাতিসংঘ এবং রেড ক্রসের কাছে রোগী এবং হাসপাতাল কর্মীদের রক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন।

হাসপাতালের একজন ফার্মাসিস্ট রাওয়ান আল-মুঘরাবি বিবিসিকে বলেছেন, হাসপাতালে একধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মানুষজন চিৎকার করে হুড়াহুড়ি শুরু করে, এতে অনেক মানুষ আহত হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা যখন হাসপাতালের গেট থেক বের হয়ে যাই এবং চেকপয়েন্টে পৌঁছি, পুরো হাসপাতালে পুলিশের কুকুর দিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। আমরা যখন চেকপয়েন্টে দাঁড়িয়ে ছিলাম, তখন অনেক মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। হাসপাতাল থেকে বেশির ভাগ রোগীকেই সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। শুধু যাদের অবস্থা অত্যধিক খারাপ, তাদের হাসপাতালে রাখা হয়েছিল।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার করতে করতে এখন কুসংস্কারের পথে এগোচ্ছে : গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

অক্সিজেনের অভাবে গাজার হাসপাতালে ৪ জনের মৃত্যু

প্রকাশের সময় : ০৯:১২:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ায় গাজায় একটি হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যায় থাকা ৪ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরের নাসের হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছেন গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি এই খবর জানিয়েছে।

দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের আল-নাসের হাসপাতাল প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সেনারা ঘেরাও করে রাখার পর অভিযান চালায়। বৃহস্পতিবার হাসপাতালে অভিযান চালানোর কয়েক ঘণ্টা আগে, ইসরায়েলি বাহিনীর ছোড়া গুলিতে একজন রোগী নিহত এবং ছয়জন আহত হয় বলে কর্মীরা জানিয়েছেন।

হামাস সেখানে জিম্মিদের আটকে রেখেছে, এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তারা এই অভিযান চালিয়েছে বলে জানায়। তবে এই অভিযোগকে অস্বীকার করেছে হামাস। অভিযানের সময় হাসপাতালের কর্মী এবং রোগীরা গোলাগুলির মুখে পড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। হাসপাতালের পরিচালক বিবিসিকে বলেছেন, ‘অবস্থা বিপর্যয়কর এবং বিপজ্জনক।

এদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, ‘যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে একজন গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় অংশ নিয়েছিলেন। তিনি একজন অ্যাম্বুল্যান্স চালক এবং জিম্মিদের গাড়ি চালিয়ে গাজায় নিয়ে গিয়েছিলেন। এ ছাড়া তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন গ্রুপের একজন সদস্য।’

হাগারি আরো বলেন, ‘ওই এলাকা থেকে আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং মুক্ত করা জিম্মিদের সাক্ষ্য থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে, ইসরায়েলি জিম্মিদের ওই হাসপাতালে রাখা হয়েছিল। তবে হাসপাতালটিতে অভিযান চালিয়ে ইসরায়েলি বিশেষ বাহিনী সেখানে জিম্মিদের থাকার বিষয়ে কোনো প্রমাণ পায়নি এবং তল্লাশি এখনো অব্যাহত আছে।

চিকিৎসাকর্মীরা রোগীদের স্ট্রেচারে করে একটি ধোঁয়া বা ধুলাভর্তি করিডর দিয়ে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। অন্য আরো একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মানুষজন আসবাবপত্র এবং অন্যান্য জিনিসপত্র একটি দরজার সামনে এনে জড়ো করছে। তখন এক ব্যক্তিকে ইংরেজিতে বলতে শোনা যায়, ‘ইসরায়েলি বাহিনী হাসপাতালের ভেতর প্রবেশ করেছে।’

হাসপাতালের ভেতরে থাকা একজন নার্স বিবিসিকে বলেন, ‘অভিযান চলার সময় হাসপাতালের ভেতরে অনেকগুলো কুকুর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

হাসপাতালের পরিচালক নাহিদ আবু-তেইমা বিবিসি অ্যারাবিককে বলেন, হাসপাতাল ভবনের দৃষ্টিসীমার মধ্যে কয়েক ঘণ্টা ধরে গোলা নিক্ষেপ এবং মারাত্মক ধরনের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। হাসপাতালের রোগীদের একটি ওয়ার্ডে সারিবদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। তাদের মধ্যে অনেকে মারাত্মক আহত ছিল।

তিনি জাতিসংঘ এবং রেড ক্রসের কাছে রোগী এবং হাসপাতাল কর্মীদের রক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন।

হাসপাতালের একজন ফার্মাসিস্ট রাওয়ান আল-মুঘরাবি বিবিসিকে বলেছেন, হাসপাতালে একধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মানুষজন চিৎকার করে হুড়াহুড়ি শুরু করে, এতে অনেক মানুষ আহত হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা যখন হাসপাতালের গেট থেক বের হয়ে যাই এবং চেকপয়েন্টে পৌঁছি, পুরো হাসপাতালে পুলিশের কুকুর দিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। আমরা যখন চেকপয়েন্টে দাঁড়িয়ে ছিলাম, তখন অনেক মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। হাসপাতাল থেকে বেশির ভাগ রোগীকেই সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। শুধু যাদের অবস্থা অত্যধিক খারাপ, তাদের হাসপাতালে রাখা হয়েছিল।