নিজস্ব প্রতিবেদক :
আগামী অক্টোবর মাসে মেট্রো রেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রোববার (১৮ জুন) সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মেট্রোলের লাইন ছয়ের আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী অক্টোবর মাসে এমআরটি-৬ এর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন। এরই মধ্যে মেট্রোরেলের সামগ্রিক কাজে আমরা এগিয়ে গিয়েছি। পাশাপাশি মেট্রোরেল পুলিশ গঠন করা হয়েছে। এ বিষয়টা জানার সকলেরই আগ্রহ ছিল। নির্বাচনের আগেই চালু করা হবে। প্রথমে বিমানবন্দর থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত অংশ খুলে দেওয়া হবে।
মেট্রোরেল জাতীর সম্পদ উল্লেখ করে এটি রক্ষা করতে সকলকেই দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, জরিমানা করে হলেও মেট্রোরেলের সৌন্দর্য রক্ষা করতে হবে। এসময় মেট্রোরেলে আইন-শৃংখলার বিষয়টি ভালোভাবে দেখা উচিত।
তিনি বলেন, আমাদের মোট ছয়টি এমআরটি লাইন। ২০৩০ সালের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে। এর মধ্যে তিনটার কাজের দায়িত্ব জাপান নিয়েছে। আমাদের পাতাল রেল হচ্ছে। জাপানের কাছ থেকে আমরা যথেষ্ট সহযোগিতা পাচ্ছি সেজন্য আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি জাপান সরকারকে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, যত তথ্য ময়লা ফেলা যাবে না, যত্রতত্র সিগারেট খাওয়া যাবে না। ঢাকা শহরে সিগারেট খাওয়া বন্ধ করুন। এত সম্ভাবনাময় রাজধানীর বাতাসের অবস্থা খুবই খারাপ। এটা লজ্জার কারণ। এগুলো ঠিক করতে হবে আমাদের অস্তিত্বের স্বার্থে। শুনতে চাই না, আমরা বসবাসযোগ্য শহর হব কেন? যে দেশ ডিজিটাল থেকে স্মার্ট হচ্ছে সে দেশের শহরও হতে হবে স্মার্ট। শুধু মেট্রোরেল করলে হবে না ডিসিপ্লিন অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশে মেট্রোরেলের কাজের অগ্রগতি সাড়ে পাঁচ শতাংশ বলে জানিয়ে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক বলেন, এমআরটি লাইন-৬ এর উত্তরা থেকে মতিঝিল অংশের কাজের অগ্রগতি ৯৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি ৯৪ দশমিক ৩২ শতাংশ। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনায় মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশের কাজ চলমান রয়েছে। এ অংশের কাজের অগ্রগতি ৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০২৫ সালের জুনে মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশের উদ্বোধন করা যাবে বলে আশা করছি। ইলেকট্রনিক ও মেকানিক্যাল সিস্টেম এবং রোলিং স্টক (রেলকোচ) ও ডিপো ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ কাজের সমন্বিত অগ্রগতি হয়েছে ৮৯ দশমিক ৭১ শতাংশ।
চলতি বছরের ডিসেম্বরে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করা হবে বলেও জানান মেট্রোরেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির বাংলাদেশের প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি তমোহিদে বলেন, আপনাদের এ ব্র্যান্ডিং সেমিনারে উপস্থিত হতে পেরে আমি আনন্দিত। ঢাকা মেট্রো এমআরটি আমাদের সবচেয়ে সফল প্রকল্পগুলোর একটি। এটি বাংলাদেশ-জাপানের পারস্পরিক বিশ্বাস-বন্ধুত্বের এক অনন্য উদাহরণ। ডিএমটিসিএলের প্রকৌশলীরা প্রত্যেক বছর জাপানে যেতে পারবেন, এছাড়া জাইকা থেকে সব ধরনের কারিগরি সহায়তাও অব্যাহত রাখা হবে। আপনাদের মতো ঢাকা আমারও খুব প্রিয় শহর। ঢাকার মতো এত জনবহুল শহরে এরকম প্রকল্প সম্পন্ন করা আসলেই চ্যালেঞ্জিং। ভবিষ্যতেও বাংলাদেশে জাইকার সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইয়োমাকি মিনোওরি বলেন, আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত এমআরটি লাইন-৬ বাংলাদেশ-জাপানের আরেকটি যৌথ গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম। এটি প্রমাণ করে যোগাযোগ খাতে জাপান-বাংলাদেশ কতটা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। এটি ঢাকার জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে। জাপান বাংলাদেশের উন্নয়নে ভবিষ্যতেও সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। এবং উইন-উইন সিচুয়েশনের ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস প্রমুখ।