শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:১৮ পূর্বাহ্ন

৫৬.৯৪% গড় অগ্রগতি মেট্রো রেল প্রকল্পে

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
৫৬.৯৪% গড় অগ্রগতি মেট্রো রেল প্রকল্পে
মেট্রোরেল

ঢাকাকে যানজটমুক্ত করতে সরকারের নেওয়া মেগাপ্রকল্পের মেট্রো রেলের কাজ এগিয়ে চলেছে। রাজধানীর উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত দেশের প্রথম এই মেট্রো রেলের দৈর্ঘ্য হবে সাড়ে ২১ কিলোমিটার। ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষ মাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) প্রকল্পের কাজের গড় অগ্রগতি ৫৬.৯৪ শতাংশ। এটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকা মাস ট্রানজিট কম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।

এমআরটি প্রকল্পের প্রথম অংশের (উত্তরা থেকে আগারগাঁও) কাজের অগ্রগতি ৮০.২১ শতাংশ। এ ছাড়া মতিঝিল পর্যন্ত পুরো এমআরটি লাইন-৬-এর অগ্রগতি ৫১.২৬ শতাংশ। ইলেকট্রিক্যাল মেকানিক্যাল সিস্টেম, রোলিং স্টক (রেল কোচ) ও ডিপো ইকুইপমেন্ট কাজের সমন্বিত অগ্রগতি ৪৬.৩৩ শতাংশ। এ ছাড়া মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১.১৬ কিলোমিটার বর্ধিত অংশের হাউসহোল্ড সার্ভে ও সোশ্যাল স্টাডির কাজও এরই মধ্যে শেষ হয়েছে।

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পুরোটা পথ না হলেও আগামী ১৬ ডিসেম্বরেই এই রুটের উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশের মেট্রো রেল চালু করতে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলছে। এই অংশে আগামী জুলাই মাসের মধ্যে ট্রায়াল রান করার ব্যাপারে তাঁরা আশাবাদী। আর ওই মাসের শুরুর দিকেই দেশে আসতে পারে মেট্রো রেলের কোচ।

উত্তরা দিয়াবাড়ী ডিপোসহ মেট্রো রেল প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা যায়, করোনাভাইরাস সংক্রমণে সৃষ্ট স্থবিরতা সামলে পুরোদমে এগিয়ে চলেছে প্রকল্পের কাজ। তবে আগে তিন শিফটে কাজ হয়েছে। এখন কাজ চলছে দুই শিফটে। দিয়াবাড়ী এলাকায় মেট্রো রেলের ডিপোর প্রায় ২০০ বিঘা জমিতে তৈরি হচ্ছে ৫২টি স্থাপনা। এগুলোর এক-তৃতীয়াংশের কাজ শেষ। বাকিগুলোও শেষ হওয়ার পথে। ট্রেন পরিচালনার জন্য এক হাজার ৫০০ ভোল্টের বিদ্যুৎ রিসিভিং স্টেশন নির্মাণের কাজও শেষ। এখানে থাকছে বিশাল আকৃতির এক ওয়ার্কশপ, যাতে একসঙ্গে ৩০টি রেল সার্ভিসিংয়ের সুবিধা থাকবে।

উত্তরায় নির্মাণাধীন স্টেশন-৩-এর কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। এসব কাজের মধ্যে রয়েছে টিকিট কাউন্টার, বিশ্রামাগার, স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালিত খাবারের দোকান, নামাজের জায়গা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্ট, অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স রুম, বিনা টিকিটে বা টিকিটের অতিরিক্ত যাত্রী গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মনিটরিং ব্যবস্থা, ফায়ার ফাইটিং ব্যবস্থা, এসকেলেটর বা চলন্ত সিঁড়ি। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে গুলশানে হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় মেট্রো রেল প্রকল্পের যে আট পরামর্শক নিহত হন, তাঁদের স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভও রয়েছে এখানে।

ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে জাপানের অনেক সিনিয়র নাগরিক এখনো কাজে যোগ দিতে পারেননি। এ ছাড়া রেলের ট্রায়াল দেখতে আমরা যেতে পারিনি। জাপানের তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে এটি দেখা হয়েছে। আগামী এপ্রিলে কোচগুলো দেশে আসার কথা রয়েছে।

এরপর আমরা পরীক্ষামূলকভাবে সেগুলো চালিয়ে দেখব। এই ট্রায়াল রানের বিষয়টি কোনো কোনো দেশের ক্ষেত্রে এক বছর বা তারও বেশি সময় লেগেছে। তবে আমরা দ্রুততার সঙ্গে এই ট্রায়াল রান শেষ করে আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রথম অংশ চালু করতে পারব। ২০২২ সালের মধ্যে পুরো এমআরটি লাইন-৬ চালুর সর্বোচ্চ চেষ্টা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের জুলাই মাসে শুরু হয়েছে ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষ মেট্রো রেল প্রকল্পের কাজ। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে পাঁচ হাজার ৩৯০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা এবং জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) ঋণ থেকে ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয় করা হচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া