গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এক শার্ট ৩০ বছর ধরে পরছেন । আবার একটি ছেঁড়া প্যান্টও মাঝে মধ্যেই পরেন তিনি।
বিলাসী জীবন-যাপনের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি তা করেননি। কেন তিনি এমন সাধারণভাবে চলাফেরা করেন। শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় তিনি তা ব্যাখ্যা করেছেন।
সম্প্রতি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সাক্ষাতকারের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখান তিনি এসব কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে দেখেছি এ দেশের মানুষ খালি পায়ে চলতো। আমার পুরা প্যান্ট তো ছিঁড়ে নাই, এতটুকু ছেঁড়ার জন্যে কি আমি এ প্যান্ট ফেলে দেবো? আমার শরীরের টি শার্টের বয়স ৩০ বছর। এই শার্ট যদি না ছিঁড়ে তাহলে আমি কি ছিঁড়ে ফেলবো?
তিনি বলেন, দেশের মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা দেখে তিনি সাধারণ বেশভূষায় চলতে পছন্দ করেন।
সাক্ষাতকার গ্রহণকারী সাংবাদিক জহিরুল হক জানতে চান আপনি তো বিলাসবহুল একটা গাড়িতে চলতে পারেন। আপনি ছোটো খাটো ভাঙা একটা গাড়িতে চড়েন কেন?
আরও পড়ুন : করোনাভাইরাসে দেশে মৃত্যু ও আক্রান্ত বেড়েছে
এর জবাবে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, যখন বিলেতে ছিলাম তখন সব রকম লাক্সারি জীবন যাপন করেছি। তখন আমার প্লেন চালানোর লাইসেন্স ছিল। তখনকার সময়ে আমার ক্রেডিট কার্ড ছিল। তখন ক্রেডিট কার্ডের নাম কেউ শুনেছে?
তিনি জানান, লন্ডনে থাকা অবস্থায় সেখানকার রাজ পরিবারের প্রিন্স চার্লস যে টেইলারে স্যুট সেলাই করতেন, তার স্যুটও সেখানকার দর্জি সেলাই করে দিত। এসে তার জামার মাপ নিয়ে যেতেন।
তিনি বলেন, এখন এসে বুঝি সেসব একটা ছেলে-মানুষি ছিল। ওয়েস্ট অফ মানি। অথচ এই টাকা দিয়ে আমি কতজনের উপকার করতে পারতাম।
প্রসঙ্গত, জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলার রাউজানে। বাবা-মার দশ সন্তানের মধ্যে তিনি সবার বড়। ঢাকার বকশীবাজারের নবকুমার স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট উত্তীর্ণের পর তিনি ১৯৬৪ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস এবং ১৯৬৭ সালে বিলেতের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস থেকে এফআরসিএস প্রাইমারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
ডা. জাফরুল্লাহ ১৯৭১ সালে রণাঙ্গনে ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে যেমন প্রাণ বাঁচিয়েছেন অসংখ্য আহত ও অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধার। তেমনি এই একুশ শতকে বৃদ্ধ বয়সে এসেও করোনা বিরুদ্ধে লড়ছেন।