২৭ ঘণ্টারও অধিক সময় ধরে বন্ধ হয়ে যাওয়া শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ফেরি সার্ভিস। আর এ কারণে শিমুলিয়া ঘাটে আন্দোলনে নেমেছেন শ্রমিকরা। শনিবার (১৮ জুলাই) বেলা ১২টার দিকে গত কয়েকদিন ধরে আটকা পড়া বিভিন্ন ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপসহ বিভিন্ন প্রকার পণ্যবাহী যানবাহনের শ্রমিকরা এ আন্দোলন শুরু করে।
তারা বিআইডাব্লিউটিসি শিমুলিয়া ঘাটের এজিএম-এর অফিস ঘেরাও করে ফেরি চলাচল শুরুর দাবি বিভিন্ন স্লোগান দেয়। পরে পুলিশ ও সাংবাদিকদের হস্তক্ষেপে শ্রমিকরা শান্ত হয়।
বিআইডাব্লিউটিসির এজিএম মো. শফিকুল ইসলাম জানান, বিকেলে ঢাকা থেকে সার্ভেয়ার এসে নৌপথ পরিদর্শনের পর হয়তো বিকেল ৫টার পরে বলা যাবে ফেরি চলাচল সম্ভব কি-না।
এর পূর্বে প্রবল স্রোত ও নাব্যতা সংকটে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ও মাদারীপুর শিবচরের কাঁঠালবাড়ি নৌপথে ফেরি চলাচল শুক্রবার সকাল ৯টা হতে বন্ধ হয়ে যায়। উভয় ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় আটকে আছে সহস্রাধিক বিভিন্ন প্রকারা যানবাহন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
শিমুলিয়া ঘাট ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উত্তর অঞ্চলের বন্যার পানি এ পদ্মা নদী হয়ে সাগরের দিকে যাচ্ছে। এতে নদীতে প্রচণ্ড ঘূর্ণি স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। স্রোতের সাথে পলি মাটি এসে ফেরি চলার বিভিন্ন চ্যানেল ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে গত ৮-১০ দিন ধরে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছিল। অর্ধেকের বেশি ফেরি প্রায় বন্ধ রাখতে হতো। গত কয়েকদিন ধরে এটি প্রকট আকার ধারণ করেছে। দিনের বেলায় দু-চারটি ফেরি চললেও রাতের বেলায় সেটা বন্ধ রাখতে হচ্ছে।
শুক্রবার সকালে শিমুলিয়া ঘাট থেকে তিনটি ফেরি যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে রওনা হয়। স্রোত ও নাব্যতা সংকটের জন্য চ্যানেলের মুখ দিয়ে ফেরি ঢুকতে পারছিল না। দুটি ফেরি শিমুলিয়া ঘাটে ফেরত আসলেও বিকেল সাড়ে ৪টা নাগাদ ১৫০ যাত্রী ও ২৯টি যানবাহন নিয়ে শাহ মকদুম ফেরিটি নদীতে আটকে যায়।
শিমুলিয়া ঘাটের ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক (টিআই) মো. হিলাল বলেন, ঘাটে সাড়ে আট থেকে ৯ শতাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় আছে। শিবচর ঘাটেও প্রায় একই অবস্থা। এর মধ্যে যাত্রীবাহী বাস, ছোট গাড়ি ও মালবাহী ট্রাক আছে। তবে ট্রাকের সংখ্যাই বেশি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডাব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের উপমহাব্যবস্থাপক মো.শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ আছে। স্রোতের কারণে ফেরিচলাচলের বয়াবাতি সরে যাচ্ছে। বন্যার পানির সাথে ভেসে আসা ময়লা-আবর্জনা ফেরির ইঞ্জিন বিকল করে দিচ্ছে। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে প্রায় রাতে ফেরি বন্ধ রাখতে হচ্ছে। শুক্রবার নদীতে একটি ফেরি আটকা পড়ে। পানির গতি কিছুটা না কমলে নৌ-রুটে ফেরি চলাচল সম্ভব নয়। কারণ তীব্র স্রোতের সাথে প্রতিযোগিতায় ফেরিগুলো টিকতে পারছে না। তাই বাধ্য হয়েই ফেরি চলাচল বন্ধ রাখতে হয়েছে।