নিজস্ব প্রতিবেদক :
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে ইতোমধ্যে ফেরত চেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে প্রায় এক মাস গত হলেও এখনো এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানায়নি দেশটি। এই অবস্থায় ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত না পাঠালে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তির সরাসরি লঙ্ঘন হবে বলে মনে করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ আইনসহ সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, আমরা প্রত্যর্পণের জন্য চিঠি লিখেছি। এরপর ভারত যদি শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ না করে, তবে এটা বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে প্রত্যার্পণ চুক্তি সেটার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হবে। সেই ব্যাপারে আমরা বিশ্ব সমাজে পদক্ষেপ নেব; সেটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ঠিক করা হবে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এরই মধ্যে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, আমাদের যা যা করণীয় আছে আমরা করে যাচ্ছি। আরও কিছু করণীয় থাকলে ক্ষেত্র বিশেষে চিন্তা করে আমরা করব।
আগামী ৭ দিনের মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করা হবে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের চেতনায় সংস্কার করতে আমরা নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে উদাহরণ তৈরি করে যাচ্ছি। পরবর্তী সরকার এসব পদদলিত করবে কি-না সেটা তাদেন ব্যাপার। আমরা আশা করি বিগত আওয়ামী লীগের মতো গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনৈতিক সরকার সংস্কারগুলোকে অস্বীকার করবে না।
তিনি আরও বলেন, সাইবার আইনের স্পিচ অফেন্স সংক্রান্ত ১১৩টি মামলা পাবলিক প্রসিকিউটরদের মাধ্যমে প্রত্যাহার করেছে আইন মন্ত্রণালয়। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে অবশিষ্ট মামলা প্রত্যাহার করা হবে।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগে চরম অস্বচ্ছতার জন্য ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে স্বৈরাচার আমলে। উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগে একটি কাউন্সিল করার প্রস্তাব আছে নতুন অধ্যাদেশে। প্রধান বিচারপতি, আপিল বিভাগের কয়েকজন বিচারপতিসহ ৬ সদস্যের সমন্বয়ে এ কাউন্সিল গঠিত হবে। যার নাম হবে সুপ্রিম জুডিসিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল। কোনো বিচারক উচ্চ আদালতে বিচারক হতে এখানে আবেদন করতে পারবেন।
তিনি বলেন, ৩৬ ধরনের ডকুমেন্ট আইন মন্ত্রণালয় সত্যায়ন করে। এটা ম্যানুয়াল থাকায় দিনের পর দিন মানুষের ভোগান্তি হত। এখন এটা অনলাইন করা হয়েছে। ফলে এখন দুই একদিনের মধ্যেই হবে।