ভূরুঙ্গামারী থেকে সোনাহাট স্থলবন্দরগামী অ্যাপ্রোচ সড়কের সোনাহাট ব্রিজ থেকে স্থলবন্দর পর্যন্ত সড়ক বেহালদশা হয়ে পড়েছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের পণ্য আমদানি-রপ্তানিকারকরা।
দেশের ১৮তম স্থলবন্দটির সড়ক সংস্কারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ধীরগতি ও অনিয়মের কারণে ভরা বর্ষায় খানাখন্দে ভরে গেছে। এতে বাংলাদেশ ও ভারতের পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলে একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সড়কটি।
জানা গেছে, এডিপি’র অর্থায়নে ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে ৪৪ কোটি ৬২ লাখ ৮ হাজার ৮২৪ টাকা ব্যয়ে ৩ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সোনাহাট ব্রিজ থেকে স্থলবন্দর পর্যন্ত সড়কের কাজ শুরু করা হয় গত বছরের ৫ ডিসেম্বর। সড়কটি বাস্তবায়ন করছে কুড়িগ্রাম রোডস অ্যান্ড হাইওয়ের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্টার প্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড।
বন্দর ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সড়ক সংস্কারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ধীর গতি ও চরম গাফিলাতির কারণে স্থলবন্দরগামী সড়কের বিভিন্ন স্থানে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। একটু বৃষ্টি হলেই পণ্যবাহী ট্রাক গর্তে ফেঁসে যাচ্ছে। এতে বিকল হয়ে যাচ্ছে পণ্যবাহী ট্রাক।
তারা জানান, স্থলবন্দরগামী এই সড়কে প্রতিদিন প্রায় ২০০ ভারতীয় গাড়ি বাংলাদেশে প্রবেশ করত। কিন্তু রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে গাড়ি আসছে ২০টি থেকে ৩০টি। এতে একদিকে যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার, অপরদিকে বন্দর ব্যবসায়ীদের লোকসানের পাল্লাও ভারী হচ্ছে।
ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভার আবুল হোসেন ও খলিল শেখ বলেন, পণ্যবোঝাই ট্রাক কাদা কিংবা খানা-খন্দে ফেঁসে গেলে গাড়ির অনেক যন্ত্রপাতি বিকল হয় ও ভেঙে যায়। এগুলো মেরামত করতে দুই-চার দিন সময় লেগে যায়। ফলে আমরা বাংলাদেশে ট্রাক নিয়ে আসার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি।
আমদানি ও রপ্তানিকারক ব্যবসায়ী এরশাদুল হক ক্ষোভের সাথে জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের কারণে রাস্তার এই হাল। সড়কের ডাইভারশনের কাজ শুরু করলেও ইটের খোয়ার পরিমাণ কম দিয়ে বেশিরভাগ রাবিশ দিয়ে কাজ করায় রাস্তার এই দূরাবস্থা। এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
আমদানি ও রপ্তানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে সড়কের এই অবস্থা আমরা বারবার সংশ্লিষ্টদের অবগত করলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
ব্যবসায়ীরা এলসি করলেও রাস্তার দূরাবস্থার কারণে মালামাল আনতে পারছেন না। ফলে ক্ষিতিগ্রস্ত হচ্ছেস ব্যবসায়ীরা, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
বন্দর ট্রাফিক ইন্সপেক্টর কিবরিয়া জলিল তুহিন এ প্রসঙ্গে বলেন, বর্তমানে সংক্ষুব্ধ আসাম বেল্টের কারণে এ বন্দরটি বেশির ভাগ সময়ই বন্ধ থাকে উপরোন্তু সড়ক খারাপ হওয়ার কারণে প্রতিদিন প্রায় ৮ থেকে ১০টি গাড়ি খানাখন্দে ফেসে যাওয়ায় ভারত থেকে গাড়ি কম আসছে। এতে বন্দর ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আলী নুরায়ইনের কাছে সোনাহাট স্থলবন্দরগামী সড়কটির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়ে ঠিকাদারের সাথে কথা বলেছি। তারা শিগগিরই বন্দরগামী সড়কটির কাজ শুরু করবে।