Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্লিপিং ট্যাবলেট খেলেও ভূতের ভয়ে সরকারের ঘুম আসে না : গয়েশ্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকার ভূতের ভয়ে আছে, স্লিপিং ট্যাবলেট খেলেও এই ভূতের ভয়ে তাদের ঘুম আসে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরাম আয়োজিত ‘গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, আমরা চিৎকার করি, অনেক কিছু বলি, আমাদের দুঃখ-কষ্ট মানুষ দেখে। এখন মানুষ বোঝে আমরা ইদানীংকালে কোন অবস্থানে আছি। কিন্তু সরকার যে কোন অবস্থানে আছে ওটা মানুষ দেখে না। এটা ওরা (সরকার) জানে, ওরা বোঝে। ওরা যে সুখে আছে তা না। ওরাও ভূতের ভয়ে আছে। স্লিপিং ট্যাবলেট খেলেও এই ভূতের ভয়ে তাদের ঘুম আসে না।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা কি পাকিস্তানের চেয়ে ভালো আছি? পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ১৯৬২ থেকে ১৯৭১ এ রণাঙ্গণে যুদ্ধ করেছি। কিন্তু এমন নিষ্ঠুরতা দেখিনি। আইয়ুব স্বৈরাচার ছিল, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু স্বৈরাচার হলেও রাষ্ট্র পরিচালনায় এতটা বেপোরোয়া ছিল না।

তিনি আরো বলেন, স্বৈরাচারেরও লজ্জাবোধ আছে। আর বর্তমানে যিনি ক্ষমতায় আছেন, তিনি লজ্জার আশেপাশেও নেই। এই লজ্জা হলো নৈতিকতার। এরশাদ তো প্রাতিষ্ঠানিক স্বৈরাচার। তার আমলেও এমন নিষ্ঠুরতা ছিল না। ইফতার কেড়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। অর্থাৎ, আমারা স্বৈরাচারদের নির্লজ্জ বলি। কিন্তু তাদেরও লজ্জাবোধ আছে। আর এদের (আ. লীগ সরকার) লজ্জাবোধ নেই।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আরো বলেন, আমরা গত ১৫ বছর ধরে ঐক্যের ডাক দিচ্ছি। ঐক্যের জন্য সংগ্রাম করছি। ঐক্য যখন নিশ্চিত হয়, তখন সংগ্রামটা সহজ হয়ে যায়। এই কাজটা যদি আমরা করতে না পারি তাহলে সরকার বিভেদকে নানাভাবে ব্যবহার করবে।

গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে তিনি আরো বলেন, নির্বাচনে ৬-৭ শতাংশের বেশি ভোটার ভোট দিতে যায়নি। আর যারা কেন্দ্রে গেছে বা যেতে বাধ্য হয়েছে, তারাও ভোট দিতে পারেনি। ফটোসেশানের জন্য লাইনে দাঁড় করিয়ে রেখেছে। আজকে বলতে হচ্ছে, ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ বসন্ত। তেমনি শেখ হাসিনা ভোট পাক বা না পাক, পছন্দ করেন আর না করেন, ভোট দেন বা বা না দেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী। এই প্রবাদ থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই মন্তব্য করে গয়েশ্বর বলেন, সবাইতো গণতন্ত্রের কথা বলছে, গণমাধ্যমের কথা বলছে। কিন্তু গণমাধ্যম কী স্বাধীন? আমি তো তা মনে করি না। আজকাল টেলিভিশনের টকশোতে যেভাবে নির্লজ্জভাবে কথা বলে এটা সাংবাদিকতা না। আবার মালিকদেরও একটা ব্যাপার আছে। প্রতিটা হাউজই কোনও সংবাদ যাবে কোনও সংবাদ যাবে না সেটাও বাছাই করা হয়। এখন সরকারের প্রশংসা আর চাটুকারিতা করতে করতে অনেকে শত কোটি টাকার মালিক হয়ে গিয়েছেন। সাংবাদিকের স্বাধীনতা থাকলে তারা লিখতে পারবে। কিন্তু মালিকরা সরকারকে ব্ল্যাকমেইল করে, তাই তারা লিখতে পারে না।

বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আ.ক.ম মোজাম্মেল হক, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি রুহুল আমীন গাজী, মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাড. পারভেজ হোসেন, বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের উপদেষ্টা রোটারীয়ান এম নাজমুল হাসান প্রমুখ।

আলোচনা সভা শেষে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) নির্বাচিত নেতাদের বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না খালেদা জিয়া, তারেক রহমান বা বিএনপি : শামা ওবায়েদ 

স্লিপিং ট্যাবলেট খেলেও ভূতের ভয়ে সরকারের ঘুম আসে না : গয়েশ্বর

প্রকাশের সময় : ০৭:১৯:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকার ভূতের ভয়ে আছে, স্লিপিং ট্যাবলেট খেলেও এই ভূতের ভয়ে তাদের ঘুম আসে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরাম আয়োজিত ‘গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, আমরা চিৎকার করি, অনেক কিছু বলি, আমাদের দুঃখ-কষ্ট মানুষ দেখে। এখন মানুষ বোঝে আমরা ইদানীংকালে কোন অবস্থানে আছি। কিন্তু সরকার যে কোন অবস্থানে আছে ওটা মানুষ দেখে না। এটা ওরা (সরকার) জানে, ওরা বোঝে। ওরা যে সুখে আছে তা না। ওরাও ভূতের ভয়ে আছে। স্লিপিং ট্যাবলেট খেলেও এই ভূতের ভয়ে তাদের ঘুম আসে না।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা কি পাকিস্তানের চেয়ে ভালো আছি? পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ১৯৬২ থেকে ১৯৭১ এ রণাঙ্গণে যুদ্ধ করেছি। কিন্তু এমন নিষ্ঠুরতা দেখিনি। আইয়ুব স্বৈরাচার ছিল, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু স্বৈরাচার হলেও রাষ্ট্র পরিচালনায় এতটা বেপোরোয়া ছিল না।

তিনি আরো বলেন, স্বৈরাচারেরও লজ্জাবোধ আছে। আর বর্তমানে যিনি ক্ষমতায় আছেন, তিনি লজ্জার আশেপাশেও নেই। এই লজ্জা হলো নৈতিকতার। এরশাদ তো প্রাতিষ্ঠানিক স্বৈরাচার। তার আমলেও এমন নিষ্ঠুরতা ছিল না। ইফতার কেড়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। অর্থাৎ, আমারা স্বৈরাচারদের নির্লজ্জ বলি। কিন্তু তাদেরও লজ্জাবোধ আছে। আর এদের (আ. লীগ সরকার) লজ্জাবোধ নেই।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আরো বলেন, আমরা গত ১৫ বছর ধরে ঐক্যের ডাক দিচ্ছি। ঐক্যের জন্য সংগ্রাম করছি। ঐক্য যখন নিশ্চিত হয়, তখন সংগ্রামটা সহজ হয়ে যায়। এই কাজটা যদি আমরা করতে না পারি তাহলে সরকার বিভেদকে নানাভাবে ব্যবহার করবে।

গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে তিনি আরো বলেন, নির্বাচনে ৬-৭ শতাংশের বেশি ভোটার ভোট দিতে যায়নি। আর যারা কেন্দ্রে গেছে বা যেতে বাধ্য হয়েছে, তারাও ভোট দিতে পারেনি। ফটোসেশানের জন্য লাইনে দাঁড় করিয়ে রেখেছে। আজকে বলতে হচ্ছে, ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ বসন্ত। তেমনি শেখ হাসিনা ভোট পাক বা না পাক, পছন্দ করেন আর না করেন, ভোট দেন বা বা না দেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী। এই প্রবাদ থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই মন্তব্য করে গয়েশ্বর বলেন, সবাইতো গণতন্ত্রের কথা বলছে, গণমাধ্যমের কথা বলছে। কিন্তু গণমাধ্যম কী স্বাধীন? আমি তো তা মনে করি না। আজকাল টেলিভিশনের টকশোতে যেভাবে নির্লজ্জভাবে কথা বলে এটা সাংবাদিকতা না। আবার মালিকদেরও একটা ব্যাপার আছে। প্রতিটা হাউজই কোনও সংবাদ যাবে কোনও সংবাদ যাবে না সেটাও বাছাই করা হয়। এখন সরকারের প্রশংসা আর চাটুকারিতা করতে করতে অনেকে শত কোটি টাকার মালিক হয়ে গিয়েছেন। সাংবাদিকের স্বাধীনতা থাকলে তারা লিখতে পারবে। কিন্তু মালিকরা সরকারকে ব্ল্যাকমেইল করে, তাই তারা লিখতে পারে না।

বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আ.ক.ম মোজাম্মেল হক, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি রুহুল আমীন গাজী, মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাড. পারভেজ হোসেন, বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের উপদেষ্টা রোটারীয়ান এম নাজমুল হাসান প্রমুখ।

আলোচনা সভা শেষে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) নির্বাচিত নেতাদের বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।