শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:২৬ অপরাহ্ন

স্বাস্থ্যসম্মত গণপরিবহন ব্যবস্থা হচ্ছে ঢাকায়

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : মঙ্গলবার, ২৮ জুলাই, ২০২০
প্রতিকী ছবি

করোনা-উত্তর সময়ের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত গণপরিবহন ব্যবস্থা হবে ঢাকায়। সড়ক নিরাপত্তায় বিশ্বব্যাংক প্রতিশ্রুত ২৫ কোটি ডলার এ কাজে ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, করোনার পর ঢাকায় যেসব গণপরিবহন চালানো হবে, সেগুলো দুই দরজাবিশিষ্ট হওয়ার ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। বাসগুলোর জ্বালানীর জন্য ভাবা হচ্ছে গ্রিন টেকনোলজির কথা। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে যেন যাত্রীরা বসতে পারেন, সেজন্য বাসগুলোয় কাঠামোগত কিছু পরিবর্তন আনার কথাও বলা হচ্ছে।

 

টানা ৬৬ দিন বন্ধ রাখার পর যখন ঢাকাসহ সারা দেশে গণপরিবহন চালু হয়, তখন যাত্রী-চালক-শ্রমিকদের জন্য বেশকিছু শর্ত জুড়ে দেয় সরকার। অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রী তোলা, দাঁড়ানো যাত্রী তোলায় নিষেধাজ্ঞা, সময়মতো গাড়ি জীবাণুমুক্ত করার পাশাপাশি সবার জন্য বাধ্যতামূলক হয়েছে মাস্ক পরা। এসব নিয়ম মেনেই গত দুমাস ধরে চলছে ঢাকাসহ সারা দেশের গণপরিবহন। কোথাও কোথাও এসব শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগও রয়েছে। তবে এসব বিধিনিষেধ সীমিত সময়ের জন্য।

করোনা-উত্তর সময়ের জন্য রাজধানীতে স্বাস্থ্যসম্মত গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাইছে সরকার। সড়ক নিরাপত্তায় বিশ্বব্যাংক প্রতিশ্রুত ২৫ কোটি ডলার এ কাজে ব্যবহারের পরিকল্পনাও হচ্ছে।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, পরিকল্পনাধীন ও বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে যেমন স্বাস্থ্যসম্মত গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে, তেমনি নতুন প্রযুক্তি আর কারিগরি কৌশলেরও সংমিশ্রণ ঘটানো হবে।

রাজধানীতে স্বাস্থ্যসম্মত গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হচ্ছে বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশনকে। ঢাকার বাস ব্যবস্থাপনায় কাঠামোগত পরিবর্তন আনতে এ উদ্যোগের পরিকল্পনা প্রথম জানিয়েছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন মরহুম মেয়র আনিসুল হক। তার মৃত্যুর পর অনেক আলোচনা হলেও বিষয়টি নিয়ে খুব বেশিদূর এগোতে পারেনি সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলো।

বর্তমান ঢাকার জন্য কোম্পানিভিত্তিক বাস ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার কাজটির দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডিটিসিএ বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশনের জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তুত করছে।

বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশনের পাশাপাশি ঢাকায় স্বাস্থ্যসম্মত গণপরিবহন গড়ে তুলতে বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট বা বিআরটি গড়ে তোলার ওপরও গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। বর্তমান গাজীপুর থেকে ঢাকার বিমানবন্দর পর্যন্ত দেশের প্রথম বিআরটি নির্মাণাধীন রয়েছে। এ লাইনটির দক্ষিণ অংশ কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত করার কথা থাকলেও নানা জটিলতায় তা মহাখালী পর্যন্ত সীমিত রাখার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে সরকার।

সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, সওজ অধিদপ্তর, সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ, সড়ক পরিবহন করপোরেশন, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কর্মকর্তাদের নিয়ে এ সম্পর্কিত একটি ভার্চুয়াল সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সভায় করোনা-উত্তর স্বাস্থ্যসম্মত পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশন, গ্রিন টেকনোলজি, দুই দরজাবিশিষ্ট বাসসহ বাসের কাঠামোগত নানা পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা হয়। করোনা-উত্তর পরিস্থিতিতে যাত্রী, চালক ও পরিবহন শ্রমিকদের সুরক্ষার জন্য বাস ব্যবস্থাপনায় এসব পরিবর্তন অপরিহার্য বলে মত দেন সভায় উপস্থিত সবাই।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ঢাকায় স্বাস্থ্যসম্মত গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সরকারের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সমন্বয়ক সংস্থা হিসেবে কাজ করবে। সওজ অধিদপ্তরের আওতাধীন যেসব সংস্থা, দপ্তর ও বিভাগ রয়েছে, বিষয়টি নিয়ে প্রত্যেকে আলাদাভাবে একটি প্রকল্প প্রস্তাব করবে।

বিষয়গুলো দেখাশোনার জন্য একটি কমিটিও করে দেয়া হয়েছে। সওজ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ড. আব্দুল্লাহ আল মামুনকে কমিটির সমন্বয়ক ও আহ্বায়কের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সওজ

অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এ কে মোহাম্মদ ফজলুল করিম, শিশির কান্তি, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের যুগ্ম সচিব আনিসুর রহমান ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের পরিচালক (অপারেশন) শীতাংশু বিশ্বাসকে কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।

 

করোনা-উত্তর কালের জন্য ঢাকায় স্বাস্থ্যসম্মত গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এ কমিটির সমন্বয়ক ও আহ্বায়ক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে এ সম্পর্কিত একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমরা বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছি। প্রকল্প তৈরির কাজ চলছে। এ কাজ শেষ হলে বিষয়গুলো নিয়ে আরো বিস্তারিত জানানো সম্ভব হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া