সৌদি আরবের যাওয়ার জন্য সৌদি এয়ারলাইন্সের বিমান টিকিটের দাবিতে ঢাকার কারওয়ান বাজারে বিক্ষোভ করেছে প্রবাসী কর্মীরা। রাস্তার দাঁড়িয়ে বিক্ষোভের কারণে কারওয়ান বাজার এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সৃষ্টি হয় ভয়াবহ যানজটের। মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিক্ষোভ চলতে থাকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কাওরান বাজারে সৌদি এয়ারলাইন্সের কার্যালয়ের সামনে মঙ্গলবার সকাল থেকে কয়েক শ টিকেট প্রত্যাশী বিক্ষোভ করতে শুরু করেন। এই সময় ঢাকার প্রধান সড়কটির যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বিক্ষোভকারীদের অনেকে জানান, চলতি মাসের মধ্যে সৌদি আরবে যেতে না পারলে তাদের চাকরি হারাতে হবে। আবার অনেকে বলছেন, তাদের ভিসার মেয়াদ চলতি মাসেই শেষ হয়ে যাবে। একজন বিক্ষোভকারী বলেন, ‘আমার স্পন্সর বলছে, যেভাবে পারো ৩০ তারিখের মধ্যে সৌদি আরব আসো। না হলে আর আসতে পারবা না। কিন্তু টিকেট তো পাই না।’
তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাহ উদ্দিন মিয়া জানান, তারা টিকেট প্রত্যাশীদের বুঝিয়ে রাস্তা থেকে সরিয়ে নিয়েছেন।
গত কয়েকদিন ধরে হঠাৎ করে ঢাকার সৌদি এয়ারলাইন্সের প্রধান টিকিট বিক্রয় কেন্দ্রের সামনের সড়কে টিকেট প্রত্যাশী শত শত শ্রমিক ভিড় করতে থাকেন। মূলত তারা সৌদি আরবে আগে থেকেই কাজ করতেন কিন্তু দেশে এসে করোনা পরিস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকায় আটকা পড়েন। তাদের মধ্যে নতুন শ্রমিক, যাদের সৌদি আরব যাওয়ার জন্য ভিসা, নিয়োগপত্রসহ সব কিছু প্রস্তুত, এমন শ্রমিকও রয়েছেন।
বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মহিবুল হক গতকাল সোমবার বলেন, এই জটিলতা শুরু হয়েছে যখন সৌদি সরকার হঠাৎ করেই ঘোষণা দিয়েছে যে শ্রমিকদের সেপ্টেম্বরের ৩০ তারিখের মধ্যে সৌদি আরবে ফিরতে হবে।
আরও পড়ুন : করোনায় বিমান ডানা না মেলায় ক্ষতি ২৮০০ কোটি টাকা
মহামারির কারণে মার্চের শেষের দিকে সৌদি আরবের সঙ্গে সকল আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকায় অনেক শ্রমিক দেশে এসে আর ফিরতে পারেননি। অনেক শ্রমিক রয়েছেন যাদের বৈধ পাসপোর্ট, আকামা বা সৌদি আরবে কাজের অনুমতিপত্র এবং বিমান টিকেট থাকা সত্ত্বেও তারা যেতে পারেননি।
অনেকেরই ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে বা যাওয়ার পথে। এদের সংখ্যা দুই লাখের মতো। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শ্রমিকের গন্তব্য সৌদি আরব। তাদেরকে এ মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে সৌদি আরবে যেতে বলা ছাড়াও সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে সৌদি আরবের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পুনরায় চালুর একটা ঘোষণা এসেছিল সেখানকার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে।
বাংলাদেশের সরকারি বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সও সৌদি সরকারের শর্ত সাপেক্ষে ফ্লাইট আংশিকভাবে চালু করতে চেয়েছিল। কিন্তু সৌদি আরবের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সেই অনুমতি বাংলাদেশ বিমানকে দেয়নি। এরপর বাংলাদেশও সৌদি এয়ারের ফ্লাইট চলাচলের অনুমতি বাতিল করে দেয়।
কর্মকর্তারা বলছেন, অক্টোবরের এক তারিখ থেকে বিমান বাংলাদেশ ও সৌদি এয়ারলাইন্স ২৩শে সেপ্টেম্বর থেকে ফ্লাইট পরিচালনা করবে। তবে যে যাত্রীর কাছে সৌদি আরব যাওয়ার ফিরতি টিকিট রয়েছে কেবল তাদের আসন বরাদ্দ করা হবে।