শনিবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৪:৫০ অপরাহ্ন

সেতু সংস্কারের অভাবে দুর্ভোগে পাঁচটি গ্রামের মানুষ

জামালপুর জেলা প্রতিনিধি
আপডেট : শুক্রবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৩
সেতু সংস্কারের অভাবে দুর্ভোগে পাঁচটি গ্রামের মানুষ

জামালপুর জেলা প্রতিনিধি : 

জামালপুরের মেলান্দহের ঝারকাটা নদীর ওপর নির্মিত ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু সংস্কারের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন আশপাশের পাঁচটি গ্রামের অন্তত ১৫ হাজার মানুষ।

সরেজমিনে দেখা যায়, নদী পাড়ি দিতে দক্ষিণ পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে কয়েকজন শিক্ষার্থী। নৌকা ওপারে থাকায় এখানে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তারা। অথচ স্কুলের সময় হয়ে যাওয়ার পরও তাদের কিছুই করার নেই। কেননা নৌকায় তাদের একমাত্র ভরসা। প্রতিদিন নৌকা দিয়েই পার হতে হয় তাদের। একটি ছোট নৌকায় গাদাগাদি করে উঠেছে ১৫-২০ জন।

স্থানীয়রা জানায়, পাঁচ বছর আগে উপজেলার গোদার বাজার এলাকায় ঝারকাটা নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি ধসে যায়। এতে নদীর দক্ষিণ পাড়ে ঘোষেরপাড়া মিলন বাজার, উত্তরে গোদার বাজার, পুরাতন তালুকপাড়া বাজার, পূর্ব ছবিলাপুর ও বীর ঘোষেরপাড়াসহ পাঁচ গ্রামের ১৫ হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত সদরে যাতায়াত করেন।

সেতুটি ভেঙে পড়ায় প্রতিদিন তাদের দুর্ভোগ নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। বর্তমানে নৌকায় তাদের একমাত্র ভরসা। তবে বর্ষার সময় চরম দুর্ভোগের শিকার হন এসব কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। মাঝেমধ্যে নৌকার কারণে তারা সঠিক সময়ে স্কুলে পৌঁছাতে পারে না।

সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাজু জানায়, সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে নদী পার হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। কার আগে কে উঠবে এ নিয়ে চলে প্রতিযোগিতা। নদী পার না পারলে পাঁচ কিলোমটার পথ ঘুরে তাদের বিদ্যালয়ে যেতে হয়। নদী পারাপার হতে গিয়ে তাদের অনেক ভয় লাগে।

ঘোষেরপাড়া এলাকার বাসিন্দা হাফিজুর জানান, সেতু নির্মাণের সময় ভেবেছিলাম আমাদের দুঃখ ঘুচলো। কিন্তু কয়েক বছর যাওয়ার পর এ সেতু হয়ে গেলো গলার কাটা। এখন সেতু সচল না থাকায় ৫-৬ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে যেতে হচ্ছে আমাদের।

বেলতৈল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৭০০। নদীর পশ্চিম পাড় হতে তিনজন শিক্ষকসহ তিন শতাধিক শিক্ষার্থী প্রতিদিন এ পথ পাড়ি দিয়ে স্কুলে আসেন। নদীর পারাপারে তাদের একমাত্র ভরসা নৌকা। কিন্তু সেতু সচল না থাকায় দুর্ভোগ বেড়েছে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের।

ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সাইদুল ইসলাম লিটু বলেন, পাঁচ বছর আগে বন্যায় সেতুটি ভেঙে গেছে। সেতু ভাঙা থাকায় এলাকার লোকজন দুর্ভোগে পড়েছেন। সেতু নির্মাণ করা হলে মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হবে।

উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) শুভাশীষ রায় বলেন, ইতোমধ্যে আমরা জায়গাটি পরিদর্শন করেছি। সেতুটি মেরামত করা সম্ভব নয়। তবে সেতুটি নতুন করে নির্মাণ করার জন্য বরাদ্দ চেয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এখনো বরাদ্দ মেলেনি। বরাদ্দ পেলে ওই স্থানে নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সেলিম মিঞা বলেন, এ স্থানে নতুন একটি সেতু নির্মাণের জন্য জেলা প্রশাসকসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া

%d
%d