বলিউডে ‘কাহো না পেয়ার হ্যায়’ দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন আমিশা পাটেল। প্রথম ছবিই সুপারহিট। এরপর দ্বিতীয় ছবিও সুপারহিট। এরপর অভিনয়ের তুলনায় বেশি পরিচিত ব্যক্তিগত জীবনে বিতর্কের সুবাদে।
রক্ষণশীল পরিবারের ধারা ভেঙে আমিশা নাটকে অভিনয় এবং মডেলিং শুরু করেন। বেশ কিছু পণ্যের বিজ্ঞাপনে তিনি হয়ে ওঠেন পরিচিত মুখ।
১৯৯৯ সালে উর্দু নাটক ‘নীলম’-এ মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করার সময় তিনি রাকেশ রোশনের চোখে পড়ে যান। আমিশার বাবা ছিলেন রাকেশ রোশনের ছোটবেলার বন্ধু।
সেই সূত্রেই আমিশার কাছে ‘কাহো না পেয়ার হ্যায়’ ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব আসে। ছেলে হৃতিককে লঞ্চ করার জন্য নায়িকার ভূমিকায় নতুন মুখ খুঁজছিলেন রাকেশ।
২০০০ সালে ‘কাহো না প্যায়ার হ্যায়’ হৃতিক আমিশাকে আকাশছোঁয়া সাফল্য দেয়। এরপর আমিশা ‘বদ্রী’ নামে একটি দক্ষিণী ছবিতে অভিনয় করেন। সেটিও বক্সঅফিসে খুবই সফল হয়েছিল।
আরও পড়ুন : দক্ষিণী অভিনেত্রী কাজল চুপিচুপি বাগদান সারলেন
পরপর সাফল্যের সুবাদে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ পেতে সমস্যা হচ্ছিল না আমিশার। প্রথম দুই ছবির সাফল্যকে ছাপিয়ে গেল আমিশার তৃতীয় ছবি ‘গদর এক প্রেম কথা’।
পরে এক সাক্ষাৎকারে আমিশা বলেছিলেন, তিনি ‘গদর’ ছবির অফার পেয়েছিলেন ‘কাহো না প্যায়ার হ্যায়’তে অভিনয়ের আগেই। পাঁচশো জন তরুণীর সঙ্গে অডিশন দিয়ে মনোনীত হয়েছিলেন আমিশা।
ছবিতে তার লুক নিয়েও দীর্ঘ আলোচনা হয়েছিল। বক্স অফিসে সুপারহিট ছবির হ্যাটট্রিকের দৌলতে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছান আমিশা। কিন্তু ক্যরিয়ারে সাফল্যের মতো ব্যর্থতাও এল বেশ তাড়াতাড়ি।
হৃতিকের বিপরীতে আমিশার দ্বিতীয় ছবি ‘আপ মুঝে অচ্ছে লগনে লগে’ ফ্লপ হয়। এরপর আরও কিছু ছবি বক্স অফিসে লক্ষ্মীলাভ করেনি। ‘ক্রান্তি’, ‘ক্যায়া এহি প্যায়ার হ্যায়’, ‘ইয়ে হ্যায় জলওয়া’, ‘পরওয়ানা’-সহ বেশ কিছু ছবি মুখ থুবড়ে পড়ে। বড় নায়কের সঙ্গে স্ক্রিনশেয়ার করেও এই
ছবিগুলিতে কিছু করে উঠতে পারেননি আমিশা। সুপারফ্লপ নায়িকার খেতাব জুড়ে যায় তার নামের পাশে।
সেই সময়ে বিতর্ক শুরু হয় তার ব্যক্তিগত জীবন ঘিরে। বাবা মাকে আইনি নোটিস পাঠিয়ে বসেন আমিশা! নায়িকার অভিযোগ ছিল, তার বারো কোটি টাকা নিয়ে ফেরত দেননি তার বাবা মা।
এই ঘটনায় পাটেল দম্পতির অভিযোগ ছিল পরিচালক বিক্রম ভট্টের দিকে। ‘আপ মুঝে অচ্ছে লগনে লগে’ ছবিতে অভিনয়ের সুবাদে তার সঙ্গে পরিচয় আমিশার। ক্রমে তার থেকে প্রেম এবং তার পর লিভ ইন।
যদিও আমিশার উপার্জন ও অন্যান্য আর্থিক হিসেব দেখভাল করতেন তার বাবা-ই। তিনি মেয়ের থেকে বারো কোটি টাকা নিয়ে বিনিয়োগ করেছিলেন তার ব্যবসায়। তার অভিযোগ ছিল, পরিচালক বিক্রম ভাটের ইন্ধনেই এই টাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তার মেয়ে।
অন্যদিকে, আমিশার অভিযোগ ছিল, তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে এই টাকা নেওয়া হয়েছে। পরে বিক্রম ভাটের মাকেও আমিশার বাবা মা হুমকি দেন বলে অভিযোগ। এই মর্মে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন বিক্রমের মা।
এত সব কিছুর পরে বিক্রমের সঙ্গে আমিশার সম্পর্ক পাঁচ বছরের বেশি স্থায়ী হয়নি। বিচ্ছেদের মূলে অবশ্য ছিল দু’জনেরই ক্যরিয়ারে ব্যর্থতা। সে সময় বলিউডে কঠোর পরিশ্রম করা ছাড়া উপায় ছিল না আমিশার।
তারপরেও সুযোগ না পেয়ে তিনি তেলুগু ছবিতে অভিনয় শুরু করেন। আমির খানের বিপরীতে ‘মঙ্গল পাণ্ডে’ এবং অক্ষয়কুমারের বিপরীতে ‘মেরে জীবনসাথী’ ছবিও আমিশার ক্যরিয়ারের ছিঁড়ে যাওয়া পালে নতুন হাওয়া লাগাতে পারেনি।