মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:২৩ পূর্বাহ্ন

সীমান্তে ভারতীয়দের উপর নেপালি পুলিশের গুলির ঘটনা বেড়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আপডেট : সোমবার, ২৭ জুলাই, ২০২০

ভারত-নেপাল সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ছে এবং সন্দেহ ছাড়াই ভারতীয় নাগরিকদের উপর গুলি চালানোর ঘটনা বাড়ছে। শতছিদ্র সীমান্তের ভারতীয় অংশে বসবাসরত মানুষেরা উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে, কারণ ভারতীয়দের উপর নেপাল আর্মড পুলিশ ফোর্সের বিনা উষ্কানিতে গুলিবর্ষণের ঘটনা বেড়ে গেছে।

খারসালওয়া সীমান্তের কাছে চিরোখার পুলিশ স্টেশন এলাকাতে নেপালের আর্মড পুলিশ বৃহস্পতিবার ফাঁকা গুলিবর্ষণ করেছে। এক ভারতীয় নারী অসাবধানতাবশত নেপালের ভূখণ্ডে তার গবাদিপশুর জন্য ঘাস কাটতে ঢুকে পড়েছিল। নেপালি আর্মড পুলিশ বাহিনী তাকে নির্দয়ভাবে পিটিয়েছে এবং পরে ইস্ট চাম্পারানের একটি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করে।

নেপালের আর্মড পুলিশরা বাতাসে ফাঁকা গুলিও ছুড়েছে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যখন দুই পক্ষের শত শত মানুষ নো ম্যান্স ল্যান্ডে জড়ো হয়। পরে, ইস্ট চাম্পারানের সিনিয়র কর্মকর্তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষের মানুষদের শান্ত করেন।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য দুই পক্ষের পক্ষ থেকে পঞ্চায়েৎ আহ্বান করা হয়।

এটা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এই ঘটনার মাত্র চারদিন আগে, কিষানগঞ্জ এলাকাতে নেপালি পুলিশের গুলি বর্ষণের খবর পাওয়া গেছে। জিতেন্দর সিং নামের এক ভারতীয় সেখানে তার তিন বন্ধুকে নিয়ে নিজের গবাদি পশুর খোঁজে নো ম্যান্স ল্যাণ্ড ঢুকে পড়েছিল। নেপালি আর্মড পুলিশ তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় এবং তার কাঁধে গুলি লাগে। ১৫২ নম্বর পিলারের কাছে এই ঘটনা ঘটে।

গত মাসে, বিকাশ রায় নামে পরিচিত এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। অন্য দুজন গুলিতে আহত হয় এবং নেপালি পুলিশ ১২ জুন একজনকে ধরে নিয়ে যায়। বিহার জেলার সিতামুরহির লাল বান্দি সীমান্ত থেকে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।

শুধু তাই নয়, লাগান রায় নামের এক ব্যক্তিকে নেপালের আর্মড পুলিশ ধরে নিয়ে ২৪ ঘন্টা আটকে রাখে এবং তার উপর নির্যাতন চালায়। ২৪ ঘন্টা পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এই সব ঘটনা সীমান্তে বসবাসরত মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেছে। বহু বছর ধরে, দুই দেশের মানুষের মধ্যে কোন পার্থক্য ছিল না। কিন্তু বিগত দুই মাস ধরে উত্তেজনা অনেক বেড়েছে এবং নেপালি আর্মড পুলিশ ভারতীয়দের উপর গুলি বর্ষণ করছে। সীমান্তের দুই পারের মানুষের কাছেই এই ধরণের অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ নতুন। সাম্প্রতিক অতীতে, নেপালি আর্মড পুলিশ রাক্সাউল এলাকায় ভারতীয় ভূখণ্ডের মধ্যে নজরদারি টাওয়ার এবং অস্থায়ী আউটপোস্ট স্থাপন করেছিল। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে সেগুলো পরে সরিয়ে দেয়া হয়। বিভিন্ন জায়গায় নেপান সীমান্ত বিবাদের ইস্যুটি নতুন করে উসকে দিচ্ছে।

ইস্ট চাম্পারানের গোয়াবারিতে নেপালি কর্তৃপক্ষ ভারতীয় প্রকৌশলীদের বাঁধ মেরামত করতে দিচ্ছে না। লাল বাকিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য এটা মেরামত করাটা জরুরি।

নেপালে লকডাউনের শুরু থেকেই নেপালের মধ্যে ভারতীয়দের প্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং নেপালে যাদের আত্মীয়-স্বজন রয়েছে, তারা নো-ম্যান্স ল্যাণ্ডে গিয়ে দেখা-সাক্ষাৎ করছে। এখন, ভারতীয়দের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে এবং জনগণ মনে করছে যে, চীনের পক্ষ হয়ে নেপাল ভারতীয়দের জন্য তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করছে। সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া

%d bloggers like this:
%d bloggers like this: