বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:১৪ পূর্বাহ্ন

সিলেট বিমানবন্দর-বাদাঘাট-তেমুখী সড়কের কাজ ফের শুরু

সিলেট প্রতিনিধি
আপডেট : শনিবার, ১৫ আগস্ট, ২০২০
সিলেট বিমানবন্দর-বাদাঘাট-তেমুখী সড়কের কাজ ফের শুরু
সড়কের বেহাল দশা

প্রায় ৯ বছর বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয়েছে সিলেট বিমানবন্দর-বাদাঘাট-তেমুখী সড়কের কাজ। প্রথমে দুই লেনে নির্মিত সড়কটি এবার চার লেনে নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
এরই অংশ হিসেবে ৮ আগস্ট সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল সড়কটি পরিদর্শন করে।

জানা গেছে, সিলেটের বিমানবন্দর-বাদাঘাট-তেমুখী সড়কের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১০-১১ অর্থবছরে। প্রায় ৪৫ কোটি টাকার এ সড়ক অর্ধেক নির্মাণের পর হঠাৎ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এতে ব্যয় হয় ২৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

প্রায় নয় বছর পর পুনরায় এ সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। প্রথমে দুই লেনে নির্মিত সড়কটি এবার চার লেনে নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে ৮ আগস্ট সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল সড়কটি পরিদর্শন করে।

তবে চার লেনের প্রকল্প প্রস্তাবের সঙ্গে তৈরি করা নকশাটি ত্রুটিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন তারা। এ সময় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা নকশা সংশোধন করে দ্রুত পাঠানোর জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের সিলেট অফিসের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।

আরও পড়ুন : পরিস্থিতির উন্নতি হলেই দেশে আসবে মেট্রোর প্রথম ট্রেন

জানা যায়, দেশের অন্যতম বৃহৎ পাথর কোয়ারি সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থেকে অসংখ্য পাথরবাহী ট্রাক নগরীর ভেতর দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। ট্রাকের কারণে নগরীতে লেগে থাকে যানজট, দুর্ঘটনাও ঘটছে নিয়মিত।

এতে পাথরবাহী ট্রাক যাতে নগরীর ভেতরে প্রবেশ করতে না হয়, এজন্য বিমানবন্দর-বাদাঘাট-তেমুখী সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল।

২০১০ সালের আগস্টে এ সড়কের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ৪৫ কোটি ৪২ লাখ ৯৬ হাজার টাকা ব্যয়ে এ সড়কের কাজ শুরু হয় ২০১১ সালে। ২৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় করার পর ২০১৪ সালে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় এ প্রকল্পের কাজ।




 

সওজের প্রকৌশল বিভাগ সূত্র জানায়, কাজ শুরুর এক বছর পর লাক্কাতুরা চা বাগান এলাকায় সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়াম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেনু হিসেবে ঘোষণা হওয়ায় এ সড়কের গুরুত্ব বেড়ে যায়।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটকে সামনে রেখে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে সড়ক নির্মাণকাজ সম্পন্নের তোড়জোড় শুরু হয়। কিন্তু ওই সময়ে কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় প্রকল্পটি ঝুলে যায়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন না করায় অর্থ বরাদ্দ স্থগিত করা হয়। এর পর থেকে আর কাজ হয়নি।

দীর্ঘদিন আটকে থাকার পর এ সড়ককে চার লেনে উন্নীত করতে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ২০১৬ সালে সেই প্রস্তাবনা পাঠানো হয় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে।

পরের বছর আগের প্রস্তাবনা সংশোধন করে চার লেন সড়কের সঙ্গে দুটি সার্ভিস লেন যুক্ত করে নতুন প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এতে মন্ত্রণালয় সম্মত না হওয়ায় গত বছর ফের চার লেনের প্রস্তাবনা যায় মন্ত্রণালয়ে।

তবে প্রস্তাবনার সঙ্গে সিলেট সড়ক বিভাগের তৈরি করা এ নকশা (ম্যাপ) ত্রুটিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম প্রধান জাকির হোসেন। ৮ আগস্ট তার নেতৃত্বেই সড়কটি পরিদর্শনে আসে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল।

এ সময় ত্রুটিপূর্ণ নকশার কারণে অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রতিনিধি দলের প্রধান। তিনি দ্রুত অভিজ্ঞ সার্ভেয়ার দল নিয়োগ করার মাধ্যমে ডিজিটাল সার্ভে (টিবিএম) দিয়ে সংশোধিত ম্যাপ তৈরি করতে সওজের সিলেট অফিসকে নির্দেশ প্রদান করেন।

সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম প্রধান জাকির হোসেন বলেন, এ সড়কের বাস্তব অবস্থা সরেজমিন পর্যবেক্ষণের জন্য আমরা এখানে এসেছি। আমরা আমাদের পর্যবেক্ষণ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানাব। পূর্বের নকশা সংশোধনের মাধ্যমে এ সড়কের পূর্ণাঙ্গ প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করা হবে।

এতে আগামী দু-তিন মাস সময় লাগতে পারে। আমরা সড়কটির কাজ দ্রুত শেষ করতে চাই।

সরেজমিন দেখা গেছে, আগের নির্মিত সড়কটি প্রায় অব্যবহূত অবস্থায় পড়ে আছে। সড়কের বাদাঘাট অংশের সংযোগ না হওয়ায় সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল সরাসরি শুরু হয়নি। এরই মধ্যে সড়কের পিচ ওঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী রিতেশ বড়ুয়া বলেন, আগে সড়কটির নির্মাণকাজ কেন মাঝপথে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তা আমার জানা নেই। এখন আমরা পুনরায় সড়কটি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি।

নকশায় ত্রুটি সম্পর্কে তিনি বলেন, পরিদর্শনে আসা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ রকম কিছু আমাদের বলেননি। তারা ঢাকায় গিয়ে আলোচনা করে এ ব্যাপারে মতামত জানাবেন বলে জানিয়েছেন।

 

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া