বেতন না পেয়ে সাভারের আশুলিায়ায় একটি তৈরি পোশাক কারখানায় ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভাঙচুরে বাধা দিলে কারখানার ১৫ কর্মকর্তাকে এলোপাতাড়িভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছেন শ্রমিকরা।
ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে কারখানার ১৫ জন শ্রমিকের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পাঁচশ জনকে আসামি করে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছে গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় পুলিশ ওই গার্মেন্টসের তিন কর্মকর্তাকে আটক করেছে।
আশুলিয়া ইউনিয়নের কাঠগড়া বাজার এলাকায় কনকর্ড গার্মেন্টস গ্রুপের লিলি অ্যাপারেলস গার্মেন্টস কারখানায় গতকাল বুধবার এ ভাঙচুর ও লুটপাট হয়।
পুলিশ জানায়, ওই গার্মেন্টসের এক হাজার শ্রমিকের জুন মাসের বেতন দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। পরে ব্যাংক থেকে বেতনের টাকা দেরিতে আসায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ওই পোশাক কারখানার ভেতরে ব্যাপক ভাঙচুর চালান।
সকাল সাড়ে দশটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত কারখানার মূল ফটক আটকে ব্যাপক ভাঙচুর ও তা-ব চালান শ্রমিকরা। এ সময় শ্রমিকরা কারখানার বিশটি ল্যাপটপ, ৩৫টি কম্পিউটার, ১০টি ফায়ার ডোর, ডাটা সার্ভার, ৮৫টি সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করেন। এ ছাড়া কারখানার ড্রয়ার ভেঙে এক লাখ টাকাসহ শিপমেন্টের জন্য তৈরি করা দুই লাখ পিস শার্ট লুটপাট করেন।
পরে কারখানার জেনারেল ম্যানেজার মেজর (অব) জাহিদুর রহমান খানসহ ১৫ কর্মকর্তাকে পিটিয়ে আহত করে পালিয়ে যান তারা। আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। পরে খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ কারখানাটি পরিদর্শন করেছে।
এ ঘটনায় কারখাটির প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া বর্তমানে গতকাল থেকে কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে মালিকপক্ষ।
ঈদের আগে প্রস্তুত করে রাখা পোশাক শিপমেন্টের জন্য বিদেশে না যেতে পারায় কারখানার মালিক বিপাকে পড়েছেন। শ্রমিকদের এ তা-বের কারণে এমন অবস্থায় কারখানাটি চালানোর মতো সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে মালিকপক্ষ।
পরে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে রাতে আশুলিয়া থানায় কারখানার ফ্লোর ইনচার্জ শাহ আলমকে প্রধান আসামি করে ৩৫ জন শ্রমিকের নাম উল্লেখ করে আরও পাঁচশ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন কারখানাটির ডেপুটি ম্যানেজার ওমর আলী। রাতেই পুলিশ আশুলিয়ায় অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি ফ্লোর ইনচার্জ শাহ আলম (৩৫), প্যাকার ম্যান রাকিব ফরাজী (২১) ও কোয়ালিটি ইনচার্জ রাসেল আকনকে (২৯) আটক করেছে।
এ বিষয়ে লিলি অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার জেনারেল ম্যানেজার মেজর (অব) জাহিদুর রহমান বলেন, কারও উসকানিতে শ্রমিকরা কারখানাটিতে ভাঙচুর করতে পারে বলে আমরা মনে করছি। তদন্ত করলে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
আশুলিয়া থানার ওসি (ইন্টেলিজেন্স) ফজলুর রহমান বলেন, মামলার অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। এ ছাড়া কী কারণে শ্রমিকরা কারখানাটি ভাঙচুর করেছে সে বিষয়েও তদন্ত চলছে।