আমেরিকান অন্যতম বৃহৎ বিমান সংস্থা সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইনসের কাছ থেকে শতকোটি ডলার মূল্যের অন্তত এক ডজন ৭৩৭ ম্যাক্স-৭ জেটের ক্রয়াদেশ পেতে যাচ্ছে বোয়িং কোম্পানি। সুরক্ষাবিষয়ক নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর সম্ভবত এটাই বোয়িংয়ের সবচেয়ে বড় ক্রয়াদেশ বলে কোম্পানিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক সূত্র নিশ্চিত করেছে। খবর রয়টার্স।

খবর সত্য হলে এটা বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম বিমান নির্মাণ কোম্পানি এয়ারবাস এসইর জন্য বিরাট মাথাব্যথার কারণ হবে এবং বোয়িংয়ের জন্য তাদের অন্যতম বৃহত্তম ক্রেতা সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইনস কোম্পানি কর্তৃক সময়োপযোগী ও অত্যাবশ্যক সহযোগিতা হবে।

বিশেষ করে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে দুটি ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর বোয়িং কোম্পানির ব্যবসাও যেন মাটিতে মিশে যায়। এরপর কিছুদিন তাদের ব্যবসা বন্ধ ছিল। অবশেষে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর আবার তারা ক্রয়াদেশ পাওয়া শুরু করেছে, যা কোম্পানিটির জন্য অনেক বড় স্বস্তির।

আমেরিকান ক্যারিয়ার সাউথওয়েস্ট বলছে, এ ব্যাপারে তারা কোনো মন্তব্য করছে না এবং ঘোষণা দেয়ারও কিছু নেই। আবার বোয়িংয়ের পক্ষ থেকেও কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

যদিও এটুকু নিশ্চিত, এ চুক্তির সম্ভাবনায় বোয়িং ম্যাক্স পরিবারের সবচেয়ে ছোট সদস্য ও এয়ারবাসের এ২২০ ক্যারিয়ারের মধ্যে সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হলো।

প্রতিটি ৭৩৭ ম্যাক্স-৭ জেট বিমানের মূল্য মোটামুটিভাবে ১০ কোটি ডলার। সে হিসাবে চুক্তিটি শতকোটি ডলারের বেশি। যদিও বিমান শিল্পের সূত্রমতে, ঐতিহ্যগত বাজার ডিসকাউন্টের কারণে এ ধরনের বিমান অফিশিয়াল মূল্যের অর্ধেকে বিক্রি করা হয়।

বোয়িং ও সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইনস কোম্পানির মধ্যকার সম্ভাব্য চুক্তির শর্তাবলি কিংবা দিনক্ষণ নিয়ে কোনো পরিষ্কার ঘোষণা আসেনি।

বুধবার বোয়িংয়ের শেয়ারের মূল্য ৬ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ২৪৫ দশমিক ৩৪ ডলারে পৌঁছে, অন্যদিকে সাউথওয়েস্টের শেয়ারের মূল্য শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ কমে ৫৮ দশমিক ৫১ ডলার ছিল।

সাউথওয়েস্টের সঙ্গে সম্ভাব্য চুক্তির আগে গত ডিসেম্বরে আলাস্কা এয়ারলাইনসের কাছ থেকে ২৩টি ৭৩৭ ম্যাক্স-৯ বিমানের ক্রয়াদেশ পায় বোয়িং এবং তার কিছুদিন আগে ইউরোপের এয়ারলাইনস রাইয়ানএয়ার বোয়িংয়ের ৭৫টি সরু বডির বিমানের ক্রয়াদেশ দেয়।

গত নভেম্বরে সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইনসের প্রধান নির্বাহী গ্যারি কেলি জানান, ১৪৩ সিটের বুড়িয়ে যাওয়া বিমানগুলো পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত দ্রুতই নিয়ে ফেলবেন তারা এবং বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স-৭ ও এ২২০-এর মধ্যে কোনটি গ্রহণ করবেন, তা নিয়েও আলোচনা চলছিল।

ম্যাক্স পরিবারের চার ধরনের বিমানের মধ্যে সবচেয়ে ছোট এই ম্যাক্স-৭, যাতে ১৫৩টি সিট রয়েছে এবং দুই ক্লাসের কনফিগারেশন ও সর্বোচ্চ একটানা চলতে পারে ৩ হাজার ৮৫০ নটিক্যাল মাইল।

ইথিওপিয়ান এয়ারলাইনসের ৭৩৭ ম্যাক্স বিধ্বস্ত হওয়ার দুই বছর পূর্তির সময়ই সাউথওয়েস্টের ক্রয়াদেশের খবরটি উঠে এল। লায়ন এয়ারের একটি বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় ইথিওপিয়ান এয়ারলাইনসের ৭৩৭ ম্যাক্স বিধ্বস্ত হয়। দুটি দুর্ঘটনায় সব মিলিয়ে প্রাণহানি ঘটে ৩৪৬ জনের।