নিজস্ব প্রতিবেদক :
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সব জিনিসের দাম একসঙ্গে কমে যাবে এমনটা ভাবা ঠিক নয়। আমরা চেষ্টা করছি। সব শেষ হয়ে গেছে এমন ভাবাও ঠিক নয়।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) কাস্টমস দিবস উপলক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, এ বছর আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জের। সব জিনিসের দাম কমে যাবে বা বেড়ে যাবে এমন নয়। তবে মানুষ কষ্টে আছে। তাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সংস্কার দরকার আছে তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এখন অর্থনৈতিক সংস্কার। প্রোডাক্টিভ কাজ করতে হবে। রাজস্ব আদায় এবং ব্যয় এর চ্যালেঞ্জ আছে। আয় এবং ব্যয় যেন যৌক্তিক হয়। রাজস্ব আহরণে জোর করে টাকা পয়সা আয় করা যাবে না। বেআইনি বা অযৌক্তিক দাবি করা যাবে না। টেবিলের নিচে দাবি করা যাবে না।
অর্থনৈতিক সংস্কার প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, সংস্কার নিয়ে অনেক কথাবার্তা বলছি। আমি মনে করি এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি অর্থনৈতিক সংস্কার। সেটা যদি আমরা না করতে পারি, অর্থনৈতিক সংস্কার করা কঠিন, আবার সহজ। কঠিন হল এখানে অনেকগুলো ফান্ডামেন্টাল আইন কানুন আছে। কিন্তু প্রক্রিয়াগত যে আইন কানুন আছে সেগুলোর সঠিক ব্যবহার, সুষ্ঠু ব্যবহার ও স্বচ্ছভাবে ব্যবহার করতে পারলে এই সংস্কার খুব বেশি কঠিন হবে না। এই জিনিসটা আমাদের উপলব্ধি করতে হবে। সিস্টেম আছে, কিন্তু সিস্টেমটা আমরা ঠিকমত ব্যবহার করছি না।
রাজস্ব আদায় ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় দেশ সঠিক পথে আছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা মোটামুটি এগিয়ে আছি। প্রযুক্তিগত দিক ও প্রক্রিয়াগত দিক থেকে পিছিয়ে আছি। আমাদের আধুনিক যুগে প্রবেশ করতে হবে।
এই সময়ে রাজস্ব আদায় ও তা ব্যয় করা চ্যালেঞ্জের জানিয়ে তিনি বলেন, ব্যয়টা নির্বিচারে করবো সেটা মোটেই ঠিক হবে না। আমাদের রাজস্ব আয় ও ব্যয় উভয়ই যৌক্তিক করতে হবে। এটা সবার আকাঙক্ষা।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে এই উপদেষ্টা বলেন, রাজস্ব আহরণে সহায়তা করুন। জোর করে টাকা পয়সা আদায় করা যাবে না।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, একটু ইতিবাচক দৃষ্টিতে আমাদের দেখবেন। সবই খারাপ বাংলাদেশে, সবই ভালো, এই হচ্ছে না, ওই হচ্ছে না, পেঁয়াজের দাম কমে গেছে, আলুর দাম কমে গেছে, চালের দাম অনেক বেড়ে গেছে। সব জিনিসের দাম একত্রে কমে গেছে এটা পৃথিবীর কোনো দেশে আমরা দেখিনি। সব জিনিসের দাম একত্রে বেড়ে যাবে, এটাও আমরা আশা করি না। তবে এটা ঠিক জনগণের কিছুটা কষ্ট হচ্ছে। পণ্যের দাম ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকছে না অনেকেরই।
অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, বাজারে সব জিনিসের দাম একসঙ্গে বাড়বে বা একসঙ্গে কমে যাবে- এটা পৃথিবীর কোনো দেশে হয় না। তবে চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে, জনগণের কষ্ট হচ্ছে। অনেককিছু তাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। আমরা তা উপলব্দি করতে পারছি।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মনে হচ্ছে চালের দাম এক হাজার টাকা হয়ে গেছে। এটা ঠিক যে, জনগণের কষ্ট হচ্ছে। অনেক কিছুই তাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নেই। আমরা সেটা উপলব্ধি করছি।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- অর্থ সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান প্রমুখ।