মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :

সড়কে চাপ থাকলেও যানজট নেই : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : শুক্রবার, ১৪ জুন, ২০২৪
সড়কে চাপ থাকলেও যানজট নেই : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

এবার ঈদযাত্রা স্বস্তির হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সড়কে চাপ থাকলেও যানজট নেই। পশুবাহী গাড়িগুলো যেখানে সেখানে রেখে যানজট সৃষ্টি না করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার (১৪ জুন) দুপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বিফ্রিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, গত ঈদের ফিরতি যাত্রায় কিছু দুর্ঘটনা ঘটে, সেজন্য এবার আমরা আরও বেশি সতর্ক রয়েছি। কোরবানির ঈদে পশুবাহি গাড়ির কারণে সড়কে কিছুটা সমস্যা সৃষ্টি হয়। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন ও ভোগান্তিমুক্ত রাখতে পশুহাটের কারণে রাস্তায় যেনো যানজট তৈরি না হয় সেজন্য সবার সহযোগিতা দরকার।

সেতুমন্ত্রী বলেন, রাস্তার কারণে যানজট হবে এমন পরিস্থিতি নেই। বাংলাদেশে সর্বকালের সবচেয়ে ভালো সড়ক এখন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সরকারের আমলে হয়েছে। পশুর গাড়ি এবং পশুর হাটের কারণে কিছু যানজট হয়। পশুবাহি গাড়ি এবং পশুর হাট যত্রতত্র বসিয়ে যেন জনদুর্ভোগ না বাড়ানো হয় সে ব্যাপারে যাদের কাছে দায়িত্ব রয়েছে তারা যথাযথভাবে সে দায়িত্ব পালন করবেন। বৃষ্টি হলে দুর্ভোগ এড়ানো কঠিন। দায়িত্ব পালনে মনোযোগ দিতে হবে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানি না ঘটে সেজন্য মনিটরিং বাড়াতে হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিশ্বের দেশে দেশে মূল্যস্ফীতি। বাংলাদেশেও উদ্বেগের কারণ এই মূল্যস্ফীতি। সরকার এখানে কোনো কিছুই চাপা দিয়ে সত্যকে আড়াল করে কিছুই করেনি। বাজেট বাস্তবতার আলোকে ভারসাম্যমূলক। অনেকদিন ধরে দীর্ঘ চিন্তাভাবনার পর প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এই বাজেট সংসদে উত্থাপিত হয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে একসময় ইউরোপেও উদ্বেগ ছিল। প্রায় ১০ শতাংশ ছিল মুদ্রাস্ফীতি। আর্জেন্টিনার মত দেশে মুদ্রাস্ফীতি ৩০০ শতাংশ। বিশ্ব রাজনীতিতে প্রভাবশালী দেশ তুরস্কে ৭৩ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি। শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তানসহ আশপাশের দেশেও মুদ্রাস্ফীতির অবস্থা ভালো নয়।

বিএনপির টপ টু বটম দুর্নীতিবাজ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন দুর্নীতিবাজরা দুর্নীতি নিয়ে কথা বলে। তারেক রহমানকে এখন সাদা মানুষ সাজানোর চেষ্টা করছে বিএনপি। তারেককে সাদা মানুষ বানানোর জন্য গঠনতন্ত্র থেকে দুর্নীতিবাজ সংক্রান্ত ৭ ধারা বাতিল করেছে বিএনপি। বিএনপি দেশের গণতন্ত্রকে গিলে খেয়েছিলো। এখন অবস্থা দাঁড়িয়েছে- নির্বাচনে ক্ষমতায় যাওয়ার নিশ্চয়তা যারা দিতে পারবে, সেই সরকারই বিএনপির কাছে বন্ধু।

‘তারেক রহমানকে ভালো মানুষ সাজানোর জন্য বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিবৃতি’ দেওয়ার অভিযোগ তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি তাদের নির্বাচিত ছয় জনকে সংসদে পাঠালেন (একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর)। এখন যদি ফখরুল সংসদে যায় তাহলে তারেকের ক্ষমতা সংকুচিত হয়ে যাবে। এ রকম একটা সাইকোলজি থেকে ফখরুলকে পার্লামেন্টে যাওয়া থেকে বিরত রেখেছে তারেক রহমান এক ধমকে।

তিনি বলেন, বিএনপি তাদের গঠনতন্ত্র থেকে ৭ ধারা হঠাৎ করে এক কলমের খোঁচায় বাদ দিয়েছে। কারণ কী? কারণ হলো যে ওই ৭ দফায় আছে দণ্ডপ্রাপ্ত কোনও ব্যক্তি, দুর্নীতিবাজ কোনও ব্যক্তি বিএনপির নেতা হতে পারবে না। ফখরুল তাকে ভালো মানুষ সাজাচ্ছেন, তাহলে ধারা বাদ দিলেন কেন? দুর্নীতিবাজের যে ধারা আর দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির যে ধারা সেটায় তারেক রহমান দোষী হয়ে যাচ্ছে। সেজন্য হঠাৎ করে তারেকের নির্দেশে এক কলমের খোঁচায় বাদ দিয়ে নির্বাচন কমিশনে এনে জমা দিয়েছেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল নিজেই তো স্বাধীন নন। তার দলে কোনও পর্যায়ে কোনও সম্মেলন হয় না, অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের চর্চা হয় না। তারেকে রহমান বিদেশে থাকলে বিএনপি স্বাধীন স্বত্তা নিয়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে অস্তিত্বের প্রকাশ ঘটাতে পারবে সেটা আমরা বিশ্বাস করি না।

অস্ত্র মামলা, দুর্নীতির মামলায় তারেকের সাজা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারেকের আর কত সাজা হবে? তার তো সাজা হয়েছে। শাস্তি হয়ে গেছে। এখন তার শাস্তি ভোগ করার ব্যবস্থা করতে হবে। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সে কথাই বলেছেন। তো তাকে ভালো মানুষ সাজানোর চেষ্টা করার কোনও কারণ নেই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে বিএনপি আসবে না, নির্বাচনে বিএনপি যদি আসতো গতবারের মতো খারাপ ফলাফল হতো না। এটা আমি মনে করি। সার্বিক পরিস্থিতির কারণে অপজিশনের একটা ভোট ছিল। কিন্তু তারেক রহমান রহমান মনে করে, যদি এই অবস্থায় বিএনপি ভালো করে এটার সুফল তো আমি পাচ্ছি না, তারেক রহমান তো পাচ্ছে না। এখন তার অনুপস্থিতিতে অন্য কেউ নেতা হবে! ফখরুল সাহেব নিজেও অনুধাবন করতে পারছেন যে তাকে কীভাবে তারেকের ধমকের ওপর চলতে হয়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা আজ এসব কথা বলে অন্ধকারে ঢিল ছোড়েন, ১৫ আগে বাংলাদেশ কেমন ছিল? বাংলাদেশের অর্থনীতি কেমন ছিল? আর ১৫ বছর পরে কেমন হয়েছে? আমাদের ভুলত্রুটি আছে এটা আমরা স্বীকার করে নেই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন অতীতের ভুলত্রুটি থেকে আমরা শিক্ষা নেবো।

বিএনপি আমলে কত সন্ত্রাসী ছিল প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দুর্নীতিবাজ বেনজীরের জায়গায় কোহিনূর, আশরাফুল হুদা এইসব লোককে আইজিপি বানানো হয়েছিল। এদের দুর্নীতির গল্প শুনলে শিউরে উঠতে হয়। বিচার কি হয়েছে? বিএনপির নেতারা জনে জনে দুর্নীতি করেছিল, লুটপাট করেছিল। তার বিচার কি হয়েছিল? বিএনপি কি তাদের কোনও নেতার বিচার করার সৎ সাহস দেখাতে পেরেছে যেটা শেখ হাসিনা করে দেখিয়েছেন!

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দি, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, শিক্ষা ও মানব সম্পদ সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপদপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সায়েম খানসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া