নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য সবার আগে নির্বাচন প্রয়োজন। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমেই সংস্কার করতে হবে। এই আলোচনা যত বেশি দীর্ঘ হবে, স্বৈরাচার তত বেশি ষড়যন্ত্র করার সুযোগ পেয়ে যাবে।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর কদমদলীতে রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা নিয়ে আয়োজিত কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, বহু মানুষ ভোটের অধিকারের আদায়ের জন্য হতাহত হয়েছে। জবাবদিহিতা নিশ্চিতে নির্বাচনের বিকল্প নেই। এর মাধ্যমে সমস্যার জট খুলতে শুরু করবে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার কাজ যত দ্রুত শুরু হবে, ততো দ্রুত দেশকে রক্ষা করা যাবে।
তিনি বলেন, স্বৈরাচারের সামনে একমাত্র বিএনপিই সংস্কারের কথা বলেছিল। আড়াই বছর আগেই এই ৩১ দফা দেয়া হয়েছিল। ৩১ দফার সাথে সরকারের সংস্কার প্রস্তাবনায় খুব বেশি ফারাক নেই। ১০ টাকা কেজি চাল দেয়ার মতো মিথ্যা আশ্বাস না দিয়ে বাস্তবতার আলোকে মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন করতে চান বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, যদি নির্বাচন প্রক্রিয়া দেরি হয়, সংস্কারের আলোচনা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর করতে থাকি তাহলে যেই স্বৈরাচারকে বাংলাদেশের সব মানুষ, দল-মত নির্বিশেষে, শ্রেণি-পেশার মানুষ একত্রিত হয়ে দেশ থেকে বিতাড়িত করে দিয়েছে, সেই স্বৈরাচার সুযোগ পাবে দেশের মানুষের কাঁধে চেপে বসার।
তারেক রহমান বলেন, কাজেই যে সব বিজ্ঞ সমন্বিত ব্যক্তি যারা সংস্কারের কথা বলছেন আপনাদের সবার কাছে রাজনৈতিক দলের অবস্থান থেকে আহ্বান জানিয়ে বলতে চাই, সংস্কার সংস্কার বক্তব্য রেখে এ আলাপ দয়া করে দীর্ঘায়িত করবেন না। কারণ, আপনারা সংস্কারের আলাপ যত দীর্ঘায়িত করবেন দেশ ততবেশি সংকটের মুখে পড়বে, ষড়যন্ত্রকারীরা ষড়যন্ত্র করার সুযোগ পাবে। নির্বাচন ছাড়া কোনো ভিন্ন পথ নেই।
তারেক রহমান বলেন, সংস্কারের প্রস্তাবগুলো যদি বাস্তবায়ন করতে হয় তাহলে সবার আগে নির্বাচনই প্রয়োজন। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ দায়িত্ব দেবে সংস্কারের কাজের। সংস্কার যত দ্রুত বাস্তবায়ন করা যাবে দেশের মানুষ তত দ্রুত রক্ষা পাবে। এই সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হলে উপায় একটাই যে সংস্কার প্রস্তাব বিএনপি দিয়েছে, যে সংস্কার প্রস্তাব অন্তবর্তীকালীন সরকারের কমিশনগুলো তৈরি করে দিয়েছে যেটাই হোক না কেন এই সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে হয় নির্বাচন ছাড়া আর কোনো রাস্তা নাই। একটিই পথ জনগণের নির্বাচন।
তারেক বলেন, আমি মনে করি, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায় এটা সবাইকে অনুধাবন করতে হবে। কোনো কোনো ব্যক্তি বলেন যে, নির্বাচন হলেই কি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? আমি বলি, সঙ্গে সঙ্গে সব সমস্যার সমাধান হবে না। কিন্তু নির্বাচন হলে নির্বাচনের মাধ্যমে, জনগণের রায়ের মাধ্যমে যেই দল যেই ব্যক্তি বা যারা দেশ পরিচালনার সুযোগ পাবে তখন সমস্যার যে জট, সমস্যার যে গিট্টু সেগুলো আস্তে আস্তে খোলা যাবে।
তারেক রহমান বলেন, আমি মনে করি, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগনের কাছে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায়। এটা সবাইকে অনুধাবন করতে হবে। কোনো কোনো ব্যক্তি বলেন, নির্বাচন হলেই কি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? আমি বলি, সাথে সাথে সব সমস্যার সমাধান হবে না। কিন্তু নির্বাচন হলে জনগণের ভোটের মাধ্যমে যেই দল, ব্যক্তি বা যারা দেশ পরিচালনার সুযোগ পাবে, তখন সমস্যার যে জট, সেগুলো আস্তে আস্তে খুলে যাবে।
নেতা-কর্মীদের প্রতি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আসুন আজকের এ কর্মশালার মাধ্যমে আমার দলের নেতা-কর্মী এখানে যারা উপস্থিত আছেন সবাই মিলে প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করি যে, বাংলাদেশের মানুষ আমাদের সেই সুযোগ দিলে রাষ্ট্র পরিচালনা আমরা প্রত্যেকে যে যার অবস্থান থেকে যেই সংস্কারের ওয়াদা জনগণের সামনে দিয়েছি। আমাদের প্রত্যেকের অবস্থান থেকে সেই ওয়াদা সর্বোচ্চ পূরণে চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে শ্যামপুরের কদমতলীর বালুর মাঠে ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা হয়। এতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধান অতিথি তারেক রহমান।
এতে মহানগর দক্ষিণের ২৪টি থানার বিএনপিসহ ১১টি অঙ্গসংগঠনের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী অংশ নেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় বিএনপির বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ সালাহউদ্দিন আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন বক্তব্য রাখেন।