Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিক্ষার্থীরা কোনো অবস্থাতেই সরকারের প্রতিপক্ষ নয় : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

শিক্ষার্থীরা কোনো অবস্থাতেই সরকারের প্রতিপক্ষ নয়। একটি মহল সরকার বনাম শিক্ষার্থী গেম খেলে ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার (২ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি মানা হয়েছে। কোন অবস্থাতেই শিক্ষার্থীরা সরকারের প্রতিপক্ষ নয়। একটি মহল সরকার বনাম শিক্ষার্থী গেম খেলে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। পরিকল্পিতভাবে হত্যা ও নৈরাজ্য করেছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় হওয়া হত্যার তদন্তে কমিশন কাজ করছে জানিয়ে কাদের বলেন, এই তদন্তে জাতিসংঘের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হচ্ছে। কমিশনে তিনজন বিচারপতি কাজ করছেন। আর্থিক সহায়তা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, অযথা শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও আটক না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা নিতে সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে। তাদের প্রধান দাবি যেহেতু পূরণ হয়েছে, শিক্ষার্থীরা অশুভ রাজনীতির ঢাল হিসেবে ব্যবহার হোক চাই না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, শিক্ষার্থীদের অযথা হয়রানি ও আটক না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনো শিক্ষার্থীকে যেন হয়রানি না হয় সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। আটককৃতদের মধ্যে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কাজ করছে। শিক্ষার্থীদের মূল দাবি আদায় হওয়ায় আশা করি তারা এখন শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার স্বার্থে ঘরে ফিরে যাবে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, প্রতিটি হত্যার বিচারবিভাগীয় তদন্তে তাদের আওতা বাড়ানো হয়েছে। এখন কমিশনে তিন জন বিচারপতিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন। অনেক পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রেরণ করেছেন। আহতদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিয়ে চিকিৎসার নিশ্চয়তা প্রদান করেছেন।

রোববার থেকে প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। কাদের বলেন, ‘নাগরিক সমাজ প্রতিবাদ করতেই পারেন। তবে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কেউ যাতে উসকানি দিতে না পারে, এজন্য সকলের দায়িত্বশীল হওয়া উচিত।’

জামায়াত-শিবিরকে চিহ্নিত সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে নিষিদ্ধ করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানান কাদের। তিনি বলেন, ঢালাও ভাবে কারো বিরুদ্ধে মন্তব্য করতে চাই না। জামাতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার কারন তারা সন্ত্রাসী সংগঠন। আমরা ঢালাওভাবে কাউকে দালাল বলি না, বলা উচিতও না।

জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করায় সরকারকে এ সময় ধন্যবাদ জানায় আওয়ামী লীগ। জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধে বিএনপির প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, মির্জা ফখরুলের বিবৃতি দেখলে বোঝা যায়, তাদের সাথে জামায়াতের সম্পর্ক কতটা নিবিড়।

নাগরিক সমাজের অনেকেই চলমান সংকটে তাদের নিজস্ব মতামত দিচ্ছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ব্যক্তিগত মতের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। কিন্তু উদ্ভুত পরিস্থিতিতে জনগণের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত। তাদের মতামতের কারণে তৃতীয় শক্তি উসকানি হিসেবে সুযোগ নিতে পারে। সচেতন নাগরিক হিসেবে বিষয়টি নজর দেয়ার আহ্বান জানাই।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির একটি হলো, ‘ছাত্র হত্যার দায় নিয়ে সেতুমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিজ নিজ মন্ত্রণালয় ও দল থেকে পদত্যাগ করতে হবে।’

এ প্রসঙ্গ টেনে সংবাদ সম্মেলনে একজন গণমাধ্যমকর্মী প্রশ্ন করেন, ‘শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবি কোটা সংস্কারের। সেটা সরকার মেনে নিয়েছে। এখন তারা ৯ দফা দাবি দিয়েছে। এই ৯ দফার মধ্যে আপনার এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগসহ বেশ কয়েকটা দাবি আছে। এ দাবির ব্যাপারে আপনারা কী ভাবছেন?’

উত্তরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেখুন, আমি একটা কথা পরিষ্কার করে বলতে চাই, আমি আজকেও বলেছি, সরকার অলরেডি বিচারবিভাগীর তদন্ত কমিশন গঠন করেছে। এতে তিন জন বিচারপতি, জাতিসংঘসহ যেসব দেশ এই তদন্তের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করবে, আমরা তাদেরও স্বাগত জানিয়েছি। তদন্তকাজে তারাও অংশ নিতে পারে।

তিনি বলেন, এখন কে অপরাধী, কে অপরাধী নয়, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে আমরা বদ্ধপরিকর। সেটাও ওই যে তদন্ত কমিশন, তার কার্যপরিধির আওতার মধ্যে পড়ে। কাজেই এ বিষয়টি সেখানেই থাকবে, সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে।

ডিবি কার্যালয়ে থেকে ফিরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় জন সমন্বয়ক ফের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে সরকার তাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করবে কিনা— সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সরকার কোনও সিদ্ধান্ত নিলে আপনাদের জানিয়ে দেওয়া হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

শিক্ষার্থীরা কোনো অবস্থাতেই সরকারের প্রতিপক্ষ নয় : কাদের

প্রকাশের সময় : ০২:৪১:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ অগাস্ট ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

শিক্ষার্থীরা কোনো অবস্থাতেই সরকারের প্রতিপক্ষ নয়। একটি মহল সরকার বনাম শিক্ষার্থী গেম খেলে ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার (২ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি মানা হয়েছে। কোন অবস্থাতেই শিক্ষার্থীরা সরকারের প্রতিপক্ষ নয়। একটি মহল সরকার বনাম শিক্ষার্থী গেম খেলে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। পরিকল্পিতভাবে হত্যা ও নৈরাজ্য করেছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় হওয়া হত্যার তদন্তে কমিশন কাজ করছে জানিয়ে কাদের বলেন, এই তদন্তে জাতিসংঘের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হচ্ছে। কমিশনে তিনজন বিচারপতি কাজ করছেন। আর্থিক সহায়তা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, অযথা শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও আটক না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা নিতে সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে। তাদের প্রধান দাবি যেহেতু পূরণ হয়েছে, শিক্ষার্থীরা অশুভ রাজনীতির ঢাল হিসেবে ব্যবহার হোক চাই না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, শিক্ষার্থীদের অযথা হয়রানি ও আটক না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনো শিক্ষার্থীকে যেন হয়রানি না হয় সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। আটককৃতদের মধ্যে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কাজ করছে। শিক্ষার্থীদের মূল দাবি আদায় হওয়ায় আশা করি তারা এখন শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার স্বার্থে ঘরে ফিরে যাবে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, প্রতিটি হত্যার বিচারবিভাগীয় তদন্তে তাদের আওতা বাড়ানো হয়েছে। এখন কমিশনে তিন জন বিচারপতিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন। অনেক পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রেরণ করেছেন। আহতদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিয়ে চিকিৎসার নিশ্চয়তা প্রদান করেছেন।

রোববার থেকে প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। কাদের বলেন, ‘নাগরিক সমাজ প্রতিবাদ করতেই পারেন। তবে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কেউ যাতে উসকানি দিতে না পারে, এজন্য সকলের দায়িত্বশীল হওয়া উচিত।’

জামায়াত-শিবিরকে চিহ্নিত সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে নিষিদ্ধ করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানান কাদের। তিনি বলেন, ঢালাও ভাবে কারো বিরুদ্ধে মন্তব্য করতে চাই না। জামাতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার কারন তারা সন্ত্রাসী সংগঠন। আমরা ঢালাওভাবে কাউকে দালাল বলি না, বলা উচিতও না।

জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করায় সরকারকে এ সময় ধন্যবাদ জানায় আওয়ামী লীগ। জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধে বিএনপির প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, মির্জা ফখরুলের বিবৃতি দেখলে বোঝা যায়, তাদের সাথে জামায়াতের সম্পর্ক কতটা নিবিড়।

নাগরিক সমাজের অনেকেই চলমান সংকটে তাদের নিজস্ব মতামত দিচ্ছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ব্যক্তিগত মতের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। কিন্তু উদ্ভুত পরিস্থিতিতে জনগণের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত। তাদের মতামতের কারণে তৃতীয় শক্তি উসকানি হিসেবে সুযোগ নিতে পারে। সচেতন নাগরিক হিসেবে বিষয়টি নজর দেয়ার আহ্বান জানাই।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির একটি হলো, ‘ছাত্র হত্যার দায় নিয়ে সেতুমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিজ নিজ মন্ত্রণালয় ও দল থেকে পদত্যাগ করতে হবে।’

এ প্রসঙ্গ টেনে সংবাদ সম্মেলনে একজন গণমাধ্যমকর্মী প্রশ্ন করেন, ‘শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবি কোটা সংস্কারের। সেটা সরকার মেনে নিয়েছে। এখন তারা ৯ দফা দাবি দিয়েছে। এই ৯ দফার মধ্যে আপনার এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগসহ বেশ কয়েকটা দাবি আছে। এ দাবির ব্যাপারে আপনারা কী ভাবছেন?’

উত্তরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেখুন, আমি একটা কথা পরিষ্কার করে বলতে চাই, আমি আজকেও বলেছি, সরকার অলরেডি বিচারবিভাগীর তদন্ত কমিশন গঠন করেছে। এতে তিন জন বিচারপতি, জাতিসংঘসহ যেসব দেশ এই তদন্তের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করবে, আমরা তাদেরও স্বাগত জানিয়েছি। তদন্তকাজে তারাও অংশ নিতে পারে।

তিনি বলেন, এখন কে অপরাধী, কে অপরাধী নয়, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে আমরা বদ্ধপরিকর। সেটাও ওই যে তদন্ত কমিশন, তার কার্যপরিধির আওতার মধ্যে পড়ে। কাজেই এ বিষয়টি সেখানেই থাকবে, সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে।

ডিবি কার্যালয়ে থেকে ফিরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় জন সমন্বয়ক ফের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে সরকার তাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করবে কিনা— সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সরকার কোনও সিদ্ধান্ত নিলে আপনাদের জানিয়ে দেওয়া হবে।