বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৪৫ অপরাহ্ন

শাহজাদপুরে যমুনার ভাঙনে ৮ গ্রাম বিলিনের পথে!

শামছুর রহমান শিশির, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
আপডেট : রবিবার, ১ নভেম্বর, ২০২০
শাহজাদপুরে যমুনার ভাঙনে ৮ গ্রাম বিলিনের পথে!
শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের হাটপ্রাচীল গ্রামে যমুনার তীব্র ভাঙন। শনিবার তোলা ছবি। যোগাযোগ

অসময়ে যমুনা নদীর ভাঙনে শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর, খুকনি ও কৈজুরী ইউনিয়নের ৮ গ্রাম মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। বন্যার পানি কমতে থাকায় এসব গ্রামে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। ইতিমধ্যেই উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের জালালপুর, ঘাটাবাড়ি, পাকুরতলা, বাঐখোলা, কুঠিরপাড়া, খুকনি ইউনিয়নের ব্রাক্ষ্মণগ্রাম ও আরকান্দি এবং কৈজুরী ইউনিয়নের হাটপ্রাচীল গ্রামের সিংহভাগ এলাকা যমুনার ভাঙনে বিলীন হয়েছে।

এতে এসব গ্রামের শতশত মানুষজন ঘরবাড়ি, জমিজমা, সহায়-সম্বল হারিয়ে পথে বসে গেছে।

যমুনার কড়াল গ্রাস হতে এসব গ্রামের অবশিষ্ঠাংশ রক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী আমরণ অনশন, মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচী পালন করে আসলেও সংশ্লিষ্টদের তরফ থেকে কেবল আশ্বাসই মিলেছে। ভাঙন রোধে কোন কাজের কাজ না হওয়ায় ভাঙনকবলিত এলাকাবাসীর মধ্যে হা-হুতাশ, সহায়-সম্বল হারানোর আর্তনাদ ও চাপা ক্ষোভ দিনে দিনে বেড়েই চলেছে।

সরেজমিন যমুনা ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শনকালে এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের জালালপুর, ঘাটাবাড়ি, পাকুরতলা, বাঐখোলা, কুঠিরপাড়া, খুকনি ইউনিয়নের ব্রাক্ষ্মনগ্রাম ও আরকান্দি এবং কৈজুরী ইউনিয়নের হাটপ্রাচীল গ্রামে যমুনার ভাঙনে প্রায় ২’শতাধিক ঘরবাড়ি, ২টি মসজিদ, ২টি ঈদগাহ মাঠ, শতাধিক তাঁত কারখানা, ৪’শ বিঘা আবাদি জমি, ২ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক, কবরস্থান, শ্মশান ঘাট, মন্দির, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অসংখ্য গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

গ্রামগুলোর যে অংশ অবশিষ্ট রয়েছে, জরুরী ভিত্তিতে ভাঙন রোধ করা না গেলে সে অংশও দেখতে দেখতে যমুনার কড়াল গ্রাসে চলে যাবে।

আরও পড়ুন : বেড়িবাঁধে আশার আলো দেখছে পদ্মা তীরের মানুষ

এ বিষয়ে জালালপুর ইউপি চেয়ারম্যান হাজী সুলতান মাহমুদ, খুকনী ইউপি চেয়ারম্যান মুল্লুক চান ও কৈজুরী ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কে বার বার বলা সত্বেও তারা সময়মতো ব্যবস্থা না নেয়ায় এ ৮ গ্রামের সিংহভাগই যমুনা গর্ভে বিলীন হয়েছে।

তিনি বলেন, ভয়াবহ ভাঙনের কারণে নদীর অদূরে এনায়েতপুর-সিরাজগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক, খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল ও বিশ্ববিদ্যালয়, নার্সিং ইন্সটিটিউট ও দেশের সর্ববৃহৎ এনায়েতপুর কাপড়ের হাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা হুমকির সন্মুখীন হয়ে পড়েছে।

শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মো. শামসুজ্জোহা বলেন, বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, এনায়েতপুর থেকে হাটপ্রাচীল পর্যন্ত সাড়ে ৬ কিলোমিটার এলাকা যমুনার ভাঙন থেকে স্থায়ীভাবে রক্ষায় সাড়ে ৬’শ কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদন হলে স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধের কাজ শুরু হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া