আদালতে চলমান মামলায় নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও আইন-কানুনকে উপেক্ষা করে প্রতাপের সাথে বাদীপক্ষের সীমানা খুঁটি তুলে জায়গা দখল করে পাকা মার্কেট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের পোতাজিয়া যুব সংঘের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেছেন বাদী হাজী মো. সিরাজুল ইসলাম।

জানা গেছে, শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া মৌজার এসএ ১৭২৭ খতিয়ানের ৪৯৩৭ দাগ ও আরএস ২৪৪৩ খতিয়ানের ৫৮৫৩ দাগের ৩৯ শতক ভূমিসহ ২.৮৪ একর ভূমি শ্রীষ চন্দ্র রায় গংদের স্বত্ব দখলীয় সম্পত্তি হিসেবে এসএ রেকর্ডভুক্ত হয়ে পরে এসএ প্রজাদের মধ্যে আপোষ ছাহাম বন্টন হয়।

১৯৭২ সালের ২৬ জুন উক্ত সম্পত্তির মালিক শ্রী নিরেন্দ্র চন্দ্র রায় ৫০১২ নং দলিলমূলে মোজাম্মেল হক ও জুলমত শেখের কাছে বিক্রি করেন।

গত ২০১৭ সালের ২০ অক্টোবরে মোজাম্মেল হক ও জেনাত আলীর কাছ থেকে ১০১২৭ নং রেজিষ্ট্রি দলিল মূলে উক্ত সম্পত্তির শোয়া ২০ শতকসহ অন্যান্য দাগের ২.০৬ একর ও ২০১৯ সালের ২৬ আগষ্ট ৪২৪৮ নং দলিলমূলে আব্দুর রহমানের কাছ থেকে উক্ত সম্পত্তির ১০.৬২৫ শতকসহ ৭১.৩৭৫ শতক ভূমি বাদী মোঃ সিরাজুল ইসলাম ক্রয় করে ২৪৫৫/IX-I১৭-১৮ নং নামজারি কেসের মাধ্যমে খাজনা পরিশোধ করে ভোগ দখল করে আসছেন।

আরও পড়ুন : রূপগঞ্জে জমি দখলে নিতে জোরপূর্বক সীমানা প্রাচীর নির্মাণ

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী, বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রবিন আকন্দসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে উক্ত সম্পত্তি মাপজরিপ করে সীমানা নির্ধারণ করে খুঁটি পোঁতা হয়।

পোতাজিয়া যুব সংঘের মার্কেটের ভিত্তি স্থাপনের সময় বাদীর উক্ত সম্পত্তির সীমানা খুঁটি তুলে ফেলে ৩/৪ ফুট জায়গা দখলের চেষ্টা করা হলে শাহজাদপুর সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, সিরাজগঞ্জ এ দখল ঠেকাতে নিষেধাজ্ঞার আবেদন চেয়ে পোতাজিয়া যুব সংঘের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বিবাদী করে মামলা (অপর প্রকার মোকদ্দমা নং-৯৩/২০২০) করেন জমির মালিক হাজী মো. সিরাজুল ইসলাম।

এ বিষয়ে হাজী মো. সিরাজুল ইসলাম অভিযোগে বলেন, বিবাদীগংয়ের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালত স্থিতাবস্থা জারি করলেও তা অমান্য করে আমার সম্পত্তির ৩/৪ ফুট পেচিয়ে পাকা মার্কেট নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

শাহজাদপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. লিয়াকত আলী বলেন, মাপ জরিপ করে আমাদের উপস্থিতিতে উক্ত সম্পত্তির সীমানা খুঁটি পোঁতা হয়েছিলো। শুনেছি, বেইজ ঢালাইয়ের সময় উক্ত খুঁটি উঠে গেছে।

শাহজাদপুর উপজেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বাদীপক্ষের আইনজীবী এ্যাড. আনোয়ার হোসেন জানান, বিবাদী পোতাজিয়া যুব সংঘের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে স্থিতাবস্থা (স্ট্যাটাসকো) জারি করেছেন যা বলবৎ রয়েছে।

এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আতাউর রহমান বলেন, এ সংক্রান্ত বিজ্ঞ আদালতের একটি নির্দেশনা পেয়ে দন্ডবিধি ১৫৪ ধারায় উভয় পক্ষকে নোটিশ প্রদানের মাধ্যমে শান্তি শৃংখ্যলা বজায় রাখতে ও এই মুহুর্তে সেখানে নির্মাণ কাজ বিরত রাখতে বলেছি।

অপরদিকে, পোতাজিয়া যুব সংঘের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পক্ষে জনৈক ওয়াজ সাংবাদিকদের জানান, হাজী সিরাজুল ইসলাম ও পোতাজিয়া যুব সংঘের সম্পত্তির দাগই আলাদা। তাদের জায়গা আমরা দখল করিনি, বরং যুব সংঘের জায়গাই তাদের ভিতরে রয়েছে। বাদীর অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।